Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

বাসন্তী পুজোর সন্ধ্যায় উজ্জ্বল বেড়াচাঁপা

কোথাও ঝিনুকের উপরে মুক্ত দিয়ে তৈরি প্রতিমা। কোথাও অ্যালমুনিয়াম পাতের উপরে সুন্দর কারুকাজের পুরনো জমিদার বাড়ির আদলে মণ্ডপ। আবার কোথাও তুলো দিয়ে তৈরি বরফের দেশ। বাসন্তী পুজোকে কেন্দ্র করে নানা থিমে সেজে উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা। সপ্তমীর সন্ধ্যা থেকেই হাজার হাজার মানুষের ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হল পুজো উদ্যোক্তা এবং পুলিশকে।

আড়ম্বরের ছোঁয়া মণ্ডপেও। —নিজস্ব চিত্র।

আড়ম্বরের ছোঁয়া মণ্ডপেও। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০২:৪০
Share: Save:

কোথাও ঝিনুকের উপরে মুক্ত দিয়ে তৈরি প্রতিমা। কোথাও অ্যালমুনিয়াম পাতের উপরে সুন্দর কারুকাজের পুরনো জমিদার বাড়ির আদলে মণ্ডপ। আবার কোথাও তুলো দিয়ে তৈরি বরফের দেশ। বাসন্তী পুজোকে কেন্দ্র করে নানা থিমে সেজে উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা। সপ্তমীর সন্ধ্যা থেকেই হাজার হাজার মানুষের ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হল পুজো উদ্যোক্তা এবং পুলিশকে।

প্রত্যেক বছরই এখানে ঘটা করে বাসন্তী পুজোর আয়োজন করা হয়। এখানকার মানুষের কাছে যা ‘বসন্ত উৎসব’ নামে পরিচিত। এলাকার প্রবীণদের কথায়, “শতাধিক বছর আগে ওই সময়ে মণ্ডল এবং বিশ্বাস বাড়ির জমিদারেরা গ্রামের মানুষকে নিয়ে বেড়াচাঁপায় বাসন্তী পুজোর আয়োজন করেন। ওই সময়ে বাঁশের মাথায় সামিয়ানা টানিয়ে তার নীচে প্রতিমা বসানো হত। পুজোর দিনগুলিতে গ্রামবাসীদের আনন্দ দিতে যাত্রা-নাটকের ব্যবস্থাও করা হত। এলাকার মানুষ যাত্রা-নাটকে অংশ নিতেন। পুজোর কয়েকটা দিন বেশ আনন্দেই কাটাতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বর্তমানে বেড়াচাঁপার সেই পুজোর চল রয়েছে ঠিকই। কিন্তু এখন কমিটিগুলির মধ্যে চলে একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার পালা।

এলাকার সাতটি ক্লাব মূলত বড় বাজেটের পুজোর আয়োজন করে। পুজো উপলক্ষে বিশাল এলাকা জুড়ে মেলা বসে। সেই সঙ্গে চন্দননগরের চোখ ধাঁধানো আলোক সজ্জা এবং কৃষ্ণনগর ও কুমারটুলির প্রতিমার পাশাপাশি মণ্ডপের সুন্দর কারুকার্য দেখতে মানুষ ভিড় করেন এখানে। এ বার ৭৫তম বর্ষে দেবালয় ভ্রাতৃ সঙ্ঘের মূল আকর্ষণ হল কৃষ্ণনগরের প্রতিমা এবং রাজস্থানের রাজবাড়ির অনুকরণে মণ্ডপ। ৬৬ বছরের দেবালয় প্রগতি সঙ্ঘের পুজোয় তৈরি হয়েছে অ্যালমুনিয়ামের সিট দিয়ে প্রাচীন প্রাসাদের অনুকরণে মণ্ডপ। তার উপর রাজবাড়ির বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যা দেখতে ভিড় উপচে পড়ছে।

৪১তম বর্ষে জাগৃতি সঙ্ঘের উপহার মুক্ত-সহ সামুদ্রিক নানা উপকরণ দিয়ে প্রতিমা। শিল্পী ইন্দ্রজিৎ পোদ্দারের কথায়, “ঝিনুক, পাথর, শামুক-সহ ১০৪ রকম সামুদ্রিক উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপ।” তুলো দিয়ে আইসল্যান্ডের অনুকরণে মণ্ডপ তৈরি করেছে নবপল্লি যুবশক্তি। এ বার এই পুজোর ২৯তম বর্ষ। এখানে বেশ খানিকটা গুহা পথ অতিক্রম করে প্রতিমা দর্শন করতে হচ্ছে। ৫০ তম বর্ষে দেবালয় মিলন সঙ্ঘের আকর্ষণ সানপ্যাক। প্লাস্টিকের চামচ দিয়ে তৈরি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে মণ্ডপটি তৈরি হয়েছে। দেবালয় চন্দ্রকেতু সঙ্ঘ এবং দেবালয় মহাকালী অগ্রগামী সঙ্ঘের আকর্ষণ চন্দননগরের আলো। এখানে সাত দিনের উৎসবে মেলার পাশাপাশি রয়েছে এলাকার শিশু শিল্পীদের আঁকা চিত্র-ভাস্কর্যের প্রদর্শনী। শিল্পী কাঞ্চন মিস্ত্রীর কথায়, “প্রদর্শনীতে শতাধিক ছেলেমেয়ে যোগ দিয়েছে। যানজট কাটাতে পুলিশের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে সহযোগিতা কেন্দ্র।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE