দোলে ইভটিজিং রুখতে এ বার পাড়ায় পাড়ায় নজর রাখবে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ‘প্রমীলা বাহিনী’। পুলিশের উর্দিতে নয়, সাধারণ পোশাকেই স্কুটি বা গাড়িতে মহিলা পুলিশের প্রায় ৩০০ জনের এই বাহিনী শিল্পাঞ্চলের ১৩টি থানার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকবেন।
দোল মানেই ফি বছর গোলমাল লেগে থাকে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। ইভটিজিং, নেশা করে দুর্ব্যবহার, অশালীন আচরণের অভিযোগ ভুরি ভুরি জমা পড়ে কমিশনারেটের সদর দফতরে। ধরপাকড়ও হয়, তবে জামিনও মেলে সহজে। কখনও প্রভাবশালীদের সুপারিশও থাকে জামিনের জন্য।
গত বছরই দোলের দিন জগদ্দলের এক পুকুরে দোল খেলে স্নান করতে যাওয়া দুই তরুণীর শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে পাশের পাড়ার একদল যুবকের হাতে মার খান জয়দীপ বিশ্বাস নামে এক ছাত্র। তাতেই ক্ষান্ত হয়নি উন্মত্ত যুবকেরা। অভিযোগ ছিল, তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে এক প্রতিবন্ধী মহিলাকে মারধর এবং বাড়ি ভাঙচুরও করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়িতে পুলিশ পিকেট বসলেও এই ঘটনায় সাক্ষী জোগাড় করতে রীতিমতো বাড়ি বাড়ি কড়া নাড়তে হয়েছিল তদন্তকারীদের। তার আগের বছর কামারহাটিতে এক মহিলার গায়ে রং দেওয়া নিয়ে প্রবল উত্তেজনা ছড়ায় দু’দলের মধ্যে। কোনও রকমে সংঘর্ষ ঠেকিয়ে পুলিশ পিকেট বসলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দু’দিন লেগে যায়। পুলিশি নজরদারির ফাঁক গলে এ রকম অসংখ্য ঘটনা প্রতি বছর ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ঘটার অভিযোগ থেকেই এ বার কমিশনারেটের এই অভিনব উদ্যোগ বলে দাবি পুলিশকর্তাদের।
আত্মরক্ষায় পারদর্শী পুলিশ কনস্টেবল ও অফিসারদের নিয়ে এই বাহিনী তৈরি হয়েছে। যাঁরা দোলের দিন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরবেন, দুষ্কৃতীদের সন্দেহ এড়াতে আবির বা রংও থাকবে তাঁদের সঙ্গে। নিজেরা রং খেলবেন, গল্পগুজব করবেন, কিন্তু নজর থাকবে যে এলাকায় থাকছেন সেখানকার লোকজনের উপরে। আশপাশেও কোনও ঘটনার খবর পেলে নিজেদের মধ্যে ফোন বা ওয়্যারলেসে যোগাযোগ করে পৌঁছে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেবেন তাঁরা। এই বাহিনীকে ‘ব্যাক আপ’ দেওয়ার জন্য প্রতিটি থানার পুলিশ বাহিনী এবং স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের অফিসারেরাও থাকবেন। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘আশা করছি এ বারের দোল আনন্দেই কাটবে। অবাঞ্ছিত অশান্তি এবং ঝঞ্ঝাট এড়াতেই এই বাড়তি সতর্কতা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy