নিহতের দুই ছেলে। নিজস্ব চিত্র।
কিছু দিন বন্ধ থাকার পরে ফের রক্ত ঝরল বনগাঁয়।
এ বার বাজার এলাকায় বিকেলে এক ব্যক্তিকে দোকানের মধ্যে ঢুকে গুলি করে, কুপিয়ে খুন করে পালাল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কলমবাগান এলাকায়। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম সাত্তার মণ্ডল (৫২)। বাড়ি পাশের গাঁড়াপোতা এলাকায়। নিহতের বিরুদ্ধে অতীতে খুন, অপহরণ-সহ নানা অভিযোগ ছিল পুলিশের খাতায়। সাত্তারকে খুনের ঘটনায় শাসকদলের মদতের অভিযোগ তুলেছে নিহতের পরিবার। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের পাল্টা দাবি, দুষ্কৃতীদের নিজেদের গোলমালের জেরেই এই ঘটনা। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে। সম্ভাব্য সব কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের বিরুদ্ধে পুরনো অভিযোগগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেলে একটি দোকানে বসে কাগজ পড়ছিলেন সাত্তার। দোকানের মালিক মানোয়ার মণ্ডল সেখানে ছিলেন না। কয়েক জন দুষ্কৃতী আচমকা দৌড়ে দোকানে ঢুকে পড়ে। সাত্তারের উপরে হামলা চালিয়ে পালায় তারা। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দোকানের কর্মচারী রিপন রায় বলেন, “আমি রাস্তার অন্য পারে ছিলাম। হঠাৎ গুলির শব্দ শুনি। দুষ্কৃতীরা চার-পাঁচজন ছিল।”
হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে সাত্তারের ছেলে আক্তার বলেন, “স্থানীয় এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ভাই বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে দুষ্কৃতীদের দিয়ে খুন করিয়েছে। এর পিছনে তৃণমূলেরও মদত রয়েছে।” তাঁর দাবি, “বাবা কয়েক দিন আগেই বলেছিলেন, খুন হয়ে যেতেন পারেন।” নিহতের পরিবারের দাবি, অতীতে সাত্তার নানা বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও ইদানীং সৎ ভাবেই জীবনযাপন করছিলেন। তাঁদের একটি মাছের ভেড়ি রয়েছে। গাঁড়াপোতা বাজারে মোবাইল ও জুতোর দোকানও আছে। অতীতে সাত্তার সিপিএম সমর্থক বলে পরিচিত হলেও বর্তমানে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবে তৃণমূলের কিছু নেতার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল।
আক্তারের অনুমান, দিন কয়েক আগে এলাকায় কুন্দিপুর ফিসার ম্যানস কো-অপারেটিভের নির্বাচনে তৃণমূল হেরে যায়। তৃণমূলের সন্দেহ ছিল, বাবা হয় তো তলায় তলায় সিপিএমের হয়ে ভোট করেছেন। সেই আক্রোশ থেকে খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তৃণমূল অবশ্য খুনের ঘটনার পিছনে তাদের মদতের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের নীলদর্পণ ব্লকের সভাপতি নন্দদুলাল বসু বলেন, “তৃণমূল কোনও ভাবেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। দুষ্কৃতীদের নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে কোন্দলের জেরেই ওই খুনের ঘটনা ঘটেছে।” যে নেতার ভাইয়ের সম্পর্কে অভিযোগ তুলছেন নিহতের পরিবার, সেই ব্যক্তিও দলের কেউ নয় বলে নন্দদুলালবাবুর দাবি। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “সাত্তারের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ-সহ বহু অসামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। নিজেদের মধ্যে বিবাদেই সে খুন হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করলে সত্যি বেরিয়ে আসবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy