Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ দোকান কর্তৃপক্ষ
Calcutta High Court

আদালতের নির্দেশের পরেও খালি হল না ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্বাস্থ্যভবন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল সহ রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে নতুন করে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের অনুমতি দেওয়ার টেন্ডার ডাকে।

কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

সীমান্ত মৈত্র  
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১০:১৯
Share: Save:

হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে থাকা একটি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খালি করে দিতে। অভিযোগ, তারপরেও নির্দেশ মানেননি দোকান কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্বাস্থ্যভবন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল সহ রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে নতুন করে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের অনুমতি দেওয়ার টেন্ডার ডাকে। টেন্ডারে ‘কোলে মেডিক্যাল এজেন্সি’ বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল সহ রাজ্যের ২০টি ন্যায্য মূলের ওষুধের দোকান খোলার অনুমতি পায়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি ৪ বছর অন্তর হাসপাতালগুলিতে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান দেওয়ার টেন্ডার করা হয়। টেন্ডার ৪ বছরের জন্য দেওয়া হয়।

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ২০১৩ সাল থেকে ‘ঘোষ মেডিক্যাল’ নামে ন্যায্য মূল্যের দোকানটি চলছিল। নতুন টেন্ডার অনুযায়ী তাদের হাসপাতাল চত্বর থেকে সরে যাওয়ার কথা। কোলে মেডিক্যাল এজেন্সির পক্ষে সুজিত দেবনাথ বলেন, ‘‘দোকানটি খালি না করায় আমরা স্বাস্থ্যভবনে বিষয়টি জানাই। স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে চলতি বছরের ১৫ অগস্টের মধ্যে আগের ন্যায্য মূল্যের দোকানটি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ তারা মানেনি।’’ সুজিতের কথায়, ‘‘আমরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, ২২ নভেম্বরের মধ্যে ওই দোকান খালি করে দিতে হবে। তারপরেও ওঁরা দোকান খালি করেননি। হাসপাতাল সুপার সহ স্বাস্থ্যভবনেও বিষয়টি জানিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, নতুন করে টেন্ডার পাওয়া কোলে মেডিক্যাল এজেন্সিকে হাসপাতাল চত্বরে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খোলার জায়গা দেওয়া হয়েছে। সেখানে তারা ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান চালুও করেছে। যদিও সুজিতের বক্তব্য, ‘‘হাসপাতালে যেখানে আমাদের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেটি পিছনের জায়গা। সেখানে ক্রেতারা যাচ্ছেন না। একই হাসপাতালে দু’টি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান থাকতেও পারে না। সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও কেন পুরনো দোকানটি খালি করা হবে না?’’

হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বাড়ুই বলেন, ‘‘পুরনো দোকানটি খালি করতে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাকিটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয়।’’হাই কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্বেও কেন তাঁরা দোকান খালি করছেন না?ঘোষ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদের অন্ধকারে রেখে বা তাঁদের কোনও নোটিস না দিয়ে টেন্ডার করা হয়েছে। পুরনো দোকানি হিসেবে নোটিস করে টেন্ডারের বিষয়টি তাঁদের জানানো হয়নি। কর্তৃপক্ষের দাবি, টেন্ডারে জালিয়াতি করে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওয়েবসাইট সহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় টেন্ডারের বিষয়টি জানানো হয়েছিল।

ঘোষ মেডিক্যালের লাইসেন্স ইন্দ্রজিৎ ঘোষের নামে। তিনি অবসরপ্রাপ্ত এনভিএফ কর্মী। অবসরের পরে জমানো টাকা দিয়ে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খুলেছিলেন। তাঁর ছেলে সাহেব বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারে ৮ জন সদস্য। দোকানে কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪০ জন। হঠাৎ করে উঠে গেলে না খেয়ে মরতে হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আমরা ৮৫ লক্ষ টাকা পাই। দোকান তুলে দিলে সেই টাকা কী ভাবে ফেরত পাব? এই পরিস্থিতিতে আমরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। ’’ সুজিতের দাবি, ‘‘ওঁরা সুপ্রিম কোর্ট গেলেও এখনও আদালত আবেদন গ্রহণ করেনি বা শুনানি শুরু হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Medicine Shop Bangaon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy