জঙ্গলে রোদ পোহাচ্ছে কুমির। —ফাইল চিত্র।
২০১২ সালের পরে, সম্প্রতি সুন্দরবনে কুমির গণনার কাজ করেছিল বন দফতর। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সুন্দরবনের সর্বত্র নদী-খাঁড়ি এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। সেই রিপোর্ট কতটা ঠিক ছিল, তা জানতে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে ফের সুন্দরবনে কুমির গণনার কাজ শুরু করতে চলেছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। চলতি বছরের ডিসেম্বর ও আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে তিন বার কুমির গণনা হবে সুন্দরবনে। আর তা থেকে পাওয়া তথ্য বিচার-বিশ্লেষণ করে সুন্দরবনে সঠিক কতগুলি কুমির রয়েছে, তার রিপোর্ট পেশ করবে বন দফতর।
বন দফতরের দাবি, শেষ কুমির সুমারিতে ১৬৮টি কুমিরকে সরাসরি চোখে দেখা গিয়েছিল। পাশাপাশি, কুমির যেখানে থাকতে পারে, সেই সব এলাকার পরিস্থিতি ও পরিবেশ খতিয়ে দেখে বন দফতর মনে করছে, সুন্দরবনে কমপক্ষে ২০৪টি কুমির রয়েছে। কুমিরের সংখ্যা সর্বোচ্চ ২৩৪টি পর্যন্ত থাকতে পারে বলেও তাঁরা রিপোর্ট পেশ করেছিলেন।
২০১২ সালের কুমির সুমারিতে ভারতীয় সুন্দরবনে ১৪১টি কুমিরের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। সেই তুলনায় গত সুমারিতে কুমিরের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছিল বলে দাবি করেছিল সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পে। কিন্তু আবহাওয়া ও পারিপার্শ্বিক কারণের কথা মাথায় রেখে কুমিরের সঠিক সুমারি হয়েছিল কিনা, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যেই কিছুটা সংশয় ছিল বনাধিকারিকদের। তাই এ বার পর পর তিন মাস ধরে নতুন করে কুমির সুমারি করে এক্কেবারে নির্ভুল তথ্য তুলে ধরতে চাইছেন তাঁরা।
গত বার সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে ২২টি দল তিন দিন ধরে ঘুরে ঘুরে গণনার কাজ করেছিল। তবে এ বার ২৬টি দল এই কাজ করবে বলে জানিয়েছে বন দফতর। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকা এবং ২৪ পরগনা বনবিভাগ এলাকায় কুমিরের খোঁজে বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করবেন শতাধিক বনকর্মী ও কুমির বিশেষজ্ঞেরা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে যখন কুমির গণনা চলছিল, তখন আবহাওয়া যথেষ্ট খারাপ ছিল। নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টিও হয়েছিল। যা কুমির গণনার জন্য অনুকূল নয় বলেই দাবি করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকত, তা হলে সরাসরি কুমির-দর্শনের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত বলে তাঁদের দাবি।
মূলত খালি চোখে দেখেই কুমিরের গণনা করা হয়। পাশাপাশি, কোথাও কুমিরের উপস্থিতি বিশেষজ্ঞেরা টের পেলে সেই সংখ্যাও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যে এলাকায় কুমিরের দেখা মিলছে, সেই এলাকার অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, জলের তাপমাত্রা, লবণতার পরিমাণ— সবই রেকর্ড করা হয়।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “সুন্দরবনের প্রায় ৪২০০ কিমি এলাকা জুড়ে এই গণনার কাজ ফের করা হবে। সরাসরি খালি চোখে দেখে এবং এলাকায় কুমিরের উপস্থিতি অনুভব করে এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে। গত বার আবহাওয়া খারাপ থাকায় কুমিরের সঠিক সংখ্যা নিয়ে আমাদেরই একটু সন্দেহ রয়েছে। তাই এ বার ফের কুমির গণনা করা হবে। নির্ভুল তথ্য পেতে পর পর তিন মাস ধরে গণনা হবে একই জায়গায়। তা বিশ্লেষণ করে সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy