Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Success Story

বাবা চা বিক্রি করেন, সিএ পরীক্ষায় পাশ করে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ভাসালেন তরুণী

১১ জুলাই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছিল। তালিকায় নিজের নাম দেখার পর আর সামলাতে পারেননি অমিতা। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) পরীক্ষায় পাশ করেছেন তিনি।

বাবাকে জড়িয়ে কেঁদে ভাসালেন তরুণী।

বাবাকে জড়িয়ে কেঁদে ভাসালেন তরুণী। —ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ১২:৩২
Share: Save:

কিশোরকুমারের সেই জনপ্রিয় গান ‘কুছ তো লোগ কহেঙ্গে, লোগোঁ কা কাম হে কহেনা’ মনে পড়ে? প্রেক্ষাপট এক না হলেও গানের প্রথম দুই কলির সারমর্ম ভালই বুঝেছিলেন অমিতা প্রজাপতি। দিল্লির বাসিন্দা এই তরুণীর বাবার চায়ের দোকান রয়েছে। কাজের সুবিধার জন্য তিনিও বাবার সঙ্গে হাত লাগাতেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ার। কিন্তু চা বিক্রেতার মেয়ে হয়ে এ সব স্বপ্ন দেখা অনুচিত। বরং বিয়ের পর সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকাই তাঁর ধর্ম— অমিতা এবং তাঁর বাবাকে এই কথাগুলোই শুনতে হত সব সময়। কিন্তু লোকের কথায় কান দিতে রাজি ছিলেন না অমিতা। কিশোরকুমারের গান শুনে বোধ হয় সেটাই শিখেছিলেন তরুণী। সময় লাগলেও স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি তিনি। চা বিক্রেতার মেয়ে হয়েও যে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়া যায়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন অমিতা।

১১ জুলাই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছিল। তালিকায় নিজের নাম দেখার পর আর সামলাতে পারেননি অমিতা। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) পরীক্ষায় পাশ করেছেন তিনি। লিঙ্কডইন মাধ্যমে পোস্ট করে তিনি জানান, ছোট থেকে পড়াশোনায় খুব একটা ভাল ছিলেন না তিনি। অমিতার বাবাকে অনেকেই পরামর্শ দিতেন, মেয়ের পড়াশোনার পিছনে টাকা খরচ না করে ঘরবাড়ি তৈরি করতে। কারণ বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি পাঠাতে হবে তো মেয়েকে!

অমিতা প্রজাপতির পোস্ট।

অমিতা প্রজাপতির পোস্ট। ছবি: সংগৃহীত।

তবে অমিতার প্রতি তাঁর বাবা-মায়ের ভরসা ছিল অগাধ। অমিতা লেখেন, ‘‘পড়াশোনায় তেমন ভাল ছিলাম না। কিন্তু সিএ হতে চেয়েছিলাম। ১০ বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছি। পরীক্ষায় পাশ করার পর আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। বাবাকে জড়িয়ে এই প্রথম বার কাঁদলাম আমি। বাবা-মায়ের সব স্বপ্নপূরণ করতে চাই আমি। তাঁদের জন্য বাড়িও তৈরি করব।’’

সমাজমাধ্যমে অমিতা এবং তাঁর বাবার আবেগঘন মুহূর্তের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বাইকের উপর বসে রয়েছেন অমিতার বাবা। পিঠের ব্যাগটি বুকের সামনে নেওয়া। মাথায় হেলমেট পরে রয়েছেন। এক নজরে দেখলে মনে হয়, বাইক চালিয়ে কোথাও থেকে ফিরছিলেন তিনি। সেই অবস্থায় অমিতা তাঁর বাবাকে জড়িয়ে অঝোরে কেঁদে ফেলেন।

‘‘বাবা, আমি সিএ হয়ে গিয়েছি’’— ১০ বছর ধরে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা সত্যি হলে যে বোধ হয় গলা কাঁপতে থাকে। বোধ হয়, চোখের জল বাধ মানে না। আশীর্বাদ দিতে মাথায় হাত রেখে অমিতাকে বুকে জড়িয়ে রইলেন তাঁর বাবা। চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ছিল তাঁরও। হেলমেট খুলে চোখের জল মুছে নিলেন তিনি। অমিতার সাফল্যের জন্য তাঁকে শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিয়েছেন নেটব্যবহারকারীরা।

অন্য বিষয়গুলি:

CA Tea Seller Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy