মনোজ। ৯০ বলে ৯০
আট মাস পর মাঠে ফিরে অবশেষে রানেও ফিরলেন মনোজ তিওয়ারি। তাঁর প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাও অসমকে ১২ রানে হারিয়ে উঠে গেল বিজয় হাজারে ট্রফির মূলপর্বে। ইডেনে কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দীনেশ কার্তিক, মুরলী বিজয়ের তামিলনাড়ু।
রাঁচির ওভাল মাঠে শুক্রবার প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৩২১-৬ তোলার পর থেকেই বাংলা শিবির আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছিল। রাঁচির বিমানবন্দরে ফেরার ফ্লাইট ধরার জন্য অপেক্ষমান লক্ষ্মীরতন শুক্ল যখন মোবাইলে বলছিলেন, “আত্মবিশ্বাস আমাদের ম্যাচের আগে থেকেই ছিল’’, তখন তাঁর গলায় স্বস্তির সুর। বাংলা অধিনায়কের এর পর সংযোজন, “বড় রান হয়ে যাওয়ার পর আত্মবিশ্বাস আরও বাড়ল। আমাদের ব্যাটসম্যানরা সত্যিই ভাল ব্যাট করেছে। উইকেটও ব্যাট করার পক্ষে ভাল ছিল।”
ওপেনার শ্রীবৎস গোস্বামী ও মনোজ তিওয়ারির ১৪৪ রানের ঝোড়ো পার্টনারশিপ বাংলাকে ভাল জায়গায় এনে দেওয়ার পর স্কোরবোর্ডের গতি বাড়ানোর দায়িত্ব নেন ঋদ্ধিমান সাহা (৫৬ বলে ৭৮) ও সায়নশেখর মণ্ডল (২২ বলে ৩৪)। মনোজ করে যান ৯০ বলে ৯০ রান, শ্রীবৎসও ৮৭ বলে ৮৭। সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়ায় অবশ্য হতাশ মনোজ। বললেন, “উইকেটটা বেশ সহজ হয়ে গিয়েছিল। সেঞ্চুরিটা পাওয়া উচিত ছিল।” রীতিমতো আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রতিযোগিতা শুরু করেছিলেন এই দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। শ্রীবৎস দশটি চার মারেন, মনোজ আরও বিধ্বংসী-- পাঁচটা চার ও ছ’টি ওভার বাউন্ডারি। ঋদ্ধিরাও কী কম ছিলেন? ছ’টি ছয় মারেন ঋদ্ধি। সায়নশেখরের ইনিংসে তিনটি চার ও দু’টি ছয়। সব মিলিয়ে বাংলার ব্যাটসম্যানরা এক ডজন ছক্কা হাঁকান এ দিন। টস জিতে অসমের ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তে যে তাঁদের ভালই হয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়ে লক্ষ্মী বলেন, “টস জিতলে কিন্তু ব্যাটই করতাম। টস হেরে আমাদের তাই কোনও ক্ষতি হয়নি।”
শুরুর দিকে অসমের ওপেনার পরভেজ আজিজ (৫০ বলে ৬৭) ও শেষ দিকে শিবশঙ্কর রায় (১০১) বাংলাকে অস্বস্তিতে ফেললেও বাংলার বোলাররা শেষ পর্যন্ত সামলে নেন। অসমও তিনশোর উপর (৪৯.৩ ওভারে ৩০৯) তুলে অল আউট হলেও নিজের বোলারদের প্রশংসা করে লক্ষ্মী বলেন, “সবাই ভাল বল করেছে। বিশেষ করে সৌরাশিসের বলে আজিজের আউটটা দারুণ।” তবু জয়ের অনেকটা কাছে চলে এসেছিল অসম। একটা সময় ২০ বলে ২৬ রান দরকার ছিল তাদের। তখনও শিবশঙ্কর ক্রিজে। কিন্তু অন্য দিক থেকে ধস নামায় তাঁর সেঞ্চুরি কাজে আসেনি। শেষ ওভারে ১৭ রানের প্রয়োজন যখন অসমের, তখন হাতে এক উইকেট। সেই উইকেটটা তুলে নেন বীরপ্রতাপ (৩-৬৫)।
ইডেনে টুর্নামেন্টের মূলপর্বে লক্ষ্মীরা এ বার আঞ্চলিক পর্ব থেকে দ্বিতীয় হয়ে যোগ্যতা অর্জন করলেও গত বছরের সেমিফাইনালিস্ট হওয়ায় সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে খেলবেন। মঙ্গলবার দিন-রাতের ম্যাচে তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী তামিলনাড়ু। জিতলে শুক্রবার সেমিফাইনালে হরভজন সিংহের পঞ্জাব, পাঠান ভাইদের বরোদা বা রেলওয়েজের বিরুদ্ধে নামতে হবে বাংলাকে। এ ছাড়াও মূলপর্বে খেলছে রবিন উথাপ্পা, বিনয় কুমারদের কর্নাটক, পার্থিব পটেলের গুজরাত, সৌরভ তিওয়ারির ঝাড়খণ্ড, সার্ভিসেস ও বিদর্ভ। ইডেনের ম্যাচগুলি হবে দিন-রাতের। সল্টলেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে হবে অন্য ম্যাচগুলি। সে জন্য বোর্ডের আঞ্চলিক কিউরেটর আশিস ভৌমিক দু’দিন আগেই চলে এসেছেন শহরে। রঞ্জি নক আউট ম্যাচে যেমন গ্রিন টপ উইকেট দেওয়া হয়েছিল, এ বার তা হচ্ছে না বলে জানালেন আশিস। ইডেনে এ দিন বলছিলেন, “ওয়ান ডে-র উপযোগী উইকেটই হবে। প্রচুর রান উঠবে।” ইডেনে ফাইনাল ১৬ মার্চ, দোলের দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy