টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান হিসেবে সুরেশ রায়নার ক্ষমতা নিয়ে কোনও প্রশ্নই ওঠে না, মনে করছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক আরও মনে করেন, চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রায়নার সাফল্য তাঁকে আগামী লড়াইয়ের জন্য আত্মবিশ্বাস জোগাবে।
ঢাকায় চলতি বিশ্বকাপে দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ মিলিয়ে রায়নার স্কোর যথাক্রমে ৪১, ৫৪, ৩৫ নট আউট এবং ১ নট আউট। তাঁর সাম্প্রতিক সাফল্যের পিছনে যে সৌরভের টিপস রয়েছে, টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই রায়না তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। নতুন ছাত্র নিয়ে সৌরভ বলছেন, “সুরেশের প্রতিভা আর ক্ষমতা নিয়ে আমার মনে কোনও সন্দেহ ছিল না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ও খুব উঁচু মানের প্লেয়ার। এই ফর্ম্যাটে ও বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান। যে কোনও বিপক্ষের কাছে আতঙ্ক। আশা করছি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফর্মটা ধরে রেখে আগামী দিনে সুরেশ আরও বড় কিছু করে দেখাবে।” সঙ্গে সৌরভের সংযোজন, “জুলাইয়ে ইংল্যান্ড সফর, তার পর অস্ট্রেলিয়া সফর আর বিশ্বকাপ সব মিলিয়ে আরও কঠিন লড়াই। আমি চাই সে সব যুদ্ধে ও সফল হোক।”
রায়নাকে কী কী টেকনিক্যাল মন্ত্র দিয়েছেন সৌরভ? তাঁর কথায়, “হ্যাঁ, সুরেশের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু ওকে কী বলেছি, সেটা দু’জনের মধ্যেকার ব্যক্তিগত একটা ব্যাপার। সেগুলো মিডিয়ায় বলার জন্য নয়। সুরেশ আমার সতীর্থ, তাই দরকারে ওকে সাহায্য করাটা আমার কর্তব্য।” যাদের আমার সাহায্য দরকার, তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি সব সময় তৈরি।”
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের আর এক সদস্যের মেন্টর ছিলেন সৌরভ। সেই যুবরাজ সিংহ চলতি টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ভাল ছন্দে নেই। বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান নিয়ে সৌরভ বলছেন, “মাত্র দুটো ম্যাচে রান পায়নি যুবরাজ। সেটা নিয়ে এত হইচই করা কিছু কিন্তু হয়নি। আরে ও-ও তো মানুষ, একটা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে ও যেতেই পারে। সেটা কাটিয়ে ওঠার ক্ষমতাও যুবরাজের আছে।” সঙ্গে সংযোজন, “এ রকম একজন স্পোর্টসম্যানও নেই যে ১৫, ১৬ বছর ধরে সর্বোচ্চ স্তরে খেলেও খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যায়নি। এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।” খারাপ সময় কাটিয়ে ওঠার মন্ত্রও দিচ্ছেন সৌরভ। তাঁর কথায়, “নিজের উপর বিশ্বাসই হল চাবিকাঠি। যুবিকে তার সঙ্গে আরও বেশি খাটতে হবে। নিশ্চয়ই ওর সময় আসবে আর সেই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারবে।”
ভারতীয় পেস আক্রমণের প্রধান অস্ত্র মহম্মদ শামি টানা ক্রিকেটের মধ্যে আছেন। গত অক্টোবর থেকে তিনি ১৮টা ওয়ান ডে, ছ’টা টেস্ট, চারটে টি-টোয়েন্টি আর একটা ঘরোয়া ম্যাচ খেলেছেন। যা নিয়ে অনেকেই বলছেন, শামির বিশ্রাম পাওয়া উচিত। সৌরভ অবশ্য একমত নন। বরং তিনি বলছেন, “কীসের বিশ্রাম? শামি মাত্র চব্বিশ বছরের। যথেষ্ট শক্তিও আছে ওর। পনেরো-কুড়িটা ম্যাচ খেলেছে বলেই ওর বিশ্রাম লাগবে নাকি? বরং এই সময়টায় ওর আরও বেশি ম্যাচ খেলা দরকার।”
চলতি টুর্নামেন্টে ভারতের সেরা আবিষ্কার অমিত মিশ্র নিয়ে সৌরভ বলেছেন, “যে ট্র্যাকে বল টার্ন করবে, সেখানে সব সময়ই ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলবে অমিত। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের পরিবেশ ওর বোলিংয়ের পক্ষে আদর্শ। আর অমিত ভাল টি-টোয়েন্টি বোলার। ও তো আইপিএলেও যথেষ্ট সফল।”
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার ভারত বলে মনে করেন সৌরভ। “স্পিনাররা ভাল খেলছে। ধোনিদের পক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার সেরা সুযোগ এটাই কি না, সেটা এত তাড়াতাড়ি বলা যাবে না। কিন্তু ওরা শুরুটা ভাল করেছে। সবে দুটো ম্যাচ খেলেছে ভারত। এখনও অনেকটা রাস্তা বাকি আছে,” বলছেন সৌরভ।
ক্যাপ্টেন কোহলিকে এখনই চান না কপিল
নিজস্ব প্রতিবেদন
সচিন তেন্ডুলকরকেও ছাপিয়ে যেতে পারেন বিরাট কোহলি, মনে করেন কপিল দেব। কিন্তু মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো যোগ্য অধিনায়ক দলে থাকতে এখনই কোহলির কাঁধে নেতৃত্বের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নন তিনি।
কোহলির মধ্যে যে তেন্ডুলকরের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন, তা জানিয়ে কপিল বলেন, “আমি কারও সঙ্গে কারও তুলনা করি না। দ্বিতীয় ডন ব্র্যাডম্যান যেমন আসবে না, তেমন আর একটা সচিন পাওয়াও অসম্ভব। কিন্তু এখনই কোহলির যা প্রতিভা, তাতে ও সচিনকে ছাপিয়ে যেতে পারে।” সঙ্গে সংযোজন, “বিরাট ৩২ বা ৩৪ বছর বয়স পর্যন্ত এ রকমই ফিট হয়ে খেলতে পারলে ভিভ, সচিনের চেয়েও বেশি নজির গড়বে।”
তবে এখনই নেতৃত্বের বোঝা বিরাটের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন কপিল। “ধোনি ফিট থাকলে ও-ই তো অধিনায়ক। ও দেশের সেরা ব্যাটসম্যানদের অন্যতম। ৬-৭ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে গড় ৫০-এর উপর নিয়ে যাওয়া সোজা ব্যাপার নয়। যে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এনেছে, তাকে নিয়ে সন্দেহ থাকবে কেন?” কোহলিকে নেতৃত্বে আনা প্রসঙ্গে কপিল বলেন, “ধোনির মতো কোনও সিনিয়র দলে থাকা সত্ত্বেও যদি বিরাটকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়, তা হলে দলের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব দেখা দিতে পারে। এখনই ওকে নেতৃত্বের দিকে ঠেলে দেওয়ার দরকার কী? সময় এলে ও ঠিক সুযোগ পাবে। ধোনি যথেষ্ট পরিণত মস্তিষ্কের অধিনায়ক। সুতরাং ওকে ওর কাজটা করতে দেওয়াই ভাল। ও যখন অবসর নেবে, তখন দেখা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy