দেবীপক্ষে ইনচিওনে ঝলসে উঠল নারীশক্তি। প্রথমে অ্যাথলেটিক্সে সীমা পুনিয়া পরে টেনিসে সানিয়া মির্জা। এশিয়াডের দশম দিন দুই নারীশক্তির দাপটে জোড়া সোনা পেল ভারত।
যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে মিক্সড ডাবলসে সোনাজয়ী সানিয়ার কাছে কিছুটা প্রত্যাশা ছিলই নিজের আট নম্বর এশিয়াড পদক জয়ের। যেমন ছিল সীমা পুনিয়ার ক্ষেত্রেও। সঙ্গে জুড়ে ছিল একরাশ আবেগও। তাই জাতীয় সঙ্গীতের সুর বেজে উঠতেই চোখের জল আর ধরে রাখতে পারেননি ডিসকাস থ্রোয়ের ভিকট্রি স্ট্যান্ডে সোনার পদক গলায় সীমা পুনিয়া।
অভিশাপ কাটাতে চোদ্দো বছর লাগল যে হরিয়ানার অ্যাথলিটের! ২০০০ সালে চিলিতে বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে ডোপের দায়ে সোনা জিতেও কলঙ্কের দাগ লেগেছিল। নিষিদ্ধ ড্রাগ ‘সিউডোএফেড্রিন’ নেওয়ায় নির্বাসনের শাস্তি এড়ালেও সোনা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল সীমার।
কেরিয়ারের শুরুতেই লাগা দাগটা এত দিনে মিটল। ডিসকাস থ্রোয়েই ইনচিওন গেমস থেকে দেশকে এ বারের পাঁচ নম্বর সোনা এনে দেওয়ার পর। যা কিনা এ বারের এশিয়াডে ভারতের প্রথম অ্যাথলেটিক্স সোনা। দেশের তারকা মহিলা ডিসকাস থ্রোয়ার কৃষ্ণা পুনিয়ার মঞ্চে সীমার উজ্জ্বল হয়ে ওঠার আভাস অবশ্য আগেই ছিল, গত মাসে গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে রুপো জয়ের পারফরম্যান্সে (৬১.৬১ মিটার)। সোমবার চতুর্থ প্রয়াসে ৬১.০৩ মিটার ছুড়তেই চিনা প্রতিদ্বন্দ্বীদের পিছনে ফেলে দেন সীমা। ২০১০ কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী সতীর্থ কৃষ্ণা পুনিয়াকেও। কৃষ্ণা শেষ করেন চতুর্থ স্থানে (৫৫.৫৭ মিটার)।
আবেগাপ্লুত সীমা বলে দেন, “পদকের মঞ্চে আবেগে চোখে জল এসে গিয়েছিল। কেননা এটাই আমার প্রথম এশিয়াড সোনা। আগের দুটো গেমসে ডোপ-বিতর্কে যেতে পারিনি। যেখানে আসলে নির্দোষ ছিলাম।”
দাপটে সোনা জেতেন সানিয়াও। মিক্সড ডাবলসে সাকেত মিনেনির সঙ্গে জুটিতে হায়দরাবাদি তারকা ৬-৪, ৬-৩ হারান চিনা তাইপে জুটি সিয়ে ইন পেং আর হাও চিং চ্যানকে। আরও তাত্পর্যের, মেয়েদের ডাবলসে সিয়ে জুটির কাছেই হেরে ব্রোঞ্জ পায় সানিয়াদের জুটি। শোধ তোলার দিনই সানিয়া আবার ডাবলসে প্রাক্তন এক নম্বর সিয়েকেই ২০১৫ পেশাদার ট্যুরে পার্টনার করে নিলেন।
এশিয়াডে সানিয়ার অবশ্য এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০০৬ দোহা এশিয়াডে লিয়েন্ডার পেজের সঙ্গে মিক্সড ডাবলস সোনা জেতেন তিনি। সব মিলিয়ে এশিয়াডে মিক্সড ডাবলস থেকেই সানিয়ার এটা চার নম্বর পদক। ২০০২ বুসান এশিয়াডে ব্রোঞ্জ, দোহায় সোনা, গুয়াংঝৌতে রুপোর পর এ দিন ইনচিওনে ফের সোনা। আর ইনচিওনে তাঁর দু’নম্বর পদক। শনিবার ডাবলসে প্রার্থনা থোম্বারের সঙ্গে জুটিতে ব্রোঞ্জ জয়ের পর। অথচ সপ্তাহ ক’য়েক আগেও সানিয়ার এশিয়াডে নামারই কথা ছিল না।
লিয়েন্ডার পেজ, রোহন বোপান্নারা ইনচিওন থেকে সরে যাওয়ার পর ডাবলসে বিশ্ব র্যাঙ্কিং ধরে রাখতে সানিয়াও ভেবেছিলেন এ বার এশিয়াডে নামবেন না। ডব্লিউটিএ ট্যুরে খেলবেন। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত পাল্টান। কেন? সোনার লড়াইয়ে নামার আগে সানিয়া বলেছিলেন, “আমার কাছে দেশকে যতগুলো সম্ভব পদক এনে দেওয়ার চেষ্টা করাটাই সবচেয়ে বড়। চারটে গেমসে আটটা পদক আমার কাছে খুব একটা খারাপ ফল নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy