উৎসবে আনন্দ-হুল্লোড়ের সঙ্গে হয়েছে পরিশ্রম। ক্লান্ত শরীর চনমনে হবে কোন উপায়ে? ছবি: সংগৃহীত।
কালীপুজো, দীপাবলির পর্ব মিটেছে। এ বার ভাইফোঁটা। উৎসবের আবহে আনন্দ, ভূরিভোজ, আড্ডা যতই হোক না কেন, পরিশ্রমও কম থাকে না। ঘরদোর গোছানো, রান্না, অতিথি আপ্যায়ন, পুজোআচ্চা লেগেই থাকে। তাতে শরীরের উপর ধকলও কম যায় না।
পরিশ্রমের জেরে গায়ে, হাত-পায়ে ব্যথা কমাতে বা ক্লান্তি কাটাতে, মুশকিল আসান হতে পারে ঘণ্টাখানেক মালিশ। শরীরে তেল মালিশ করলে শুধু যে ত্বকের জৌলুস ফিরবে তা নয়, মনও হবে ফুরফুরে। তবে অবশ্যই তা হতে হবে পদ্ধতি মেনে এবং বিজ্ঞানসম্মত ভাবে।
কী উপকার সারা শরীরে মাসাজের?
ব্যথা কমায়
কাজকর্ম, পরিশ্রমের পর শরীরে কেউ মালিশ করে দিলে আরাম হয়। তবে এর গুণও অনেক। আমেরিকার ‘পেন মেডিসিন জার্নাল’-এ ২০২৪-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র বলছে, ব্যথা কমাতে সাহায্য করে মাসাজ বা মালিশ। গবেষণায় উঠে এসেছে, অস্টিয়োআর্থ্রাইটিস, পিঠের ব্যথা কমে সঠিক মালিশে। এর ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। যার ফলে বিভিন্ন অংশে প্রদাহ কমে।
মন ভাল থাকে
সারা শরীরে মালিশের ফলে এন্ড্রোফিন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। এই হরমোন মন ফরফুরে রাখতে সাহায্য করে। মালিশের ফলে আরাম পায় শরীরও। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্স’-এর ২০০৫-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, মালিশের ফলে হ্রাস পায় কর্টিসলের মাত্রা। উদ্বেগ, দুশ্চিন্তার সঙ্গে এই হরমোনটির সংযোগ রয়েছে। অন্য দিকে, এন্ড্রোফিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে মন ভাল থাকে।
রক্ত সঞ্চালন
সঠিক পদ্ধতিতে মালিশে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। এতে ত্বকের জেল্লাও বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি, শরীর থেকে টক্সিন দূর করতেও তা কার্যকর। ‘জার্নাল অফ স্পোর্টস মেডিসিন’-এ প্রকাশিত ২০০৫ সালে এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা বলছে, রক্ত সঞ্চালন ভাল হলে কোষে বাড়তি অক্সিজেন পৌঁছয়। এর ফলে বিপাকক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন শরীরে জমে থাকা দূষিত পদার্থও বেরিয়ে যায়। শরীর ঝরঝরে হয়ে ওঠে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়?
মালিশের ফলে কি বৃদ্ধি পায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও? তেমনটাই বলছে ‘জার্নাল অফ অল্টারনেটিভ অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’। আমেরিকার জার্নালটিতে ২০১২-য় একটি গবেষণা প্রকাশ পায়। তাতেই বলা হয়েছে, মালিশের ফলে শরীরে লিম্ফোসাইট বা শ্বেতকণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। রোগ প্রতিরোধে এর বিশেষ ভূমিকা থাকে।
ত্বকের জেল্লা
মুখে, চুলে বা শরীরে মালিশ করলে ত্বকের জৌলুস বৃদ্ধি পায়। মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ফেসিয়াল সে কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮-য় আমেরিকার ওহাইয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টার থেকে প্রকাশিত, ‘কমপ্লিমেন্টারি থেরাপিজ় ইন মেডিসিন’-এর একটি গবেষণাপত্রে এই সংক্রান্ত সমীক্ষা বলছে, মালিশের ফলে ত্বকে এবং কোষে বাড়তি অক্সিজেন পৌঁছয়। তা ছাড়া তেলের ব্যবহারের ফলে ত্বকেরও আর্দ্রতা বজায় থাকে। ফলে ত্বকের জৌলুস বৃদ্ধি পায়।
তবে মালিশেরও কিছু নিয়মকানুন আছে। এ জন্য পেশাদার কারও সাহায্য নেওয়া দরকার। পাশাপাশি, মালিশের সময়ে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা প্রয়োজন। ভুল পদ্ধতিতে মালিশ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy