নতুন চুলের স্টাইল তৈরি করে এসেছেন শুধু কলকাতায় খেলবেন বলে। চতুর্থীর সকালে শহরে হাজির হয়ে সোনি নর্ডি চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিলেন। “মোহনবাগানকে ট্রফি দিতেই কলকাতায় এসেছি। অন্য টিমের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে দেব আমিই। ক্লাবকে বাকি সব ট্রফি এনে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নামব।”
বোয়া, ফাতাইরা এখনও সে ভাবে সফল হননি। বাগানেও ট্রফির খরা চলছে। তাই সবুজ-মেরুন সমর্থকরা অধীর অপেক্ষায় ছিলেন, কবে আসবে সেই আইএফএ শিল্ডে চমকে দেওয়া শেখ জামাল ধানমণ্ডির স্ট্রাইকার। অবশেষে রবিবার সকালে ভাই এবং বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় সোনি। বাংলাদেশের ধানমণ্ডির জট কাটিয়ে, ভিসা সমস্যা মিটিয়ে।
“চার বছর ট্রফি নেই তো কী হয়েছে। ট্রফি না জিতলে কি ক্লাব খারাপ হয়ে যায়? মোহনবাগান দেশের সেরা ক্লাব। ক্লাবের সব ফুটবলারের সঙ্গে আমিও সেরাটা দেওয়ার জন্যই মুখিয়ে রয়েছি। ক্লাব এ বছর ট্রফি পাবেই,” বলার সময় পরিচিত লাজুক হাসি সরিয়ে জেগে ওঠে জেদ।
হাইতিতে যখন ভিসা সমস্যায় জেরবার তিনি, তখনও কিন্তু খোঁজ রাখতেন নতুন ক্লাবের। জানেন, ইস্টবেঙ্গলের কাছে ডার্বি হেরেছে বাগান। মরসুমের প্রথম ট্রফি কলকাতা লিগও হাতছাড়া। আর সে জন্যই শহরে নেমে বারবার নিজে থেকেই টেনে আনছিলেন ট্রফির প্রসঙ্গ।
ইস্টবেঙ্গলের র্যান্টি মার্টিন্স, ডুডু ওমাগবেমিরা ইতিমধ্যেই ক্লাব জার্সিতে গোল করতে শুরু করে দিয়েছেন। এ বার তো সোনির পালা? যা চাইছেন বাগান কর্তারাও। সোনির সঙ্গে কথা বলে মনে হল, মানসিক ভাবে তিনি তৈরি। বললেন, “আমি নিজের খেলাটুকু খেলতে চাই। সেটা নিয়েই ভাবছি।” তবে আপাতত প্র্যাক্টিসের পাশাপাশি দুর্গাপুজো সেলিব্রেট করার পরিকল্পনা রয়েছে সোনির। বাংলাদেশে খেলে এসেছেন দু’বছর। ফলে দুর্গাপুজো সম্পর্কে জানেন। বলছিলেন, “এ বার কলকাতায় সবার সঙ্গে দুর্গাপুজো সেলিব্রেট করতে চাই। তার পর তো আমায় ট্রফির খোঁজে নামতে হবে।”
সাদা-নীল চেক জামা আর জিনসের থ্রি কোয়ার্টার প্যান্টে সোনিকে প্রথমে চেনা যাচ্ছিল না। গত এক বছরে চেহারার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। হেয়ার স্টাইলও বদলে ফেলেছেন। কিন্তু মুখে সেই ঝোলানো হাসিটা এক রকমই রয়ে গিয়েছে। কলকাতার জন্যই কি নতুন হেয়ার স্টাইল? প্রশ্ন শুনেই হেসে ফেললেন সোনি। বললেন, “একেবারেই ঠিক ধরেছেন। কলকাতার জন্যই নতুন হেয়ার স্টাইল করেছি।”
জুলাইয়ে বাংলাদেশের ধানমণ্ডির জার্সি গায়ে শেষ ম্যাচ খেলেছেন। মাঝে দু’মাস ছুটিতেই ছিলেন। হাইতিতে থাকার সময় কি আলাদা করে অনুশীলন করেছেন? সোনির দাবি, “ছুটিতে থাকলেও অনুশীলনের মধ্যেই ছিলাম।” সম্ভবত সিকিম গোল্ড কাপেই বাগানের জার্সিতে অভিষেক হবে তাঁর। পাহাড়ে উচ্চতার জন্য ফিটনেসে কোনও সমস্যা হবে না তো? হাইতি স্ট্রাইকার পরিষ্কার জানিয়ে দেন, “আমি পুরো ফিট। কোনও সমস্যা হবে না।”
এ দিন সোনির জন্য সকাল থেকেই বিমানবন্দরের বাইরে বাগান সমর্থকরা ভিড় জমিয়েছিলেন। তিনি বাইরে বেরোতেই তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বাস যেন বাঁধ ভাঙে। বিমানবন্দরের বাইরে এত হুড়োহুড়ি হয় যে সোনির বান্ধবী রীতিমতো ঘাবড়ে যান। এর মধ্যে আবার অন্য বিপত্তি হাজির। ক্লাবের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বাগানের লোকজন। গাড়িতে তুলে রওনা দেওয়ার জন্য এতটাই তাড়াহুড়ো করেন ওরা যে, সোনির বাক্স খুলে জিনিসপত্র মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে।
আজ পঞ্চমীর দিনই সোনির অনুশীলনে নামার কথা। পুজোর চার দিন অন্যদের ছুটি থাকলেও ফিটনেস ট্রেনার গার্সিয়ার কাছে অনুশীলন করবেন বাগান-স্ট্রাইকার। তার পরই যাবেন সিকিমে। দেখার, বাগানের ট্রফি খরা কাটিয়ে সোনি নতুন আলো দেখাতে পারেন কি না?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy