এশিয়া বনাম ইউরোপের দুই শক্তিধর দেশের লড়াই। আর তাকে ঘিরেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে গুয়াহাটিতে।
‘লে ব্লুজ’ বনাম ‘ব্লু সামুরাই’।
বুধবার অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘ই’-র ম্যাচে মুখোমুখি ফ্রান্স বনাম জাপান। দু’দলেরই লক্ষ্য, যে ভাবেই হোক গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নক-আউটে যাওয়া। ফরাসি কোচ লিওনেল রোশেঁল যখন তাঁর দলকে প্রচারমাধ্যমের হাত থেকে আগলাতে মরিয়া, তখন জাপানি কোচ ইয়োশির মোরিয়ামার মন্তব্য, ‘‘হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে জিতলেও ওদের বেশ কিছু সুযোগ দিয়েছি। সেই সুযোগ কোনও মতেই দেওয়া চলবে না।’’
মঙ্গলবার বিকেলে সাই মাঠে অনুশীলন ডেকেছিলেন জাপান কোচ। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ায় বেশিক্ষণ প্র্যাকটিস না করে হোটেলে ফিরে যান কিইতো নাকামুরা, তাকেফুসা কুবো-রা।
আরও পড়ুন: তিকিতাকার তুফান তুলে ফিরল স্পেন
হোটেলে ফেরার আগে জাপান থেকে আসা সাংবাদিকদের মোরিয়ামা বলে যান, ‘‘ফ্রান্সের প্রথম ম্যাচ ভিডিওতে দেখেছি। ম্যাচটা ওরা নিয়ন্ত্রণ করেছে। এই টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট ফরাসিরা। ওদের ২ নম্বর (ভিনসেন্ট কোলঁ), ৭ নম্বর (ইসিন অ্যাডলি) এবং ৯ নম্বর (আমিন গুইরি) দুই উইং ধরে আক্রমণ করে। তবে টিমের আসল লোক ওদের দশ নম্বর (ম্যাক্সিন ক্যাকারে)। কাজেই জিততে গেলে আমাদের রক্ষণকে দায়িত্ব নিতে হবে। যাতে ওরা ভয়ঙ্কর না হতে পারে।’’
প্রথম ম্যাচে নিউ ক্যালিডোনিয়ার বিরুদ্ধে ফ্রান্স যেখানে ১৫টি ফাউল করেছে, সেখানে হন্ডুরাসের মতো টাফ ফুটবল খেলিয়ে দেশের বিরুদ্ধে জাপানের ফাউল মাত্র তিন। এ দিন অনুশীলনে হাজির জাপানি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানা গেল এর কারণটাও। তাঁরা বলছিলেন, ‘‘জাপান ফুটবলকে বিশ্বের সেরা শক্তিতে পরিণত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে আমাদের দেশের ফুটবল ফেডারেশন। যার মধ্যে অন্যতম গ্রিন কার্ড। আর তার পরেই আমাদের দেশের ফুটবলারদের মধ্যে ফাউল করার প্রবণতা কমে গিয়েছে।’’
কী এই গ্রিন কার্ড?
অনূর্ধ্ব-১২ লিগ থেকে যা চালু হয়ে যায় জাপানে। লাল বা হলুদ কার্ডের মাঝামাঝি শাস্তি দেওয়া হয় সবুজ কার্ড দেখিয়ে। কোনও ফুটবলার যদি তিনটি ‘সবুজ কার্ড’ দেখে, তা হলে তাকে কারণ দর্শাতে হয়। জাপারে সাংবাদিকদের কথায়, ‘‘বড় টুর্নামেন্টে কার্ড সমস্যা ভোগায়। আর তা আটকাতেই এই ব্যবস্থা।’’
ফরাসি কোচের আবার যত ভয় জাপানিদের এই শৃঙ্খলাবদ্ধ ফুটবল নিয়েই। কোচ রোশেঁল-এর কথায়, ‘‘জাপান গতিসম্পন্ন ফুটবল খেলে। সেটাকে আটকাতে হবে।’’
ফরাসি কোচের সেরা তাস তাঁর ১০ নম্বর ফুটবলার ম্যাক্সেন্স ক্যাকারে। প্রথম ম্যাচে নিউ ক্যালিডোনিয়ার বিরুদ্ধে ফরাসিদের সাতটি গোলের তিনটিই এসেছিল তাঁর পা থেকে। ১০ নম্বর জার্সি গায়ে খেললেও মূলত মাঝমাঠ থেকে সক্রিয় হয় ক্যাকারে। এই ফরাসি দলকে খেলানোর রিমোট প্রায় তার হাতেই থাকে। মাঝমাঠে বিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমণের কারিগর ক্যাকারে।
লিয়ঁ-র এই ফুটবলার জাপান সম্পর্কে বলছে, ‘‘সহজ ম্যাচ বা কঠিন প্রতিপক্ষ বলে কিছু হয় না। আসলে ব্যাপারটা হল প্রথম ম্যাচে শুরুতেই আমরা গোল পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু প্রথম ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে আমরা আত্মতুষ্ট ছিলাম। একই ভুল করলে জাপানিদের বিরুদ্ধে ভুগতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy