শেষ ওভারে দুরন্ত বোলিং করে পঞ্জাবকে জেতালেন আরশদীপ। ছবি: আইপিএল।
আইপিএলের সুবাদে ক্রিকেটপ্রেমীরা আরও একটি টানটান উত্তেজনার ম্যাচ উপহার পেলেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং পঞ্জাব কিংসের ম্যাচ রং বদলাল একাধিক বার। কখনও সুবিধাজনক জায়গায় থাকলেন রোহিত শর্মারা। আবার কখনও চাপ কাটিয়ে ভাল জায়গায় থাকল স্যাম কারেনরা। শেষ ওভারে আরশদীপ সিংহের দুরন্ত বোলিংয়ের সামনে শেষ পর্যন্ত ঘরের মাঠে ১৩ রানে হারতে হল মুম্বইকে। পর পর দু’বলে পঞ্জাবের বাঁহাতি জোরে বোলার আউট করলেন তিলক বর্মা এবং নেহাল ওয়াধেরাকে। এই দু’বলই ম্যাচের ফলাফল ঠিক করে দিল। প্রথমে ব্যাট করে পঞ্জাব তোলে ৮ উইকেটে ২১৪ রান। জবাবে মুম্বই করল ৬ উইকেটে ২০১।
জয়ের জন্য ২১৫ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ঈশান কিশনের (১) উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় মুম্বই। আরশদীপের এই ধাক্কা কিছুটা রক্ষণাত্মক করে দেয় রোহিতদের। ফলে ক্রমশ বাড়তে থাকে ওভার প্রতি রানের লক্ষ্য মাত্রা। ঈশান ব্যর্থ হলেও লড়াই করলেন রোহিত। তাঁর ২৭ বলে ৪৪ রানের ইনিংস পঞ্জাবের উপর পাল্টা চাপ তৈরি করলেও তা মুম্বইকে জেতানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। মুম্বই অধিনায়কের ব্যাট থেকে এল ৪টি বাউন্ডারি এবং ৩টি ওভার বাউন্ডারি। শুরুর চাপ সামলে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং শুরু করার পর ২২ গজে বেশি সময় থাকতে পারলে না তিনি।
তিন নম্বরে নামা ক্যামেরন গ্রিন এবং চার নম্বরে নামা সূর্যকুমার যাদব আগ্রাসী ব্যাটিং করলেন। আইপিএলের শুরুর দিকে ছন্দে না থাকা সূর্যকুমারকে আবার চেনা মেজাজে দেখা যাচ্ছে। গ্রিনের ব্যাট থেকে এল ৪৩ বলে ৬৭ রানের ইনিংস। মারলেন ৬টি চার এবং ৩টি ছয়। সূর্যকুমারের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে তাঁর ৩৬ বলে ৭৫ রানের দাপুটে জুটি পাল্টা চাপ তৈরি করে পঞ্জাবের উপর। কমিয়ে আনে ওভার প্রতি রান তোলার লক্ষ্যমাত্রা। সূর্যকুমার অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন ২৩ বলে। শেষ পর্যন্ত তাঁর ব্যাট থেকে এল ২৬ বলে ৫৭ রানের ইনিংস। নিজের ইনিংসটি সাজালেন ৭টি চার এবং ৩টি ছয় দিয়ে। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময় তাঁকেও আউট করলেন আরশদীপ।
উইকেটে জমে যাওয়া সূর্যের তেজে লাইন-লেংথ গুলিয়ে ফেলছিলেন পঞ্জাবের বোলাররা। গ্রিন আউট হওয়ার পর নামা টিম ডেভিডকেও দেখা গেল আগ্রাসী মেজাজে। তাতে অবশ্য লাভ হল না। ডেভিড ১৩ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকলেও উইকেটের অন্য প্রান্তে সতীর্থদের সাহায্য পেলেন না।
শনিবার পঞ্জাবের সেরা বোলার নিঃসন্দেহে আরশদীপ। ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন পঞ্জাব-তনয়। লিয়াম লিভিংস্টোন ২৩ রান দিয়ে ১টি উইকেট তুলে নিলেন। ১টি উইকেট পেলেন নাথান এলিস। তিনি খরচ করলেন ৪৪ রান।
জিতলেও ওয়াংখেড়ের ২২ গজে পঞ্জাবের শুরুর দিকের কোনও ব্যাটারই বড় রান পাননি। তৃতীয় ওভারেই গ্রিনের বলে আউট হয়ে যান ম্যাথু শর্ট (১১)। অন্য ওপেনার প্রভসিমরন সিংহকে (২৬) দ্রুত সাজঘরে ফেরালেন অর্জুন তেন্ডুলকর। সচিনে তেন্ডুলকরের পুত্র ক্রমশ ভরসার অস্ত্র হয়ে উঠছেন রোহিতদের। প্রভসিমরন ১৭ বলের ইনিংসে মারলেন ১টি চার এবং ২টি ছয়। তিন নম্বরে নামা অথর্ব তাইডের ব্যাট থেকে এল ১৭ বলে ২৯ রান। ৩টি চার, ১টি ছক্কা এল তাঁর ব্যাট থেকে। ব্যর্থ লিভিংস্টোনও (১০)। দু’জনকেই আউট করলেন পীযূষ চাওলা।
৮৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্জাবের ইনিংসের হাল ধরেন হরপ্রীত সিংহ। তাঁকে ২২ গজে সঙ্গ দেন অধিনায়ক কারেন। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে তাঁরা তোলেন ৯২ রান। হরপ্রীত করলেন ২৮ বলে ৪১ রান। গ্রিনের বলে আউট হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে এল ৪টি চার এবং ২টি ছয়। কারেনের ইনিংস থামল ৫৫ রানে (২৯ বল)। ৫টি চার এবং ৪টি ছক্কা মারেন পঞ্জাব অধিনায়ক। কারেনই মূলত দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেন চাপের মুখ থেকে। তাঁকে আউট করলেন জোফ্রা আর্চার। চোট সারিয়ে শনিবার মুম্বইয়ের প্রথম একাদশে এসেছেন আর্চার। শেষ দিকে পঞ্জাবের ইনিংস টানলেন জিতেশ শর্মা। ৭ বলে ২৫ রান করলেন তিনি। মারলেন ৪টি বিশাল ছক্কা। জিতেশের দাপটেই ২০০ রানের গন্ডি টপকাল পঞ্জাব।
পঞ্জাবের সফততম বোলার চাওলা ৩ ওভারে ১৫ রানের ২ উইকেট নিলেন। ৪ ওভার বল করে ৪১ রান দিয়ে ২ উইকেট গ্রিনের। ৩ ওভারের ৪৮ রানে ১ উইকেট অর্জুনের। চোট সারিয়ে দলে ফেরা আর্চারের ঝুলিতেও ১ উইকেট। ইংল্যান্ডের জোরে বোলার খরচ করলেন ৪২ রান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy