ফুরফুরে: প্রিয় ইডেনে লখনউয়ের বিরুদ্ধে জয়ের নায়ক রজতের সঙ্গে ম্যাচের পরে নিজস্বী বিরাটের। আইপিএল
আইপিএল নিলামে বিক্রি না হওয়ার পরে ঠিক করে নিয়েছিলেন, মে মাসের শুরুর দিকে বিয়েটা করে ফেলবেন রজত পাটীদার। সেই মতো ৯ মে ইনদওরে হোটেল ভাড়াও করে ফেলা হয়েছিল। তার পরেই পরিবর্ত ক্রিকেটার হিসেবে দলে ডাক পান পাটীদার। আর বুধবারের ইডেনের পরে তিনি শুধু আর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের নিছক এক ক্রিকেটারই নন, তিনি দলের এক কান্ডারিও। যাঁর ব্যাটিং দাপটে আরসিবির আইপিএল জয়ের স্বপ্ন এখনও বেঁচে। যে কারণে বিয়ের তারিখ পিছিয়ে জুলাই মাসে চলে গিয়েছে।
লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে এলিমিনেটরে পাটীদারের অসাধারণ সেঞ্চুরি শুধু ক্রিকেট ভক্তদেরই মোহিত করেনি, মুগ্ধ করেছে বিরাট কোহলির মতো কিংবদন্তি ব্যাটারকেও। বিরাট তো এও বলে দিয়েছেন, পাটীদারের ইনিংস তাঁর দেখা অন্যতম সেরা। বিরাটের মতে, ২৮ বছরের ব্যাটারের ৫৪ বলে ১১২ রানের ইনিংস প্রতিযোগিতার ইতিহাসেও জায়গা পাবে।
ম্যাচের পরে পাটীদারের সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন বিরাট। প্রাক্তন আরসিবি অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘আমি ওকেও (রজত) বলেছি, একটা ম্যাচে এ রকম প্রভাব ফেলে দেওয়া ইনিংস খুব কম দেখেছি। বিশেষ করে মারাত্মক চাপের আবহে। রজত এখানে যা খেলে দিল, তার থেকে ভাল ব্যাটিং জীবনে খুব বেশি দেখিনি। আবার বলছি যে, আমাদের মনে রাখতে হবে, ও এই ইনিংসটা খেলল প্রচণ্ডচাপের মধ্যে।’’
বিরাট যোগ করেছেন, ‘‘রজত যেটা করেছে, সেটা বিশেষ একটা ব্যাপার। আমার তো মনে হয় না কেউ এই ইনিংসটাকে অবহেলা করতে পারে। সবার আগে, ওর ব্যাটিংয়ের ধরনটা বোঝা দরকার। আর প্রত্যেক ক্রিকেটারের উচিত ওর প্রশংসা করা।’’ যাঁকে নিয়ে এত হইচই, সেই পাটীদার আবার বিরাটকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘ধন্যবাদ বিরাট কোহলি। আমার উপরে বিশ্বাস ও আস্থা রাখার জন্য।’’
আরসিবির সামনে এ বার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রাজস্থান রয়্যালস। আজ, শুক্রবার, আমদাবাদে যে ম্যাচ জিততে পারলেই ফাইনালে চলে যাবেন বিরাটরা। আরসিবির প্রাক্তন অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘এলিমিনেটরের এই বাধাটা অতিক্রম করতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। এক দিন বাদে আমাদের লড়াই রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে। ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যেঝাঁপাতে হবে।’’
বিরাট বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের পাখির চোখ এখন শুধুই আইপিএল ট্রফি। বলেছেন, ‘‘আমরা সবাই যে ম্যাচের কথা ভেবে উত্তেজিত। এমনিতে আমরা গত কয়েক দিন যথেষ্ট ভাল ক্রিকেটও খেললাম। আশা করি শেষ ম্যাচ পর্যন্ত আমরা থাকব আর দারুণ একটা উৎসবের মধ্যে দিয়ে এ বারের আইপিএল অভিযান শেষ করতে পারব।’’
একইসঙ্গে বিরাট তাঁর দলের বোলারদেরও প্রশংসা করেছেন। বিশেষ করে শেষ দিকে হর্ষল পটেলের বোলিংয়ের। বলেছেন, ‘‘এই ম্যাচটায় বেশ কয়েক বার খুবই চাপ তৈরি হয়েছিল। আমি মনে করি, মাঝখানের ওভারে ওয়ানিয়া (ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গা) বেশ ভাল বোলিং করেছে। জসও (হেজ়্লউড) কম যায়নি। তিনটি উইকেট নেওয়া মুখের কথা নয়। সবচেয়ে বড় কথা, মাঝখানের দু’টি ওভার জসও ভাল বোলিং করেছে। আর হর্ষল সম্পর্কে একটা শব্দই আমার মাথায় আসছে। অবিশ্বাস্য!’’
আরসিবি অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসিও মুগ্ধ পাটীদারের ব্যাটিংয়ে। তিনি বলেছেন, ‘‘আজকের দিনটা আমার জীবনের একটা বিশেষ দিন। রজত যে ভাবে খেলল তাতে সত্যিই আনন্দে আকাশে উড়ছি। এই ম্যাচটা ছিল খুবই চাপের। তার পরেও ওর ব্যাটিং একটা কথাই প্রমাণ করছে— ওর মাথাটা খুব পরিষ্কার।’’
ডুপ্লেসি যোগ করেছেন, ‘‘যে ভাবে রজত আক্রমণ করল তাতে এটা পরিষ্কার যে, ওর হাতে সব ধরনের শট রয়েছে। যখনই আমরা কিছুটা চাপে পড়েছি, তখনই ও আক্রমণ করে সে চাপ কাটিয়ে দিয়েছে। এমনিতে যে কঠোর পরিশ্রম আজ দল করেছে, তাতে অবশ্যই আমাদের উৎসব করা উচিত।’’ যোগ করেন, ‘‘সবচেয়ে বড় ব্যাপার, আমাদের পুরো দলটাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছে। আমরা সত্যিই খুব খুব খুশি।’’
এই ম্যাচে তিন নম্বরে নেমে রজত তাঁর ইনিংস সাজান ১২টি বাউন্ডারি ও সাতটি ছক্কায়। তাঁর পাশাপাশি নজর কাড়েন হর্ষল পটেল। চার ওভার বল করে তিনি ২৫ রান দেন। ফিরিয়ে দেন মার্কাস স্টোয়নিসকে। ডুপ্লেসি দারুণ খুশি হর্ষলের মোক্ষম সময়ের কৃপণ বোলিংয়েও। বলেন, ‘‘আমাদের দলে ও-ই হচ্ছে তুরুপের তাস। তাই না? মারাত্মক চাপেও মাথা ঠান্ডা রাখে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy