মহড়া চলল গুজরাতের সুরেশ রায়না ও ব্রেন্ডন ম্যাকালামেরও।
যতক্ষণ নেটে ব্যাট করে গেলেন সুরেশ রায়না, একটা জ্যাকেট গায়ে চাপিয়ে রাখলেন। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা। যদিও গঙ্গার ফুরফুরে হাওয়ায় সন্ধ্যার ইডেনে একটা মায়াবী পরিবেশ তৈরি হয়, কিন্তু বৈশাখের শুরুতে নাইটদের শহরে ফুলহাতা ট্র্যাকসুট আপার চাপিয়ে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং করার দৃশ্য কেমন যেন অদ্ভুত।
উল্টো দিকের নেটে ইউসুফ পাঠান। মিনিট কুড়ি ব্যাটিং করার পর বেরিয়ে এসে মাঠে শুয়ে পড়লেন। দলের দু-তিনজন সাপোর্ট স্টাফ তাঁর দিকে এগিয়ে যেতে সবাইকে আস্বস্ত করে কিছুক্ষণ পরেই উঠে দাঁড়ালেন নাইটদের হার্ডহিটার। কিছুক্ষণের জন্য যেন তাঁর চোট নিয়ে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ জমতে শুরু করে দিয়েছিল কেকেআরের আকাশে। তা কেটে যেতে স্বস্তি ফিরে এল শিবিরে।
ও দিকে আবার রবীন্দ্র জাডেজা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে দাপিয়ে বেড়ানোর পর আইপিএলের জন্য চুল ও দাড়ির স্টাইলে বদল এনে ‘রাজপুত লুক’ আনলেও আইপিএলের তিন ম্যাচে তাঁর পারফরম্যান্সে রাজপুতের সেই ধার কোথায়? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে লিগ শুরুর আগে সপ্তাহ দুয়েকের বিশ্রামে কি তাঁর আগুন নিভে গিয়েছে? এ দিন প্র্যাকটিসে তাঁকে দেখলে অবশ্য এই প্রশ্নটা উঠতই না। জাড্ডু একই রকম ছটফটে। উড়িয়ে দিলেন ব্রেন্ডন ম্যাকালামের স্টাম্প। গৌতম গম্ভীর থেকে শুরু করে মণীশ পাণ্ডে, নাইটদের প্রায় সব ব্যাটসম্যানই যাঁকে সামলাতে হিমশিম খেলেন নেটে, ম্যাকালাম, দীনেশ কার্তিক, রায়নারা সেখানে কী করবেন, সেটাই প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: ধোনিকে সরানোটা ঠিক হয়নি: রায়না
ইডেনের বাইশ গজে আবার সবুজ রঙ স্পষ্ট। তার ওপর আবার এ দিন সন্ধেবেলাতেও দেখা গেল জল দেওয়া হচ্ছে পিচে। শুক্রবার খেলা শুরুর আগে কি এই ঘাস ছেঁটে দেওয়া হবে? খবর নিয়ে জানা গেল, তেমন সম্ভাবনা কম। এমন উইকেট দেখার পরই বোধহয় কোল্টার নাইল, উমেশ যাদব, ট্রেন্ট বোল্টরা টগবগ করে ফুটছেন।
ম্যাচের আগে ইডেনে প্র্যাকটিসে গৌতম গম্ভীর।
নেটে রায়না, ম্যাকালামদের বাড়তি ঘাম ঝরানোও হয়তো একই কারণে। ইডেনের সবুজ উইকেটে বোল্টদের সামলাতে তো তাঁদেরই বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে হবে। তাঁদের পেস বিভাগে রয়েছেন ধবল কুলকার্নি, বাসিল থাম্পি, অ্যান্ড্রু টাইরা। বিরাট কোহালি ও ক্রিস গেলের হাতে দু’দিন আগে তুমুল মার খেয়ে যাঁদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে এসে ঠেকেছে। ইডেনের বাইশ গজ দর্শনের পর রায়নার দলের এই পেসারদের মুখে অবশ্য স্বস্তির ছাপ দেখা গেল।
চিন্নাস্বামীতে সে দিনের সেই রান-ঝড় এখন নাইটদের শিবিরেরও আলোচনার বিষয়। ইউসুফ পাঠান তো বলেই দিলেন, ‘‘একজন ক্ল্যাসিক ব্যাটসম্যান, অন্যজন হার্ড হিটার। গেল আর কোহালি যখন, এ রকম ইনিংস খেলে, তখন শুধু আনন্দ পাওয়া যায়, তা নয়, অনেক কিছু শেখাও যায়। রবিবার ওদের তাড়াতাড়ি থামাতে হবে।’’ অর্থাৎ রবিবারের ম্যাচের ভাবনাও ঢুকে পড়েছে নাইট শিবিরে।
অবশ্য ফ্ল্যাশ ব্যাকে কোটলার স্মৃতিও ফিরিয়ে এনে এ দিন ইউসুফ সংকল্প করলেন, ‘‘অত ভাল ব্যাটিং করে শেষ পর্যন্ত ও ভাবে আউট হওয়াটা অপরাধ। পরের বার ম্যাচটা দু-এক ওভার বাকি রেখেই শেষ করে আসব।’’ এমন গর্জনের মাঝেও অবশ্য রায়নাদের কম গুরুত্ব দেওয়ার ভুল করতে রাজি নন পাঠান নাইট। বললেন, ‘‘এই স্তরে কোনও দলকেই কম গুরুত্ব দেওয়া চলে না। ওদের ব্রেন্ডন ম্যাকালাম আছে। আমাদের বিরুদ্ধে ওর প্রচুর রান আছে। তবে আশা করি কাল ও রান পাবে না।’’
শুক্রবার ইডেনের লড়াইয়ের একটা হিন্দি নামকরণ করা যায় এ ভাবে, ‘গুজরাতি শেরোঁ কি দহর’ বনাম ‘দশ কি দহর’।
ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy