মুখোমুখি: আবার একে অন্যের বিরুদ্ধে নামছেন গৌতম গম্ভীর, বিরাট কোহালি। আজ, রবিবার লড়াই বেঙ্গালুরু-তে। ফাইল চিত্র
বারবার এমন ম্যাচ দেখা যাবে না আইপিএলে যে, বেঙ্গালুরুতে খেলতে গিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আর সেই ম্যাচ বিরাট কোহালিদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়মরক্ষার। কে জানত, অসাধারণ এক ক্রিকেট যাত্রা চলতে চলতেই এমন অন্ধকার আসতে পারে কোহালির ভরা ক্রিকেট সংসারে। একের পর এক হারছে তাঁর দল। একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ তাঁদের মহাতারকা ব্যাটিং!
বলা হতো, আরসিবি হচ্ছে ব্যাটিং পাওয়ারহাউজ। তাদেরই এখন এমন অবস্থা যে, হেলেফেলা করার মতো টার্গেট স্কোরেও পৌঁছতে পারছে না। শুক্রবার রাতেও কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবকে মাত্র ১৩৮ রানের মধ্যে আটকে রেখে ম্যাচ জিততে পারেননি কোহালিরা। স্বয়ং অধিনায়ক হতাশ ভাবে বলে গেলেন, ‘‘পর পর এত ম্যাচ কখনও হারিনি। এমন ব্যাটিং বিপর্যয় জীবনে কখনও দেখিনি।’’ কোহালি মানেই হার-না-মানা এক ক্রিকেটার আর অধিনায়ক। তাঁর ক্রিকেট গর্বে আঘাত তো লাগছেই।
প্রত্যেক ম্যাচেই অলআউট হয়ে যাচ্ছে আরসিবি। যা দেখে কলকাতা বোলাররা নিশ্চয়ই জিভ চাটছেন। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১৩৮ রান তাড়া করতে নেমে কোহালির দল ১৯ ওভারেই ১১৯ রানে শেষ হয়ে গেল। সর্বোচ্চ রান মনদীপ সিংহের ৪০। কোহালি নিজে করলেন ৬। ক্রিস গেল ফের ০। ডিভিলিয়ার্স ১০। কোহালিদের বিপর্যয় যে কোনও এক কেকেআর টিমের বিরুদ্ধে ইডেনে শুরু হয়েছিল, সেটা মনে রাখার জন্য ইতিহাসবিদ হওয়ার দরকার নেই।
আরও পড়ুন: হ্যাটট্রিকের ধাক্কায় চাপে কেকেআর
এমনিতেই গৌতম গম্ভীর বনাম বিরাট কোহালি দ্বৈরথ বরাবর খুব আকর্ষণীয় এক লড়াই। দু’জনেই দিল্লির ছেলে। দু’জনেই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করেন। তার উপর দু’জনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। দিল্লির হয়ে খেলার সময়কার নানা কাহিনি শোনা যায়। আর একটি তথ্য, ভারতীয় দলের নেতৃত্বের হাইওয়েতে কোহালি ঢুকে পড়েন গম্ভীরকে সরিয়েই। এ নিয়ে নানা ‘গসিপ’ চালু আছে ক্রিকেট মহলে যে, কী ভাবে ধোনির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে গম্ভীর হারিয়ে গেলেন ভারতীয় দলের মূলস্রোত থেকে। আর যে সময়টা থেকে পতন শুরু গম্ভীরের, তখন থেকে উত্থান শুরু কোহালির।
গম্ভীরদের জন্য যদিও যথেষ্ট মোটিভেশন থাকছে। প্লে-অফের দৌড় জমিয়ে দিয়েছে পুণে সুপারজায়ান্ট। ডেভিড ওয়ার্নারদের হারানোর পরে পুণেই এখন টেবলে দুই নম্বরে। নাইট রাইডার্স নেমে গিয়েছে তিনে। আজ, রবিবার বেঙ্গালুরুতে কার্যত নুইয়ে পড়া একটা টিম গম্ভীররা পাচ্ছেন সামনে। যেটাকে দেখে মনেই হবে না যে, এই টিমের নেতার নাম বিরাট কোহালি!
তাঁদের হারিয়ে দিতে পারলেই আইপিএল টেবলে গম্ভীরদের রক্ত চলাচল আবার বেড়ে যাবে। তখন পুণেকে সরিয়ে আবার তাঁরা দু’নম্বরে উঠে আসতে পারেন। পুণের নেট রানরেট মাইনাসে। নাইটদের নেট রানরেট এখনও প্লাসে। সেটা বড় সুবিধে প্লে-অফের দৌড়ে।
আবার কারও কারও আশঙ্কা হচ্ছে, আরসিবি-র এমন হেভিওয়েট টিম। অধিনায়কের নাম বিরাট কোহালি। একটা তো মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টাই করবেন তাঁরা, যাতে খুব লজ্জিত হয়ে শেষ না করতে হয়। সে রকম একটা ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচ না রবিবারই উপস্থিত হয়।
দিল্লির দুই তেজিয়ান ক্রিকেটার, দুই হার-না-মানা অধিনায়ক। যত বার মুখোমুখি হয়েছেন, ঠোকাঠুকি হয়ে বারুদ উৎপন্ন হয়েছে। এক জন ফেভারিট হয়েও আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছেন। তাঁর— কোহালির পড়ে আছে মান।
অন্য জন ভারতীয় দলের গ্ল্যামার থেকে হারিয়ে গিয়েও, ফেভারিটদের তালিকায় না থেকেও লড়াকু মানসিকতাকে অস্ত্র করে প্লে-অফের হাইওয়ের দিকে এগিয়ে চলেছেন। তাঁর— গম্ভীরের আছে জান।
রবিবারের আসল ম্যাচ ওটাই। গম্ভীরের জান বনাম কোহালির মান। একেবারে বারুদ উৎপন্ন হবে না, কে গ্যারান্টি দিয়ে বলবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy