ইনিংসের প্রথম ১৫ বলে ২ উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খেয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাদের ইনিংসের প্রথম ১৩ বলের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে আরও বড় ধাক্কা খেল। পর পর তিন বিস্ফোরক ব্যাটারকে হারাল প্যাট কামিন্সের দল। তাতেই নির্ধারিত হয়ে গেল বৃহস্পতিবার ইডেনে কলকাতা এবং হায়দরাবাদ ম্যাচের ফল। চতুর্থ ম্যাচে দ্বিতীয় জয় পেলেন অজিঙ্ক রাহানেরা।
প্রথম ব্যাট করে কেকেআর করে ৬ উইকেটে ২০০ রান। জবাবে হায়দরাবাদের ইনিংস শেষ হল ১৬.৪ ওভারে ১২০ রানে। ঘরের মাঠে ৮০ রানে জয় পেল কলকাতা। গত বছর আইপিএল ফাইনালে কেকেআরের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি হায়দরাবাদ। একতরফা ভাবে ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কলকাতা। সেই হারের বদলা নিতে পারল না হায়দরাবাদ।
টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন কামিন্স। ইডেনের ঘরের মাঠের ২২ গজে প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পায় কেকেআর। কিন্তু শুরুটা প্রত্যাশামতো করতে পারেননি দুই ওপেনার। কুইন্টন ডি’কক (১) এবং সুনীল নারাইন (৭) ব্যর্থ হলেন। এ বার বোধহয় ওপেনিং জুটি নিয়ে ভাবার সময় হয়ে গিয়েছে চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের। টানা তিন ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থ নারাইন। ১৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়ার পর পরিস্থিতি সামলান দুই মুম্বইকর। অধিনায়ক রাহানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অঙ্গকৃশ রঘুবংশী। তাঁদের জুটিতে ওঠে ৮১ রান। রাহানের ব্যাট থেকে এল ২৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। ১টি চার এবং ৪টি ছয় মারেন। ধারাবাহিক ভাবে রানের মধ্যে থাকা রঘুবংশী এ দিনও দলকে ভরসা দিলেন। তাঁর ৩২ বলে ৫০ রানের ইনিংসে ছিল ৫টি চার এবং ২টি ছক্কা।

এ দিনের ম্যাচ থেকে কেকেআরের প্রাপ্তি দুই মিডল অর্ডার ব্যাটারের ফর্মে ফেরা। কলকাতার ব্যাটিং অর্ডারের দুই গুরুত্বপূর্ণ মুখ বেঙ্কটেশ আয়ার এবং রিঙ্কু সিংহ রান পাচ্ছিলেন না। এ দিন দু’জনেই রান করলেন। দলকে পৌঁছে দিলেন ভাল জায়গায়। ২৩.৭৫ কোটির বেঙ্কটেশের ব্যাট থেকে এল ২৯ বলে ৬০ রানের আগ্রাসী ইনিংস। ৭টি চার এবং ৩টি ছক্কা মারলেন। রিঙ্কু অপরাজিত থাকলেন ১৭ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে। মারলেন ৪টি চার এবং ১টি ছয়। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে তাঁরা তুললেন ৯১ রান। ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হলেন আন্দ্রে রাসেল (১)।
হায়দরাবাদের কোনও বোলারই খুব ভাল বল করতে পারেননি। তার মধ্যেও কিছুটা ভাল বল করলেন মহম্মদ শামি। ২৯ রানে ১ উইকেট বাংলার জোরে বোলারের। জ়িশান আনসারি ২৫ রানে ১ উইকেট নিলেন। ৪৪ রানে ১ উইকেট কামিন্সের। হর্ষল পটেল ১ উইকেট নিলেন ৪৩ রান খরচ করে। ৪ রানে ১ উইকেট কামিন্দু মেন্ডিসের। বিষ্ময়কর ভাবে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডারকে এক ওভারের বেশি ব্যবহার করলেন না কামিন্স।
জয়ের জন্য ২০১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। পর পর সাজঘরে ফিরে যান ট্রেভিস হেড (৪), অভিষেক শর্মা (২) এবং ঈশান কিশন (২)। বৈভব অরোরা এবং হর্ষিত রানার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ইডেনের মন্থর ২২ গজে সমস্যায় পড়েন হায়দরাবাদের তিন বিস্ফোরক ব্যাটার। ৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর অন্তত একটা বড় রানের জুটি দরকার ছিল হায়দরাবাদের। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সেই জুটি তৈরি করতে পারেনি কামিন্সের দল। নীতীশ কুমার রেড্ডি (১৫ বলে ১৯), মেন্ডিস (২০ বলে ২৭), অনিকেত বর্মারা (৬ বলে ৬) নিয়মিত বিরতিতে আউট হওয়ায় দানা বাঁধতে পারেনি সফরকারীদের ইনিংস। কোনও সময়ই চাপমুক্ত হতে পারেনি তারা।
কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক-ব্যাটারও দলকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারলেন না। বৈভবের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করলেন ২১ বলে ৩৩। মারলেন দু’টি করে চার এবং ছয়। যা পরিস্থিতির চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট ছিল না। কামিন্সও (১৫ বলে ১৪) প্রয়োজনের সময় পারলেন না ব্যাট হাতে দলকে সাহায্য করতে। কেকেআরের সব বোলারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে দিশাহারা দেখিয়েছে হায়দরাবাদের ব্যাটারদের। সকলেই উইকেট অনুযায়ী বল করেছেন। হায়দরাবাদের পরের দিকের বাকি ব্যাটারদের তেমন আর কিছু করার ছিল না। তাঁরা পারেনওনি।
আরও পড়ুন:
কেকেআর বোলারদের মধ্যে এ দিন সফলতম বরুণ চক্রবর্তী ২২ রানে ৩ উইকেট নিলেন। বৈভব ৩ উইকেট নিলেন ২৯ রান খরচ করে। ২১ রানে ২ উইকেট নিলেন রাসেল। ১৫ রানে ১ উইকেট হর্ষিতের। ৩০ রানে ১ উইকেট নারাইনের।
- চলতি বছর আইপিএলের ১৮তম বর্ষ। ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয়েছিল এই প্রতিযোগিতা। এখন এই প্রতিযোগিতায় খেলে মোট ১০টি দল। তাদের মধ্যেই চলে ভারতসেরা হওয়ার লড়াই।
- গত বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। তিন বার এই ট্রফি জিতেছে তারা। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংস পাঁচ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, দিল্লি ক্যাপিটালস, পঞ্জাব কিংস ও লখনউ সুপার জায়ান্টস এখনও পর্যন্ত এক বারও আইপিএল জিততে পারেনি।
-
১৭:০৩
গোয়েন্কার লখনউয়ে যোগ দিচ্ছেন ১৫০ কিলোমিটারে বল করা বোলার, কবে খেলবেন প্রথম ম্যাচ? -
১৬:৪৮
পার পেলেন না অক্ষরও, আইপিএলে ষষ্ঠ অধিনায়ক হিসাবে শাস্তি পেলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের নেতা -
১৪:০৫
লখনউও মোহনবাগানময়! পন্থদের ম্যাচের আগে গোয়েন্কাকে অভ্যর্থনা সবুজ-মেরুন রঙে -
১৩:২৭
‘রিটায়ার্ড আউট’ নিয়ে দুঃখ হচ্ছে? দিল্লির বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে মুখ খুললেন তিলক -
১২:৫৭
বিরাটের ব্যাট ‘চুরি’! হন্যে হয়ে খুঁজলেন কোহলি, উদ্ধার হল সতীর্থের ব্যাগ থেকে