শাকিব আল হাসান। —ফাইল চিত্র।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর ঘোষণা করলেন শাকিব আল হাসান। দেশের হয়ে আর ছোট ফরম্যাটে দেখা যাবে না তাঁকে। ২০০৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যে দু’জন ক্রিকেটার খেলেছেন তাঁদের মধ্যে এক জন শাকিব। অপর ক্রিকেটার ভারতের রোহিত শর্মা চলতি বছর বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেই অবসর নিয়েছেন। এ বার অবসর নিলেন শাকিব। অর্থাৎ, রোহিতের মতোই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কুড়ি-বিশের ফরম্যাটে শাকিবের শেষ সিরিজ় হয়ে গেল।
ভারতের বিরুদ্ধে কানপুরে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামার আগে সাংবাদিকদের নিজের অবসরের কথা জানান শাকিব। শুধু টি-টোয়েন্টি নয়, বাকি দুই ফরম্যাটে কবে অবসর নেবেন সে কথাও জানিয়েছেন তিনি। তার পরেই জল্পনা শুরু হয়েছে, কানপুরে কি নিজের শেষ টেস্টও খেলে ফেলবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটার?
টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের প্রসঙ্গে শাকিব বলেন, “আমার মনে হয় সরে যাওয়ার এটাই সঠিক সময়। নতুনদের সুযোগ করে দিতে হবে। টি-টোয়েন্টি নিয়ে বোর্ডের সকলের সঙ্গে, নির্বাচকদের সঙ্গে ও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আপাতত পরের যে সিরিজগুলো আছে, সেখানে নতুন খেলোয়াড় আসুক। ওদের সুযোগ দেওয়া হোক।”
তবে সেই সঙ্গে অবসর ভেঙে ফিরে আসারও একটা সম্ভাবনা রেখে দিয়েছেন শাকিব। তিনি বলেন, “আমি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো খেলতে থাকি। ছয় মাস, এক বছর পরে যদি বিসিবি মনে করে আমি পারফর্ম করছি এবং ফিট আছি, তা হলে আমি আবার ভাবতে পারি। কিন্তু এই মুহূর্তে নিজেকে টি-টোয়েন্টিতে দেখছি না।”
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে দেশে ফেরেননি শাকিব। বাইরেই রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে খুনের মামলা চলছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে গিয়ে শাকিব খেলতে পারবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, “আমি মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলতে চাই। বাংলাদেশে যাওয়া নিয়ে আমি চিন্তা করছি না। আমার চিন্তা ওখান থেকে বেরিয়ে আসা নিয়ে। আমি এই বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। ওরা চেষ্টা করছে। তা না হলে কানপুরই আমার শেষ টেস্ট হবে।” যদি শাকিব বাংলাদেশে গিয়ে খেলতে না পারেন, তা হলে কানপুর টেস্টই তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক লাল বলের ম্যাচ হবে। শাকিব আরও জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই হবে তাঁর শেষ এক দিনের সিরিজ়।
শাকিব-সহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা হয়েছে। যদিও তাতে দেশে ফিরলে শাকিব গ্রেফতার হবেন না বলেই মনে করছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “শাকিবের বিরুদ্ধে তো একটা মামলা হয়েছে। আমি আশা করছি ও দেশে ফিরলে গ্রেফতার হবে না। আমি জানতে পেরেছি পুলিশকে বলা হয়েছে যতটা সম্ভব সহানুভূতি দেখাতে।” আশা করলেও শাকিবের বিরুদ্ধে যে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না সে বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারেননি আসিফ।
শাকিবকে দেশে ফেরার বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্তা শাহরিয়ার নাফিস। তিনি বলেন, “মুখ্য উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা ও ক্রীড়া উপদেষ্টা নিজেদের বক্তব্যে শাকিবের বিষয়টা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, কাউকে বেআইনি ভাবে হেনস্থা করা হবে না। চোট বা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও সমস্যা না থাকলে শাকিবের বাংলাদেশের মাটিতে খেলতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ও দেশের মাটিতে খেলতেই পারে।”
ক্রিকেটার হওয়ার পাশাপাশি একটা রাজনৈতিক পরিচয়ও রয়েছে শাকিবের। হাসিনার দল আওয়ামি লিগের সাংসদ তিনি। তাই তাঁর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ রয়েছে বাংলাদেশের জনতার। আন্দোলনের চাপে হাসিনা যখন পদত্যাগের পরে দেশ ছাড়ছেন তখন কানাডায় লিগ ক্রিকেট খেলছিলেন শাকিব। সেখান থেকে সরাসরি পাকিস্তানে খেলতে যান তিনি। সিরিজ় চলাকালীনই শাকিবের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর কথাও হয়েছিল। কিন্তু শাকিবের পাশে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পরে পাকিস্তান থেকে আবার ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলতে যান শাকিব। সেখান থেকে ভারতে আসেন। ভারতে টেস্ট সিরিজ়ের মাঝেই অবসরের কথা ঘোষণা করলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy