অনুশীলনে বাংলাদেশের তামিম ইকবাল। ছবি: এএফপি।
প্রথম সেশনে শুরুটা দারুণ করেছিল। শেষটাও মন্দ হল না। মাঝের সেশনটায় লড়াই করেছে শ্রীলঙ্কা। সব মিলিয়ে দারুণ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে শততম টেস্টের প্রথম দিনের শেষে এগিয়ে মুশফিকুর রহিমের দল।শেষ বিকেলের কমে আসা আলোয় শ্রীলঙ্কা খেলতে পেরেছে ৮৩.১ ওভার। আর তাতে তাদের সংগ্রহ সাত উইকেটে ২৩৮ রান। ৮৬ রান করে ক্রিজে রয়েছেন দীনেশ চান্দিমাল আর ১৮ রান নিয়ে রঙ্গনা হেরাথ। বাংলাদেশের বোলার মুস্তাফিজ ও মিরাজ পেয়েছেন দু’টি করে উইকেট। শুভাশিস, তাইজুল ও সাকিব পেয়েছেন একটি করে।
দলে চারটি পরিবর্তন করে শততম টেস্ট খেলতে নামেম মুশফিকবাহিনী। টস হেরে ফিল্ডিং জুটেছিল ভাগ্যে।
শুরু থেকেই অসাধারণ বোলিং করছিলেন বাংলাদেশের দুই পেসার। লাইন-লেনথ ছিল দারুণ, শরীরি ভাষা চনমনে ও উজ্জীবিত। বিশেষ করে মুস্তাফিজুর রহমান। শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার ধুঁকছিলেন বেশ। উইকেট পাওয়া মনে হচ্ছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার। সেটি এল মুস্তাফিজের হাত ধরে।
বেশ কয়েকবার জোড়াল আবেদন থেকে বেঁচেছেন দুই ওপেনার। করুনারত্নে আউট হয়েছেন বাজে বলে। ব্যাটের কানায় লেগে গালিতে উড়ে যায় বল। গালিতে দারুণ ক্যাচ নেন মিরাজ।শ্রীলঙ্কার রান তখন নবম ওভারে ১ উইকেটে ১৩।
শুরুর ধাক্কার পর একটি জুটি গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন দিনেশ চান্দিমাল ও আসেলা গুনারাত্নে। লাঞ্চের আগে সেই প্রতিরোধেও ভাঙন। গুনারতত্নেকে ফিরিয়ে ৩৫ রানের জুটি ভাঙলেন শুভাশিস।
প্রথম স্পেলে দারুণ তিনটি ওভারের পর লাঞ্চের ঠিক আগের ওভারে শুভাশিসকে আক্রমণে ফেরান মুশফিক। চতুর্থ বলটি ফুল লেনথ, লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লু গুনারত্নে। গলে বাংলাদেশকে ভোগানো ব্যাটসম্যান ফিরলেন ১৩ রানে।
এরপর মিরাজের দারুণ দুটি ডেলিভারিতে ফেরেন আগের টেস্টের দুই সেঞ্চুরিয়ান কুসল মেন্ডিস ও উপুল থরাঙ্গা। লাঞ্চের আগে বিদায় গুনারত্নের। শততম টেস্টের শুরুটা এর চেয়ে ভাল কিছু হয়ত কল্পনাও করতে পারত না বাংলাদেশ।
লাঞ্চের সময় শ্রীলঙ্কার রান ৪ উইকেটে ৭০। চান্দিমাল অপরাজিত ২৭ রানে।
গুনারত্নের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা শেষ হয়েছে লাঞ্চের ঠিক আগে। লাঞ্চের পর ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে সেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দীনেশ চান্দিমাল। বিরতির পর প্রথম ঘণ্টায় আর উইকেট হারায়নি তারা।
রিভিউ নিয়ে টিকে ছিলেন চান্দিমাল। লাঞ্চের পর প্রথম জল পানের বিরতিতে শ্রীলঙ্কার রান ৪ উইকেটে ১১৩।
টি ব্রেকের পর তাইজুলের বলে চান্দিমালের সুইপে বল উঠে গেল ওপরে। সীমানা থেকে অনেকটা দৌঁড়ে এসে সামনে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নিলেন মিরাজ। বাংলাদেশের উদযাপন থামল খানিক পরই। ক্যাচ হয়েছে কিনা, তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে জানতে চাইলেন মাঠের আম্পায়ার। আলিম দারের সফট সিগন্যাল ছিল ‘নট আউট’।
আরও খবর: ঐতিহাসিক দিনেই আজ ইতিহাস ছুঁল বাংলাদেশ ক্রিকেট
বার বার টিভি রিপ্লে দেখার পর টিভি আম্পায়ারও সায় দিলেন মাঠের আম্পায়ারের সঙ্গে। রিপ্লেতে অবশ্য পরিষ্কার বোঝার উপায় ছিল না। বলটা আটকে যায় মিরাজের আঙুলের সামনের দিকে। হাতে জমার আগে বল মাটি ছুঁয়েছিল কিনা, স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না। হয়ত শেষ পর্যন্ত বেনিফিট অব ডাউট পেয়েছেন চান্দিমাল।
চান্দিমালের রান তখন ৪৬। পরের ওভারেই স্পর্শ করেন অর্ধশতক। শ্রীলঙ্কার রান ৪ উইকেটে ১৩৬।
আগের ওভারে চান্দিমালের উইকেট পেয়েও পাননি তাইজুল। তবে জুটি ভাঙল তার হাত ধরেই। শর্ট বল ভেবে লেংথ বলটি পুল করার চেষ্টা করেছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। কিন্তু ততটা শর্ট ঠিল না বলটি। একটু স্কিড করে বল আঘাত করে স্টাম্পে।
৩৪ রানে ফিরলেন ধনঞ্জয়া। ভাঙল ৬৬ রানের জুটি। শ্রীলঙ্কার রান ৫ উইকেটে ১৩৬।
ধনঞ্জয়াকে হারানোর পর চা বিরতি পর্যন্ত আর কোনো উইকেট হারায়নি শ্রীলঙ্কা। প্রথম সেশনের তুলনায় অনেক ভালো কেটেছে তাদের দ্বিতীয় সেশন। এই সেশনে পড়েছে কেবল একটি উইকেটই।
দ্বিতীয় সেশনে রান উঠেছে ৭৯। শ্রীলঙ্কার রান ৫ উইকেটে ১৪৯।
রান আটকাতে আর জুটি ভাঙতে কৌশল বদলালেন সাকিব। ওভার দা উইকেট থেকে রাউন্ড দা উইকেট, লেগ সাইডে ফিল্ডার ৬ জন। সেটি দেখেই কিনা, লেগ স্টাম্পের বল রিভার্স সুইপ করে অফ সাইডে খেলতে গেলেন নিরোশান ডিকভেলা। শুনলেন একটি শব্দ, স্টাম্পে বলের আঘাত!
সাকিবের প্রথম উইকেট। চা বিরতির পর বাংলাদেশের প্রথম সাফল্য। ভাঙল ৪৪ রানের জুটি। ডিকভেলা ফিরলেন ৩৪ রানে।
শ্রীলঙ্কার রান ৬ উইকেটে ১৮০। চান্দিমাল অপরাজিত ৬০।
এর পর আবারো আক্রমণে ফিরে প্রথম ওভারেই মুস্তাফিজ পেলেন সাফল্য। একটু আগেই দারুণ এক শটে তাইজুলকে ছক্কা মেরেছিলেন দিলরুয়ান পেরেরা। মুস্তাফিজের বাইরের বলটিও মারতে গেলেন। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল স্লিপে। সৌম্য সরকার মাথার ওপর থেকে হাতে জমালেন দারুণ ক্যাচ। ৯ রানে ফিরলেন পেরেরা।
বাংলাদেশ দলে চার পরিবর্তনে লিটন দাসকে কেড়ে নিয়েছে চোট। মাহমুদউল্লাহর বাইরে থাকার ঘোষণাও এসেছিল আগে। রাখা হয়নি মুমিনুল হক ও তাসকিন আহমেদকে। দলে ফিরেছেন ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমান, তাইজুল ইসলাম। অভিষেক হচ্ছে মোসাদ্দেক হোসেনের।
শ্রীলঙ্কা দলে পরিবর্তন একটি। পেসার লাহিরু কুমারার জায়গায় আরও একজন ব্যাটসম্যান বাড়িয়েছে তারা। দলে ফিরেছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। মানে লঙ্কানরা খেলছে এক পেসার নিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy