স্মৃতি: ১৯৯৮ সালে প্রথম প্রিমিয়ার লিগ খেতাব জিতে ওয়েঙ্গার। ফাইল চিত্র
শেষ পর্যন্ত ঘোষণাটা করেই ফেললেন তিনি। যাঁর হাত ধরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে একের পর এক যুগান্তকারি পরিবর্তন দেখেছে বিশ্ব। যিনি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় লিগে পেশাদারি মানসিকতার আমদানি করেছিলেন বলা হয়। ইপিএলের প্রথম বিদেশি ম্যানেজার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির গড়া আর্সেন ওয়েঙ্গার চলতি মরসুমের শেষেই ম্যানেজারের পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। ২২ বছর আর্সেনালের ম্যানেজারের পদ সামলানো ওয়েঙ্গারের যে ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ইপিএলের একটা যুগের অবসান হয়ে গেল।
ফরাসি ম্যানেজার শুক্রবার ঘোষণা করেন, ‘‘ক্লাবের সঙ্গে আলোচনার পরে অনেক ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিলাম। এটাই সঠিক সময় মরসুমের শেষে ম্যানেজারের পদ থেকে সরে যাওয়ার।’’ ম্যানেজার হিসেবে ৬৮ বছর বয়সি ওয়েঙ্গার তিনটি প্রিমিয়ার লিগ খেতাব জিতেছেন। তাঁর আমলেই ২০০৩-০৪ মরসুমে অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়েছিল আর্সেনাল।
তবে গত কয়েক বছর ধরেই তাঁর উপরে দায়িত্ব ছাড়ার প্রবল চাপ ছিল। তার প্রধান কারণ, আর্সেনাল শেষ বার প্রিমিয়ার লিগ খেতাব জিতেছে ১৪ বছর আগে। পাশাপাশি টানা দ্বিতীয় বার আর্সেনাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জন করতে না পারার আতঙ্ক।
গত প্রায় আড়াই দশকে ওয়েঙ্গারের প্রভাব এতটাই ছিল আর্সেনালে যে তাঁর আর ক্লাবের নাম সমার্থক হয়ে উঠেছিল। ১৯৯৬ সালে তিনি যখন জাপানের অখ্যাত এক ক্লাব থেকে ইংল্যান্ডে আসেন তাঁকে কেউই চিনত না। অর্থনীতিতে ডিগ্রি ছিল বলে অনেকেই তাঁকে ‘অধ্যাপক’ বলে ডাকতেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরেই তিনি দলে যে পরিবর্তনগুলো এনেছিলেন তার মধ্যে পেশাদার মানসিকতার ছোঁয়া ছিল। যেমন ফুটবলারদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, ম্যাচে নামার আগে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া। যে বিষয়গুলোর তখনও ইংল্যান্ডের ফুটবলে ভীষণ ভাবে অভাব ছিল।
ওয়েঙ্গারকে এ ভাবে সরে যেতে হচ্ছে দেখে অনেকেই হতাশ। তার কোচিং জীবনের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জোসে মোরিনহোও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ওয়েঙ্গারকে। তিনি বলেছেন, আর্সেনালের ম্যানেজার হিসেবে ওয়েঙ্গার যা অর্জন করেছেন তার জন্য বিরাট সম্মান তাঁর প্রাপ্য। ফুটবল বিশ্বের ‘দ্য স্পেশাল ওয়ান’-এর আশা আর্সেনালের ম্যানেজারের দায়িত্ব ছাড়লেও ফুটবল থেকে অবসর নেবেন না ফরাসি কোচ।
২০০৪ সালে মোরিনহো চেলসির ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মোরিনহোর সঙ্গে তাঁর তীব্র রেষারেষি দেখেছে বিশ্ব। শুক্রবার অবশ্য পর্তুগিজ কোচ বলে দেন, ‘‘যদি উনি খুশি থাকেন, আমিও খুশি। যদি উনি দুঃখে থাকেন তা হলে আমিও তাই। আমি সব সময় আমার প্রতিপক্ষের জন্য সেরাটাই চেয়ে এসেছি। তাই আবার বলছি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে যদি উনি খুশি হন, জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ে পা রাখতে চান তা হলে আমি সত্যিই খুশি হব ওঁর জন্য। আশা করি উনি ফুটবল থেকে অবসর নেবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy