Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Embryo

শুক্রাণু-ডিম্বাণু ছাড়াই পরীক্ষাগারে তৈরি হল ভ্রূণ!  

নীতিগত দিক থেকে অবশ্য নানা কথা উঠেছে। উঠেছে কৃত্রিম ভাবে মানুষ সৃষ্টি এবং একই মানুষের অনেকগুলো প্রতিরূপ তৈরির বিপদের কথা। তেমনই ভিন্নমত রয়েছে ভ্রূণের উপরে ওষুধ পরীক্ষা নিয়েও।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ০২:৫২
Share: Save:

শুক্রাণু নেই, ডিম্বাণুও নেই। ফলে নিষেকও ঘটেনি। তা সত্ত্বেও তৈরি হয়ে গিয়েছে ভ্রূণের প্রাথমিক চেহারা। ইঁদুরের শরীর থেকে দু’ধরনের স্টেম সেল সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারের পাত্রে এই কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের মাস্ত্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা।

পুরোপুরি সফল হয়নি গবেষণা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে সাফল্য এলে বিভিন্ন ওষুধ পরীক্ষার কাজটি আরও মসৃণ ভাবে করা যাবে। বন্ধ্যত্বের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও একটা দিক খুলে যেতে পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, সব ঠিকঠাক চললে এই পথেই আগামী বছর তিনেকের মধ্যে ইঁদুরের পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তৈরি করা হয়তো সম্ভব।

ফের উঠছে পুরনো প্রশ্নটা। যে প্রসঙ্গে চর্চা চলছে নয়ের দশকে ক্লোন-ভেড়া ‘ডলি’-র জন্মের সময় থেকেই। শুক্রাণু-ডিম্বাণু ছাড়া ইঁদুরের ভ্রূণ যদি সত্যিই তৈরি করা যায়, তা হলে পরীক্ষাগারে মানুষের ভ্রূণ তৈরিও কি সম্ভব? বিজ্ঞানীরা সেই সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি। তবে বলেছেন, ব্যাপারটা অন্তত আগামী দু’দশকের মধ্যে ঘটছে না।

নীতিগত দিক থেকে অবশ্য নানা কথা উঠেছে। উঠেছে কৃত্রিম ভাবে মানুষ সৃষ্টি এবং একই মানুষের অনেকগুলো প্রতিরূপ তৈরির বিপদের কথা। তেমনই ভিন্নমত রয়েছে ভ্রূণের উপরে ওষুধ পরীক্ষা নিয়েও।

ইঁদুরের শরীর থেকে একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের দু’ধরনের স্টেম সেল নিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এই জাতীয় কোষগুলি থেকে সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি সম্ভব। দেখা যায়, ওই কোষগুলি মিলিত হয়ে তৈরি করেছে ভ্রূণেরই একটি প্রাথমিক চেহারা। জীববিদ্যার ভাষায় যাকে বলে ‘ব্লাস্টোসিস্ট’। সেই ব্লাস্টোসিস্টকে স্ত্রী-ইঁদুরের গর্ভে স্থাপন করা হয়। শুক্রাণু-ডিম্বাণুর নিষেকে তৈরি সাড়ে তিন দিন বয়সি একটি স্বাভাবিক ভ্রূণ থাকলে মাতৃজঠরে যা যা পরিবর্তন ঘটার কথা, এ ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনই ঘটেছিল প্রাথমিক ভাবে। তবে পুরোপুরি সফল হয়নি সেই প্রতিস্থাপন। তবু তাতেই আশার আলো দেখেছেন গবেষকেরা।

গবেষক দলের প্রধান, মাস্ত্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকোলাস রিভরন বলেছেন, ‘‘প্রায় সত্যিকারের ব্লাস্টোসিস্টের মতোই হচ্ছিল ব্যাপারটা। যদিও কোষগুলো খুব একটা সুবিন্যস্ত ছিল না। আশা করছি, আগামী তিন বছরে সেটা তৈরি করতে পারব। এই প্রথম গবেষণাগারে স্টেম সেল থেকে ভ্রূণ, নাড়ি— সবটাই তৈরির পথে হেঁটেছিলাম আমরা।’’ সাফল্য এলে ভ্রূণের উপরে ওষুধ পরীক্ষার কাজে সুবিধে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে নিকোলাস সাফ বলেছেন, ‘‘এই পদ্ধতি মানুষের উপরে প্রয়োগে আমার বিশ্বাস নেই। মানুষ ক্লোন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’’

অর্থাৎ, আপাতত মনুষ্য-যোগের কোনও সম্ভাবনা নেই কৃত্রিম প্রাণসৃষ্টির এই পরীক্ষায়। অনেকের মতে, শাপে বর সেটাই!

অন্য বিষয়গুলি:

Embryo Sperm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE