Cannibal ants colony discovered in an abandoned nuclear bunker in Poland dgtl
Science news
খাদ্যের অভাব, নিজেদের খেয়েই জীবন কাটাচ্ছে এই পিঁপড়ের দল! চমকে গেলেন বিজ্ঞানীরা
ক্যানিবলিজম অর্থাত্ নিজেদের প্রজাতির মাংস খেয়ে জীবনধারণ করা। প্রাণীদের মধ্যে ক্যানিবলিজম নতুন নয়। কিছু প্রজাতির মাকড়সা, টাইগার স্যালামান্ডারের মধ্যেও এই বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
ক্যানিবলিজম অর্থাত্ নিজেদের প্রজাতির মাংস খেয়ে জীবনধারণ করা। প্রাণীদের মধ্যে ক্যানিবলিজম নতুন নয়। কিছু প্রজাতির মাকড়সা, টাইগার স্যালামান্ডারের মধ্যেও এই বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
০২১৪
তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন এক পিঁপড়ের কলোনির খোঁজ পেয়েছেন, যারা প্রকৃত অর্থে ক্যানিবল অর্থাত্ স্বপ্রজাতির মাংসভোগী নয়, কিন্তু খাদ্যের অভাবে এবং বেঁচে থাকার জন্য নিজেদেরকেই খেয়ে ফেলছে তারা। অর্থাত্ সম্পূর্ণ অন্য এক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অভিযোজন ঘটেছে তাদের মধ্যে।
০৩১৪
পোল্যান্ডে নিউক্লিয়ার বাঙ্কারের ভিতর বিজ্ঞানীরা এই জাতীয় পিঁপড়ের খোঁজ পেয়েছেন। সম্প্রতি জার্নাল অব হাইমেনোপটেরা রিসার্চ-এ বিজ্ঞানীদের এই খোঁজ প্রকাশিত হয়েছে।
০৪১৪
বিজ্ঞানীরা এদের নাম দিয়েছেন রাক্ষস পিঁপড়ে। দুটো উড অ্যান্ট কলোনির কাহিনি এটা। একটা কলোনি তৈরি হয়েছে রানি পিঁপড়েকে ঘিরে আর অন্য কলোনি তৈরি হয়েছে খাদ্যের অভাবকে ঘিরে। পরে তারাই রাক্ষস পিঁপড়েতে পরিণত হয়েছে।
০৫১৪
নিউক্লিয়ার বাঙ্কারে একটি পাইপের মধ্যে রয়েছে এই উড অ্যান্ট কলোনি। বিজ্ঞানীদের দাবি, এটাই আসল কলোনি। করণ এই কলোনিতেই রানি পিঁপড়ে থাকে।
০৬১৪
কিন্তু খাদ্যের সন্ধানে কলোনির শ্রমিক বা কর্মী পিঁপড়েদের পাইপ থেকে বাইরে বেরতে হয়। ওই পাইপের কাছেই আরও একটি ভেন্টিলেশন পাইপ রয়েছে।
০৭১৪
দুটো পাইপের অবস্থান এমনই যে, খাদ্যের সন্ধানে যাওয়ার সময় প্রতিদিন অনেক পিঁপড়ে ভেন্টিলেশন পাইপের মধ্যে পড়ে যায়। সেখান থেকে তারা আর নিজেদের কলোনিতে ফিরতে পারে না।
০৮১৪
ভেন্টিলেশন পাইপটা গিয়ে পড়েছে একটি ছোট অন্ধকার ঘরে। পড়ে যাওয়া পিঁপড়েগুলো ওই ঘরেই রয়ে যায়। দেওয়াল বেয়ে উপরে উঠলেও তাঁরা পাইপ থেকে বাইরে বেরতে পারে না। ফলে নিজেদের কলোনিতে ফিরে যেতে পারে না।
০৯১৪
আবার বাইরেও বার হতে পারে না তারা। ফলে প্রতিদিন যে পিঁপড়ে খাদ্য খুঁজতে গিয়ে ভেন্টিলেশন পাইপে পড়ে যায় তারা মূল কলোনি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যায়।
১০১৪
নতুন কলোনির কোনও রানি নেই। সবাই শ্রমিক বা কর্মী পিঁপড়ে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, বাইরে না বার হতে পারায় ওই কলোনি মধ্যে চূড়ান্ত খাদ্যের অভাব দেখা দেয়।
১১১৪
দীর্ঘ দিন খাদ্য না পেয়ে অনেক পিঁপড়ে মারা যায়। তখন ওই নতুন কলোনির অন্য পিঁপড়েরা মৃত পিঁপড়েদের খেয়ে জীবনধারণ করে। আবার অনেক সময় তাদের মধ্যে এতটাই খাদ্যাভাব দেখা যায় যে, পিঁপড়েরা নিজেদের মধ্যেই যুদ্ধ করতে শুরু করে। যুদ্ধে মৃত সৈনিকদের দেহ খেয়ে বাকিরা বেঁচে থাকে।
১২১৪
২০১৩ সালে বিজ্ঞানীরা প্রথম এই কলোনির খোঁজ পান। তারপর তাদের জীবনধারনের উপর পরীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, মূল কলোনি থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া পিঁপড়েরা বাঁচার স্বার্থে কী ভাবে স্বপ্রজাতিভুক হয়ে উঠেছে।
১৩১৪
ভেন্টিলেশন পাইপের সঙ্গে মূল কলোনির পাইপের মধ্যে একটি কাঠের পাটাতন যোগ করে বিজ্ঞানীরা এও দেখেছেন। দীর্ঘদিন মূল কলোনি থেকে আলাদা থাকা পিঁপড়ের দল যখন ওই কাঠ বেয়ে মূল কলোনিতে পৌঁছয়, তখন তাদের স্বাগত জানানো হয়। তাদের আলাদা কলোনি বলে বিচার করে না পিঁপড়েরা।
১৪১৪
এবং এতদিন যারা স্বপ্রজাকিভুক হয়ে উঠেছিল, মূল কলোনিতে ফিরে তারা আবার আগের মতোই ব্যবহার করে। তবে পিঁপড়েরা এখনও খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেকেই ভেন্টিলেশন পাইপের মধ্যে পড়ে যায় এবং একই ভাবে তারা আবার স্বপ্রজাতিভুক হয়ে ওঠে।