ছাব্বিশ-সাতাশ বছর আগেকার কথা। তার বেশিও হতে পারে। তখন সবে চাকরি পেয়েছি। প্রথম পোস্টিং নিজের জেলা, মালদহতেই। প্রেম আগে থেকেই ছিল, এ বার বিয়েটা সেরে ফেললাম। তার এক বছর পরেই এল বদলির চিঠি। বালুরঘাটে। দক্ষিণ দিনাজপুর।
বালুরঘাটে রেলস্টেশনের কাছে কিছু দিন ভাড়ায় থাকার পরে সরকারি কোয়ার্টার্স পেলাম। পাঁচতলা বাড়িটার সব ক’টা ফ্ল্যাটই সরকারি কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ। আমাদের চারতলার ফ্ল্যাটটা দু’কামরার। দক্ষিণ-পশ্চিমমুখী বারান্দা। প্রচুর হাওয়া-বাতাস। বারান্দায় এসে দাঁড়ালে সামনের ঘাসে ঢাকা মাঠ আর মাঠের উত্তর দিকে একটা জলাশয় দৃষ্টিগোচর হয়। দূরে দূরে নতুন বাড়িঘর উঠছে। চার দিকে গাছগাছালি প্রচুর।
সব কিছু দেখেশুনে আমার স্ত্রী অদিতির ভারী পছন্দ হল ফ্ল্যাটটা। সে লেগে গেল ঘর গুছোতে। তার তৈরি করা ফর্দ মিলিয়ে মিলিয়ে আমি কিনে আনতে লাগলাম স্টোভ, বাসনকোসন, আনাজপাতি, বিছানাপত্র এই সব। তত দিনে বুঝে গেছি, সদর বালুরঘাট যাকে বলে, এটা ঠিক সেই রকম জায়গায় নয়, বরং খানিকটা শহরতলি এলাকা। জানি না এখন জায়গাটার কী অবস্থা হয়েছে। সেই সময়ে এই অঞ্চলটাকে বলা হত মনোরঞ্জন কলোনি।
অফিসে জয়েন করে দেখলাম, মালদহের অফিসের তুলনায় এখানে কাজের চাপ বলতে তেমন কিছুই নেই। ফাইল পড়ে আছে বিস্তর। কিন্তু কাজ করতে চাইলেই তো হবে না। বেশ কিছু টেবিল ঘুরে ফাইল আমার টেবিলে আসবে, আর সেখানেই যত বিপত্তি। আমার ঊর্ধ্বতন এক সহকর্মী ছিলেন তারাদাস বারিক। তখনই বয়স ছাপ্পান্ন ছাড়িয়েছে। গল্পের বই পড়তে দারুণ ভালবাসতেন। বাড়িতে পড়তেন, অফিসেও নিয়ে আসতেন। তার কাছে পেন্ডিং ফাইলের জন্য তাগাদা করলেই তিনি ভারী অমায়িক হাসতেন। নামের মাহাত্ম্যেই কি না কে জানে, তিনি প্রায়ই ‘তারানাথ তান্ত্রিক’ থেকে নানা উক্তি ছাড়তেন। বলতেন, “দাসবাবু, জীবনটা মূলত আয়েশ করার জন্য। মাঝে দু’-একটা চাকরি বা ব্যবসা করলেন...” বলেই তিনি ফের বইয়ে ডুবে যেতেন। হয়তো উক্তিটা ঠিকমতো আজ আমার মনে নেই, কিন্তু খুব অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম তাঁর দিকে, মনে আছে। কখনও কখনও বিরক্তিও জাগত।
যাক, আমার গল্প তারাদাস বারিককে নিয়ে নয়, অষ্টমীকে নিয়ে। এখানে আসার মাস পাঁচেক পরেই অদিতি সন্তানসম্ভবা হল। তারও মাস চারেক পরে আমরা দু’জনেই টের পেলাম, এ বারে একটা ঠিকে কাজের লোক না রাখলেই নয়। অদিতিই কার কার সঙ্গে যেন কথা বলে এক জন কাজের মহিলা ঠিক করে ফেলল। নাম অষ্টমী। প্রথম যে দিন সে এল, দেখেই আমার কেমন একটা মিশ্র অনুভূতি হল। মধ্যম উচ্চতা, শীর্ণ চেহারা, মাজা-মাজা গায়ের রং, সারা মুখে বসন্তের দাগ। কিন্তু তাকে দেখে কেমন লাগল সেটা কোনও কাজের কথা নয়, যে জন্য তাকে রাখা, সেই কাজটাই হল আসল ব্যাপার।
এক দিন অফিস থেকে ফিরে বেশ অবাক হলাম। প্রায় মাস সাতেক ধরে দেখা চেনা ফ্ল্যাটটা ভারী অন্য রকম লাগল। অদিতির মুখে হাসি। এই ভাবে কে গোছাল? অদিতি জানাল, অষ্টমী। আমি মুখে কিছু না বললেও, মনে মনে প্রশংসা না করে পারলাম না। শুধু গোছানোই নয়, দেখলাম বেশ কিছু অস্থাবর সম্পত্তি এরই মধ্যে জায়গাও পরিবর্তন করেছে। মহিলার বেশ রুচিজ্ঞান আছে তো! হতে পারে কোনও বড় ঘরের মহিলা, হয়তো অবস্থার বিপাকে এই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। যদিও, পরে আরও বার চারেক, তার দিকে আড়চোখে তাকিয়েও চেহারায় সেই ‘বড় ঘরানা’র তিলমাত্র উপস্থিতি টের পেলাম না।
যাই হোক, অষ্টমীর হাতের কাজ যে দুর্দান্ত, সেটা তর্কাতীত ব্যাপার। অদিতির ইচ্ছে প্রবল, কিন্তু সাধ্য কম। ফলে ধীরে ধীরে কড়াইয়ের নীচে কালির আভাস, থালার কোণে দাগ, স্টোভের পাশে জমে ওঠা ময়লা, এই সব দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। অষ্টমী আসার দিন দুয়েক পরে দেখলাম, সে সব উধাও। খেতে বসে ঝকঝকে ভাতের হাঁড়ি দেখে বললাম, “কিনলে, নাকি?”
সে জানাল, পুরনোটাই, অষ্টমীর হাতে পড়ে তার রূপ খুলেছে। আশ্চর্য! ওই কাঠি-কাঠি সদৃশ হাতে এত জোর! সবই ঠিক ছিল, কিন্তু একটা ব্যাপার বিরক্তিকর হল। রোজ ঠিক ভোর পাঁচটায় উপস্থিত হয়ে তার ডোরবেল টেপা। আমি বরাবরই লেট-রাইজ়ার, আটটার আগে চোখ খোলে না। তার পর চা-টা খেয়ে বাজার করে এসে স্নানাহার সেরে এগারোটার মধ্যে অফিসের উদ্দেশে যাত্রা। আমি চরম বিরক্তি-সহ ঘুম-ঘুম চোখে দরজা খুলে দিলেই সে পরনের কাপড়ে হাত মুছতে মুছতে ঘরে ঢোকে। আমিও ফের বিছানায় গিয়ে এলিয়ে পড়ি।
রোজ অফিস থেকে ফিরে হাতমুখ ধুয়ে জলখাবার খেয়ে অদিতির সঙ্গে সেই দক্ষিণ-পশ্চিমের বারান্দায় দুটো মোড়া টেনে বসতাম, চায়ের কাপ হাতে নিয়ে। অনেক দিনের অভ্যেস। নানা বিষয়ে গল্প হত। সাম্প্রতিক কালে তার মধ্যে থাকত আমাদের আসন্ন সন্তানের প্রসঙ্গ। অষ্টমীর কথাও কিছু কিছু কানে এল। আমি বললাম, “অত ভোরে কেউ আসে? তুমি বারণ করতে পারো না?”
অদিতি ভুরু তুলল, “ও তারও আগে একতলার সরকার-গিন্নির কাজ সেরে আসে, জানো? আর ও ক’টা বাড়িতে কাজ করে সেই খবর রাখো? বারোটা। মাই গড।”
পরনের কাপড়ে হাত মুছতে মুছতে ঘরে ঢোকার কারণটা বোঝা গেল। তবুও বললাম, “কিন্তু অন্যান্য বাড়ির কাজ সেরেও তো আসতে পারে।”
“তা হয় নাকি গো? এখানকার কাজ সেরে ও চলে যায় অনেকটা দূরে, সেই মহামায়াতলায়। সেখান থেকে কাজ করতে করতে নিজের বাড়ি। তার মধ্যে এক বাড়িতে রান্নার কাজও করে। শুনলাম, বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে নাকি সাড়ে বারোটা-একটা বেজে যায়। তার পর নিজের ফ্যামিলির জন্য রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া এই সব সারতে হয়।”
বুঝলাম। শীত নেই, গ্রীষ্ম নেই, রবিবার নেই, রোজ আমাকে কাঁচা ঘুম ভেঙে উঠতে হবে।
“ওর স্বামী নেই? মারা গেছে নাকি?”
অদিতি এক বার নিজের কপালে হাত ঠেকাল, “ইসস! কী যে বলো না! আছে। আগে রিকশা চালাত। এখন কী সব অসুখবিসুখ বাধিয়ে বাড়িতেই থাকে। ওদের একটা বাচ্চাও আছে।”
সে যা-ই হোক, নিজের ঘরের দিকে তাকিয়ে কিন্তু আমার মন বেশ ভাল হয়ে যেত। শখ করে একটা ফুলদানি কিনেছিলাম, তাতে এক দিন দেখলাম ছোট্ট ছোট্ট নীল ফুলে ভর্তি একটা তোড়া। সাদা ফুলদানির সঙ্গে অপূর্ব মানিয়েছে। শুনলাম অষ্টমী এনেছে। আর এক দিন অদিতি বলল, “বারান্দার রেলিঙে ঝোলানোর জন্য প্লাস্টিকের টব এনো তো।”
এনে দিলাম। দু’দিন পর দেখলাম, সেগুলোর গলা অবধি মাটি ভর্তি হয়ে তার উপরে ছোট্ট ছোট্ট গাছ দাঁড়িয়ে গেছে। অদিতি জানাল, দোপাটি গাছ। কিছু দিনের মধ্যেই নাকি সাদা, লাল, বেগুনি, গোলাপি ফুল হবে।
ভাবলাম, মাইনে তো দিই সাকুল্যে মাসে একশো কুড়ি টাকা। তার মধ্যেই বাসন মাজা, কাপড় কাচা, ঘর মোছা সামলে যে মহিলা অন্যের বাড়িকে এত সুন্দর করে সাজাতে পারে, তার নিজের বাড়িটা কেমন হবে? মুখে তো তাকে জিজ্ঞেস করা যায় না, কিন্তু আমি যেন সবটাই চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম। নিশ্চয়ই একতলা ছিমছাম বাড়ি হবে একটা। হয়তো মেঝে মাটির, কিংবা লাল সিমেন্টেরও হতে পারে। চার দিকের কঞ্চি-বেড়ার দেওয়াল অথবা হাফ দেওয়াল ইটের গাঁথনি। বাড়ির মাথায় টিন অথবা অ্যাসবেস্টস। ছোট্ট ছোট্ট দুটো প্রায়ান্ধকার ঘর, তবুও তার মধ্যে চোখ সয়ে এলে দেখা যাবে, বেড়ার দেওয়ালে কাঠের লগার সঙ্গে ঝোলানো একটা ছোট্ট কাঠের আসন। তার উপরে শিব, কালী বা মা লক্ষ্মীর পট। সামনে কুচো কুচো দুটো প্লেটে একটা করে নকুলদানা, যার বেশির ভাগই পিঁপড়ের দল সাবাড় করে দিয়েছে। দুটো কুচো গ্লাসে জল। তার উপরে ধূপকাঠির ছাই পড়ে মৃদু আস্তরণ। দেওয়ালে ঝোলানো দড়িতে রোজকার লুঙ্গি, শায়া, বাচ্চার খুদে খুদে পোশাক এমন ভাবে পাটে পাটে রাখা, যেন টোকা দিলেই খসে পড়ে যাবে। ঘরে আসবাব সামান্যই, তবে তা দারুণ গুছিয়ে রাখায় ছোট্ট ঘরটা দরবার কক্ষের মতো বিশাল হয়ে উঠেছে।
বাইরে ছোট্ট এক চিলতে বারান্দা, তার এক দিক ঢাকা দিয়ে উনুন, হাঁড়িকুড়ি, রান্নাবান্নার আয়োজন। সামনে থাকবে ছোট্ট একটা উঠোন। তার এক কোণে একটা তুলসীমঞ্চ থাকাও বিচিত্র নয়। হয়তো সেই কোন রাত থাকতে থাকতে অষ্টমী উঠে পড়ে, গোবরজল দিয়ে উঠোন নিকিয়ে বাচ্চার জন্য দুধ গরম করে নেয়, নয়তো দুটো ভাতে ভাত ফুটিয়ে নেওয়া। নইলে স্বামীদেবতাটি উঠে গিলবেন কী! তার পরই বেরিয়ে পড়া আমাদের মনোরঞ্জন কলোনির উদ্দেশে।
দিন কেটে যাচ্ছিল মন্দ নয়। রোজ পাঁচটায় উঠে পড়তে পড়তে আমারও কেমন একটা অভ্যেস তৈরি হয়ে গেল। পরে আর ঘুম আসত না। ভাবলাম, সামনের মাঠে হাঁটাহাঁটি করলে কেমন হয়। তাই শুরু করলাম। মনে হল, এত দিন বাড়তি তিন ঘণ্টা করে বিছানায় পড়ে পড়ে সময়ের কী অপচয় করেছি!মনে মনে অষ্টমীকে ‘থ্যাঙ্কস’ জানালাম, মুখে তো বলা যায় না।
এক দিন অদিতি জানাল, আগামী কাল থেকে অষ্টমীর কাজে আসতে আধ ঘণ্টা করে দেরি হবে। কেন? শুনলাম, যে বাড়িতে ওরা এত দিন ছিল, তার মালিক নাকি চলে এসেছে। তাই ঘর ছেড়ে দিতে হবে। বাড়ি বদল করে অষ্টমীরা আরও দূরে কোথাও চলে যাচ্ছে। চমকে উঠলাম। তা হলে এত দিন অষ্টমী ভাড়াবাড়িতে ছিল? আমার কল্পনায় গড়ে তোলা অষ্টমীর বাড়ি তা হলে ভাড়াবাড়ি? যাচ্চলে! নিমেষে সেই বাড়িঘরদোর ভেঙেচুরে একটা বস্তিবাড়ির ছবি ভেসে উঠল। একটা সরু গলি, জলে জলাকার, তার দু’পাশে সার দিয়ে ঘরের পরে ঘর, ঘরের পরে ঘর, ঘর আর ঘর।
এর পর কেটে গেছে আরও মাস সাতেক। এরই মধ্যে একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। অদিতির মিসক্যারেজ হয়েছে। আজকাল বেশির ভাগ সময়ই ও মন খারাপ করে শুয়ে-বসে থাকে। অষ্টমীর বারোটা ঘরের মধ্যে দুটো ঘরের কাজ চলে গেছে। সেই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে ওকে আমাদের রান্নাবান্নার দায়িত্বটা দেওয়া হয়েছে, মাইনেও বাড়িয়ে সাড়ে তিনশো করে দিয়েছি। এক দিন অফিস থেকে ফিরে অদিতির মুখে শুনলাম, অষ্টমীরা নাকি যুবকলোনিতে ভাড়া নিয়ে চলে এসেছে।
মানে! যত দূর জানি, যুবকলোনি মোটামুটি একটা সমৃদ্ধ বসতি অঞ্চল। এখনও অল্প কিছু প্লটে যা জায়গা ফাঁকা আছে, সেখানে দ্রুত ফ্ল্যাট উঠছে। এখন যুবকলোনিতে একটা দেড় কামরার ফ্ল্যাট হলেও তার ভাড়া হাজার দেড়েক বা বারোশোর নীচে তো হবেই না। অদিতির মুখে শুনে শুনে যা আন্দাজ হয়েছে, অষ্টমীর সংসারে তো সে-ই একমাত্র আর্নিং মেম্বার আর বর্তমানে তার মাসিক আয় কোনও মতেই চোদ্দোশো থেকে ষোলোশো টাকার বেশি নয়। তবে কি ও বা ওর স্বামী কোনও বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত? শেষমেশ আমরাই ফেঁসে যাব না তো?
এক দিন আর কৌতূহল চাপতে না পেরে, অদিতিকে প্রস্তাব দিলাম, সারা দিন ঘরে মনমরা হয়ে বসে না থেকে, বিকেল নাগাদ আশপাশে ঘুরে আসি বরং। অদিতি রাজি হয়ে গেল। আমি ওকে নিয়ে একটু এ দিক-ও দিক ঘুরেই যুবকলোনিতে হাজির হলাম। আলগোছে বললাম, “এ দিকে আমাদের অষ্টমীর ভাড়া নিয়েছে না? কোথায় জানো?”
অদিতি জানাল, ঠিক করে জানে না, তবে দিনবাজারের আশেপাশেই শুনেছিল। গেলাম সে দিকে। দিনবাজার পার হতেই বাঁ দিকে অনেকটা জমি খালি, তার মধ্যে বিক্ষিপ্ত গোটা চারেক ফ্ল্যাটবাড়ির কঙ্কাল। কোনওটায় ইটের গাঁথনি সম্পূর্ণ হয়েছে, কোনওটা সবে ভিতের উপরে উঠতে শুরু করেছে। হয়তো সাত-আট মাসের মধ্যেই রং-টং করে একটা চার-পাঁচতলা বিল্ডিং দাঁড়িয়ে যাবে। তার পরে নতুন মালিকদের আনাগোনা চালু। কিন্তু অষ্টমীর বাড়িটা…
ফেরার কথা ভাবছি, এমন সময় কানে এল, “অদিতি বৌদি, আপনি এখানে?”
চমকে তাকিয়ে দেখি, একটা নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটবাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছে অষ্টমী! এখানে কী করছে ও? এই বাড়িটায় তো সবে জানালা-দরজার ফ্রেম লাগানো হয়েছে, এখনও অনেক কাজ বাকি। পাশে ইট আর বালির ছোটখাটো পাহাড়। সিমেন্টের বস্তাগুলো ডাঁই করে রাখা আছে এক পাশে।
অদিতিই জিজ্ঞেস করল, “এখানে?”
অষ্টমী হাসল, “এটাই তো আমার বাড়ি। এখন।”
“কিন্তু এখানে তো দরজা, জানালা…”
“কিছুই নেই। রাতে বস্তা ঝুলিয়ে রাখি। আসলে যেখানে যেখানে বাড়ি তৈরি হয়, বালি-সিমেন্ট পাহারা দেওয়ার জন্য সারা দিন-রাতের লোক দরকার পড়ে। এই বাড়িটা তৈরি হয়ে গেলে, আবার অন্য কোনও জায়গায় চলে যেতে হবে।”
নিবে আসা আলোয় আমি অপলক তাকিয়ে দেখছিলাম, অষ্টমীর বাড়ি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)