‘ট্রিপল এক্স’ নিয়ে বিতর্কের জেরে বেগুরসরাই আদালতের তরফে একতা এবং তাঁর মা শোভা কপূরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। সেই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন একতা।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৪৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
‘ট্রিপল এক্স’ ওয়েব সিরিজ়ে ‘আপত্তিকর দৃশ্য’ দেখানোর অভিযোগে বলিউডের পরিচালক প্রযোজক একতা কপূরকে ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের ছবি বা ওয়েব সিরিজ় বানিয়ে দেশের তরুণ প্রজন্মকে ‘কলুষিত’ করছেন একতা।
০২১৬
ওই ওয়েব সিরিজ় নিয়ে বিতর্কের জেরেই বিহারের বেগুরসরাই আদালতের তরফে একতা এবং তাঁর মা শোভা কপূরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। সেই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন একতা।
০৩১৬
শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি অজয় রাস্তোগী এবং সিটি রবিকুমারের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে একতার উদ্দেশে বলা হয়, ‘‘আপনি দেশের তরুণ প্রজন্মকে কলুষিত করছেন। কিছু একটা করা দরকার। আপনার এই ওয়েব সিরিজ় তো সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। দর্শকের কাছে আপনারা কী বিকল্প রাখছেন?’’
০৪১৬
একতা কপূরের ‘ট্রিপল এক্স’ নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর অল্ট্ বালাজির পর্দায় মুক্তি পেয়েছিল এই ওয়েব সিরিজের প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্ব মুক্তি পায় ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। তার পর থেকেই বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করে।
০৫১৬
এই ওয়েব সিরিজ়ের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, দেশের সেনাবাহিনীকে অপমান এবং জওয়ানদের পরিবারের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। মূলত দ্বিতীয় পর্বের কিছু ‘আপত্তিকর দৃশ্য’ নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত।
০৬১৬
‘ট্রিপল এক্স’-এর দ্বিতীয় পর্বে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত এক জওয়ানের স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কাহিনি দেখানো হয়। অভিযোগ, তা করতে গিয়ে ছবির নির্মাতারা সেনার উর্দিকেও অপমান করেছেন।
০৭১৬
ওয়েব সিরিজ়ের কাহিনি অনুযায়ী, জওয়ান যখন দেশের কাজে নিয়োজিত, তখন তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর স্ত্রী পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। এই চিত্রনাট্যের বিরুদ্ধেও আপত্তি উঠেছে।
০৮১৬
একতা কপূর প্রযোজিত এই ওয়েব সিরিজ়ের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে বিহারের বেগুরসরাই আদালতে মামলা করেছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্তা শম্ভু কুমার। তাঁর অভিযোগ, এই ওয়েব সিরিজ়ে এক জন জওয়ানের স্ত্রীকে নিয়ে একাধিক ‘আপত্তিকর দৃশ্য’ দেখানো হয়েছে। ভারতীয় সেনার পক্ষে এই দৃশ্য ‘লজ্জাজনক’ বলে দাবি করেছিলেন তিনি।
০৯১৬
আদালতে শম্ভু কুমার জানিয়েছিলেন, জওয়ানরা দেশের সুরক্ষার জন্য নিজেদের প্রাণ বিপন্ন করে কর্তব্য পালন করেন। তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করে একতার ওয়েব সিরিজ়ে বিপরীত মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছে। এই দৃশ্যগুলি দেশের মানুষের সামনে সেনার মাথা হেঁট করে দিচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন শম্ভু।
১০১৬
প্রাক্তন সেনাকর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে একতা ও তাঁর মা শোভার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল বেগুরসরাই আদালত।
১১১৬
বিতর্কের কথা জানার পরেই একতা ‘ট্রিপল এক্স’ থেকে ওই ‘আপত্তিকর দৃশ্য’ বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন। ক্ষমাও চেয়েছিলেন। তবে তাতে বিতর্ক থামেনি।
১২১৬
বেগুরসরাই আদালতে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার বিরুদ্ধে একতা কপূরের আইনজীবী মুকুল রোহতগি প্রথমে পটনা হাই কোর্টে আবেদন জানান। কিন্তু সেখান থেকে দ্রুত বিচার পাওয়ার আশা না থাকায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।
১৩১৬
একতার আইনজীবীর বক্তব্য, নির্দিষ্ট ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সাবস্ক্রিপশন থাকলে তবেই ‘ট্রিপল এক্স’ দেখা যাবে। তাই এই সিরিজ় চাইলেই সকলে দেখতে পাবেন না। ‘ট্রিপল এক্স’ দেখবেন কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দর্শকের রয়েছে।
১৪১৬
সুপ্রিম কোর্ট একতা কপূরকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে। বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘আদালতে সাধারণ মানুষ বিচারের জন্য আসেন। যাঁদের শেষ সম্বল আদালত, তাঁরাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। যাঁরা তথাকথিত ‘আলোকপ্রাপ্ত’, তাঁরা যদি বিচার না পান, তা হলে সাধারণ মানুষ কী করবে!’’
১৫১৬
আগামী দিনে এই ধরনের মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে একতা কপূরকে জরিমানা করা হতে পারে বলেও জানায় শীর্ষ আদালত।
১৬১৬
২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ট্রিপল এক্স’-এর প্রথম পর্বে ছিল মোট ৬টি এপিসোড। ২০২০ সালে দ্বিতীয় পর্বে এপিসোডের সংখ্যা ছিল ৫। এই ওয়েব সিরিজ়টি পরিচালনা করেছেন কেন্ ঘোষ এবং প্রভাত প্রভাকর।