Retirement benefits of EPFO you may get Rs 28 lakh get after 40 years of service know the calculation dgtl
EPFO Retirement Fund
৪০ বছরের চাকরিজীবন হলে প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমবে কত টাকা? রইল পিএফের হিসাব
বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং পেনশনের ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র। এর জন্য বেতন থেকে টাকা কেটে নিয়ে নির্দিষ্ট একটি তহবিলে জমা করার নিয়ম রয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:১৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের অন্যতম বড় চিন্তার বিষয় হল অবসর। চাকরি জীবন ফুরিয়ে গিয়ে কী ভাবে সংসার চলবে, এই ভাবনাই কুরে কুরে খায় তাঁদের। এই কর্মীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বিশেষ একটি তহবিল তৈরি করছে সরকার। কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন ‘এমপ্লোয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন’ বা ইপিএফও-র উপরে রয়েছে সেটিকে চালু রাখার গুরুদায়িত্ব।
০২১৭
সংগঠিত বেসরকারি সংস্থার অধিকাংশ কর্মীই মনে করেন, সরকারি কর্মচারীদের মতো অবসরের পর কোনও পেনশন পাবেন না তাঁরা। এই ধারণা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। ইপিএফও পরিচালিত এমপ্লোয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ইপিএফের থেকে পেনশন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে তাঁদের।
০৩১৭
ইপিএফও-র নিয়মে বলা আছে, বেসরকারি সংস্থার এক জন চাকরিজীবীর মূল বেতনের (বেসিক পে) ১২ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য কেটে নেওয়া হবে। ওই টাকা ইপিএফও-র তহবিলে জমা পড়বে। সম পরিমাণ টাকা সংশ্লিষ্ট তহবিলে জমা করবে ওই ব্যক্তির নিয়োগকারী সংস্থা।
০৪১৭
ইপিএফও-র তহবিলের দু’টি অংশ রয়েছে। একটির নাম, এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ)। অপরটিকে বলা হয়, এমপ্লয়িজ় পেনশন স্কিম (ইপিএস)। বেসরকারি সংস্থার কর্মীর বেতনের যে অংশটি কেটে নেওয়া হয়, তার পুরোটাই জমা পড়ে ইপিএফ তহবিলে।
০৫১৭
অন্য দিকে, নিয়োগকারী সংস্থা যে টাকা জমা করে, সেই ১২ শতাংশকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। ৮.৩৩ শতাংশ পেনশন অ্যাকাউন্টে জমা হয়। বাকি ৩.৬৭ শতাংশ চলে যায় প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে। ইপিএফের উপর বছরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ দিয়ে থাকে কেন্দ্র। প্রভিডেন্ট ফান্ডের এই সুদের হার পরিবর্তনশীল।
০৬১৭
২০২১-’২২ অর্থিক বছরে প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার ছিল ৮.৫ শতাংশ। ঠিক তার পরের বছর (পড়ুন ২০২২-’২৩) এই হার কমে ৮.১ শতাংশে নেমে এসেছিল। ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে এর পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে ৮.২৫ শতাংশ করে সরকার। বর্তমানে এই হার অব্যাহত রয়েছে।
০৭১৭
পেনশন তহবিলে আবার ইচ্ছামতো টাকা জমা করার নিয়ম নেই। এ ক্ষেত্রে একটি ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করে দিয়েছে কেন্দ্র। ইপিএফও-র নিয়মে বলা হয়েছে, এক জন কর্মী ইপিএস অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ১,২৫০ টাকা জমা করতে পারবেন। ইপিএসের টাকা অবসরের আগে কোনও ভাবেই তোলা যাবে না।
০৮১৭
প্রভিডেন্ট ফান্ডে সঞ্চিত অর্থ কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মীর তোলার অধিকার রয়েছে। এই তহবিল থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তুলে নিতে পারেন তিনি। আবার ইচ্ছা করলে অবসরের পরেও এই তহবিল থেকে টাকা পেতে পারেন সংশ্লিষ্ট কর্মী।
০৯১৭
এখন প্রশ্ন হল, বেসরকারি সংস্থার কোনও কর্মীর চাকরি জীবনের মেয়াদ ৪০ বছর হলে অবসরের পর প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে কত টাকা পাবেন? একটি উদাহরণের সাহায্যে ব্যাপারটা বুঝে নেওয়া যেতে পারে। ধরা যাক ওই কর্মীর মূল বেতন (বেসিক পে) ১৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তাঁর বয়স ১৮ এবং ৫৮ বছরে পা দিয়ে অবসর নেবেন তিনি।
১০১৭
এ ক্ষেত্রে ইপিএফ তহবিলে প্রতি মাসে বেতনের ১২ শতাংশ অর্থাৎ ১,৮০০ টাকা করে জমা করবেন ওই ব্যক্তি। তাঁর নিয়োগকারী সংস্থাও তহবিলটিকে দেবে ১,৮০০ টাকা। এই অর্থের ৮.৩৩ শতাংশ জমা পড়বে পেনশন ফান্ড বা ইপিএসে।
১১১৭
এ বার বছরে যদি ১০ শতাংশ করে ওই ব্যক্তির বেতন বৃদ্ধি হয় এবং ইপিএফের সুদের হার ৮.২৫ শতাংশে আটকে থাকে, তা হলে অবসরের সময়ে প্রভিডেন্ট ফান্ডের থেকে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা পাবেন তিনি। সুদের হার কমলে পিএফের টাকার অঙ্ক হ্রাস পাবে।
১২১৭
বর্তমান নিয়মে বেসরকারি সংস্থার কোনও কর্মীর মূল বেতন (বেসিক পে) ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হলে তাঁকে বাধ্যতামূলক ভাবে পেনশন প্রকল্পের আওতায় আনতে বলেছে ইপিএফও। সূত্রের খবর, আগামী দিনে এই নিয়মের বদল ঘটাতে চাইছে কেন্দ্র। পিএফের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মজুরি ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে মোদী সরকারের। তবে এই নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
১৩১৭
কেন্দ্রের দাবি, মজুরি সীমা ২১ হাজার টাকা করলে বেসরকারি সংস্থার অধিকাংশ কর্মীকে পেনশন তহবিলের আওতায় আনা যাবে। এখনকার আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তির মূল বেতন (বেসিক পে) ১৫ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেলে তিনি পেনশন তহবিলে অর্থ জমা করতে পারবেন না। তাঁর বেতন থেকে যে টাকা কাটা হবে, তার পুরোটাই যাবে প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে।
১৪১৭
কিন্তু, মজুরি সীমা বাড়িয়ে ২১ হাজার করলে ১৫ হাজার টাকা বা তার বেশি বেসিক পে হলেও বেসরকারি সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মী পেনশন ফান্ডে টাকা জমা করতে পারবেন। মূল বেতন ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন তিনি।
১৫১৭
সূত্রের খবর, মজুরিসীমা বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করা হলে পেনশন তহবিলে প্রদেয় অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। সে ক্ষেত্রে ১,২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ওই অঙ্ক দাঁড়াবে ১,৭৪৯ টাকা। অন্য দিকে প্রভিডেন্ট ফান্ডে কমবে বিনিয়োগের পরিমাণ।
১৬১৭
নতুন নিয়মে পেনশনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলে যুক্তি দিয়েছে মোদী সরকার। ইপিএস যে নিয়মে পেনশন দিয়ে থাকে তা হল (গ্রাহকের কর্ম বছর x পেনশন যোগ্য বেতন)/৭০। এই নিয়মে ৩৫ বছর বয়স কোনও কর্মী ৫৮ বছর বয়সে অবসর নিলে প্রতি মাসে ৬,৯০০ টাকা করে পেনশন পাবেন। তবে অবশ্যই তাঁর বেতন ২৩ হাজার টাকা হতে হবে।
১৭১৭
এখানে মনে রাখার বিষয় হল, প্রভিডেন্ট ফান্ডে গচ্ছিত অর্থের উপর সুদ দিয়ে থাকে সরকার। কিন্তু, ইপিএস আমানতের উপর কোনও সুদ দেওয়া হয় না। ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান, মজুরিসীমা বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে মোদী প্রশাসনের।