এক বছর হল মা হয়েছেন রাকা। কিন্তু ক্রপ টপ পরার উপায় নেই তাঁর। কারণ পেটে স্ট্রেচ মার্কস। কয়েক মাসে ওজন বেড়েছে রাইয়ের। পায়ের থাইয়ের স্ট্রেচ মার্কস ঢাকতে শর্টস পরা ভুলে থাকতে হচ্ছে তাঁকে।
ঠিক এর উল্টো কাণ্ড হয়েছে মিতুলের সঙ্গে। জিমে গিয়ে এক ঝটকায় অনেকটা ওজন কমিয়ে ফেলেছেন ঠিকই, কিন্তু স্লিভলেস আউটফিট পরতে পারছেন না। হাতের স্ট্রেচ মার্কস অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে স্টাইলের পথে।
স্ট্রেচ মার্কস নিয়ে বহু মহিলাই নাজেহাল। বিশেষ করে মা হওয়ার পরে এই সমস্যা বেশ চিন্তায় ফেলে। যদিও এই ব্যাপারটি সে ভাবে শরীরের ক্ষতি করে না। কিন্তু শ্রী নষ্ট করে। নিজের পছন্দ মতো পোশাক পরতে না পারার জন্য অনেকেই মানসিক অবসাদে ভুগতে পারেন। শুধু মেয়েরা নয়, বিভিন্ন কারণে ছেলেরাও এই সমস্যার শিকার।
স্ট্রেচ মার্কসের কারণ
প্রেগন্যান্সির সময়ে গর্ভে সন্তানের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পেট, থাই এবং স্তনের ত্বক। যে জায়গায় পেশির বৃদ্ধি বা সঙ্কোচন হয়, সেখানে ত্বকের উপরে পড়তে থাকে লম্বাটে দাগ। যাকে বলে স্ট্রেচ মার্কস। নতুন অবস্থায় স্ট্রেচ মার্কসের রং গোলাপি, পরে সময়ের সঙ্গে বদলে হয় বাদামি।
ছেলে বা মেয়ে বয়ঃসন্ধির সময়ে দ্রুত লম্বা হয়, কখনও ওজন কমে বা বাড়ে। এর ফলে থাই, হাত, কোমরে স্ট্রেচ মার্কস দেখা যায়। ওজন কমলে যেমন স্ট্রেচ মার্কস হয়, তেমনই দ্রুত ওজন বাড়লেও হয়।
অনেক সময় শরীরের এই দাগ বংশগতও হয়। তবে এর সংখ্যা কম।
স্ট্রেচ মার্কস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বাজারে পাওয়া
যায় বিভিন্ন ধরনের ক্রিম, ওষুধ। কিন্তু ক্রিম হোক বা খাওয়ার
ওষুধ, তাতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকবেই। এ সব এড়াতে
চাইলে সাহায্য নিতে পারেন
কিছু ঘরোয়া প্রতিকারের। যেগুলো প্রায় ওষুধের মতোই কাজ করে। প্রাকৃতিক দাওয়াইয়ে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ভয়ও কম।
ঘরোয়া পদ্ধতি
nলেবুর রসকে বলে ন্যাচরাল ব্লিচিং। যে কোনও দাগ দ্রুত হালকা করতে সাহায্য করে। অর্ধেক পাতিলেবুর রস নিংড়ে নিয়ে নিংড়ানো লেবুটি রসে ডুবিয়ে স্ট্রেচ মার্কসের জায়গায় ঘষে নিন।
nএই দাগ তুলতে সাহায্য করে হাই প্রোটিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড। দুটোই আছে ডিমের সাদা অংশে। ডিমের সাদা অংশ তুলি দিয়ে লাগিয়ে নিন স্ট্রেচ মার্কসের উপরে। শুকিয়ে গেলে জলে ধুয়ে ফেলুন।
nআলুর কুরিয়ে তার রস দাগ হালকা করতে সাহায্য করে।
nজলপাই তেল অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা ত্বকের পক্ষে ভাল। জলপাই তেল ঠান্ডা করে রোজ স্নানের আগে দাগের উপরে মালিশ করলে অনেকটাই হালকা হয়ে যাবে। আরও ভাল হয়, জলপাই তেলের সঙ্গে চিনি ও লেবুর রস মিশিয়ে নিলে।
n১৫-৩০ মিনিট ক্যাস্টর অয়েলও লাগিয়ে রাখার পরে তার উপরে একটা সুতির কাপড় জড়িয়ে হটপ্যাড দিয়ে সেঁক দিলে দ্রুত দাগ কমে।
nঅ্যালো ভেরা বা ঘৃতকুমারীর জেল দাগের উপরে লাগিয়ে ২-৩ ঘণ্টা রাখার পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
nচায়ের লিকারে থাকে বেশ কিছু ভিটামিন ও মিনারেল। বিশেষ করে ভিটামিন বি ১২, যা কালো দাগ তুলতে সাহায্য করে। এক কাপ লিকার ঠান্ডা করে তাতে নুন মিশিয়ে দাগের জায়গায় লাগাতে পারেন।
nআবার শিয়া বাটার এবং কফি স্ক্রাব করলেও দাগ দূর হয়।
nস্ট্রেচ মার্কস থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে রোজ খেতে হবে দিনে আট-দশ গ্লাস জল। ডায়েটে থাক আমন্ড, পালং শাক, ব্রকোলি, পেঁপে, দই, তিল, কুমড়ো ইত্যাদি।
ওষুধের চেয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাগ তুলতে সময় বেশি লাগবে এবং দামও বেশি। কিন্তু সাইড এফেক্ট এড়াতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ভরসা করা বুদ্ধিমানের কাজ।
ঊর্মি নাথ
মডেল: তরান্নুম
ছবি: শুভদীপ ধর মেকআপ:
ভাস্কর বিশ্বাস
শাড়ি: আরশি, লেক গার্ডেন্স
ব্লাউজ়: জয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy