ছোটবেলায় দেখতাম, মা-ঠাকুমাদের আঙুল কেটে গেলে কিংবা ছ্যাঁকা লাগলে, হাতের কাছে যা পেতেন, তা দিয়েই আত্মরক্ষা করতেন। আলাদা করে রান্নাঘর ছেড়ে বেরিয়ে ওষুধ লাগানোর ফুরসত বা বিলাসিতা কোনওটাই তাঁদের ছিল না। আমাদের হেঁশেলে এমন অনেক উপাদানই থাকে, যার গুণাগুণ শুধুই রান্নার পদে সীমাবদ্ধ নয়। হাজারো গুণসমৃদ্ধ এ রকম উপাদানের তালিকা করতে গেলে বেগ পেতে হবে। আজ রইল বেকিং সোডার কথা। হেঁশেল পরিষ্কার, শরীরের যত্ন বা হঠাৎ বিপদ থেকে মুশকিল আসান করতে পারে এটি।
•দাঁত মাজার পরেও মুখ থেকে দুর্গন্ধ না গেলে এক গ্লাস জলে এক চা চামচ বেকিং সোডা দিয়ে কুলি করতে পারেন। বেকিং সোডা দুর্গন্ধ দূরে করে। এমনকী দাঁত পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও এর জুড়ি মেলা ভার।
•তিন চামচ বেকিং সোডা, এক চামচ জল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ঘষে ঘষে তুলুন। মৃত ত্বককোষ পরিষ্কার করতে এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাবের কাজ করবে এটি।
•অনেক সময়ই পোকামাকড়ের কামড়ে ত্বক জ্বালা করে। র্যাশের জায়গায় জল মেশানো বেকিং সোডা লাগালে জ্বলুনি কমবে। স্নানের জলে এক কাপ বেকিং সোডা মিশিয়ে গায়ে ঢালুন। ত্বক নরম হবে।
•রোজকার ব্যবহারে চিরুনি বা হেয়ার ব্রাশে নোংরা জমে। বেকিং সোডা মেশানো জলে চিরুনি-ব্রাশ ভিজিয়ে রাখুন। তার পর সহজেই পরিষ্কার করে নিন সেগুলি।
•সারা দিন হাঁটাহাঁটির পর ক্লান্ত লাগাই স্বাভাবিক। ঈষদুষ্ণ জলে বেকিং সোডা মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। আরাম পাবেন।
•লাল সিমেন্টের হোক বা টাইলস বসানো মেঝে, একটা সময়ের পরে তেলের দাগ বসেই যায়। এক বালতি উষ্ণ জলে আধ কাপ বেকিং সোডা মিশিয়ে চেপে চেপে ঘর মুছুন। দেখবেন দাগ উধাও।
•ওটিজি বা মাইক্রোওয়েভ আভেনের ভিতর পরিষ্কার করা বেশ ঝঞ্ঝাটের। বোতলে জল আর বেকিং সোডা মিশিয়ে স্প্রে করে নিন। তার পর ভাল করে মুছে নিলেই আভেন একেবারে নতুনের মতো ঝাঁ চকচকে। একই পদ্ধতিতে পরিষ্কার করতে পারেন গ্যাসের চারপাশে বহু দিন ধরে জমে থাকা ময়লাও।
•কাজের তাড়াহুড়োয় বেসিনের মুখ আনাজের খোসায় বন্ধ হয়ে যেতেই পারে। সম পরিমাণে বেকিং সোডা আর ভিনিগার মিশিয়ে বেসিনের মুখে এবং চারপাশে ঢেলে দিন। বন্ধ মুখ খুলে যাবে কিছুক্ষণের মধ্যেই।
•রান্নায় বেশি হলুদ পড়ে গিয়েছে। অথবা দীর্ঘক্ষণ রান্নার ফলে হাত দিয়ে খাবারের গন্ধ বেরোচ্ছে। অথচ বাড়ির হ্যান্ডওয়াশটাও একদম শেষ। তা হলে কয়েক ফোঁটা জল দিয়ে বেকিং সোডা হাতে ঘষে, কচলে ধুয়ে নিন। দাগ, গন্ধ দূর হবে।
•শিশুদের ডায়াপার র্যাশ থেকে রেহাই পেতেও নাকি বেকিং সোডার ভূমিকা অব্যর্থ। শিশুকে স্নান করানোর সময়ে তার বাথটাবে অল্প বেকিং সোডা মিশিয়ে দিতে পারেন।
•বাথরুমের দুর্গন্ধ দূর করতে কমোডে এক কাপ বেকিং সোডা ঢেলে রাখুন। এক ঘণ্টা পর ফ্লাশ করুন। বাথরুমের দুর্গন্ধ কেটে যাবে।
•সম পরিমাণে নুন ও বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। হেঁশেলের যে পথে পিঁপড়ের আনাগোনা, সেখানে ছড়িয়ে রাখুন। পিঁপড়ে পালাবার পথ পাবে না।
রান্নায় ভাজাভুজি বা বেকড পদে বেকিং সোডার নানা ভূমিকা তো রয়েছে। এ বার রান্না ছাড়াও ঘরোয়া হাজারো কাজের সমাধান হিসেবে বেছে নিতে পারেন বেকিং সোডা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy