শবরীমালা মন্দিরের কাছে ভক্তদের বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।
সর্বোচ্চ আদালতের ঐতিহাসিক রায় সত্ত্বেও শবরীমালা মন্দির নিয়ে উত্তেজনা অব্যাহত কেরলে।
সোমবারই রাত ১০টার পর থেকে এক মাসের জন্য বন্ধ থাকবে মন্দির। তার আগে মন্দিরে ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশ রুখতে সতর্ক বিক্ষোভকারী ভক্তরা। শুধুমাত্র ১০ থেকে ৫০ বছরের মহিলারাই নয়, ভক্তদের আক্রমণের শিকার হতে পারেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। পাম্বা বেস-এ খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের এমনটাই সতর্কবার্তা দিয়েছে কেরল পুলিশ।
গত ১৮ অক্টোবর থেকে প্রথা মেনে পাঁচ দিন পুজোর জন্য শবরীমালার আয়াপ্পা মন্দিরের দরজা খুলেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর মন্দিরের দরজা খুলে গিয়েছে সব বয়সের মহিলাদের জন্যই। কিন্তু, ১০ থেকে ৫০ বছরের ঋতুমতী মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়েই। বিক্ষোভের জেরে গত পাঁচ দিনে ন’জন মহিলাকে মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা ছাড়াও শবরীমালার পবিত্রতা রক্ষা করতে সচেষ্ট হয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। প্রথা ভেঙে মন্দিরে ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশ ঘটলে পুজো বন্ধ করার হুমকি দিয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, পঞ্চাশ বছরের কমবয়সি মহিলাদের প্রবেশ রুখতে মন্দিরের ভিতরে শিবির গড়ে পাহারায় রয়েছেন হাজারেরও বেশি মানুষ। বিক্ষোভে ইন্ধন যোগাতে বিজেপি কর্মীরাই মন্দিরের ভিতরে শিবিরে গেড়ে বসেছেন বলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে তা অস্বীকার করেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: ভারতে প্রথম, পেট্রোলকে টপকে গেল ডিজেলের দাম!
মন্দির কর্তৃপক্ষ ছাড়াও শবরীমালা নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে প্রাচীন প্রথা বজায় রাখতে সচেষ্ট তারা। এ নিয়ে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়ে কেরল বিধানসভায় একটি বিশেষ অধিবেশনের দাবি করেছে রাজ্য বিজেপি। পিছিয়ে নেই কংগ্রেসও। সুপ্রিম কোর্টের রায় বাতিল করতে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে অধ্যাদেশ জারি করে, তার দাবি করেছেন কংগ্রেস বিধায়করা।
আরও পড়ুন: ‘গুলাম’-এর দৃশ্য নকল করে ট্রেনের মুখোমুখি দৌড়! চম্পাহাটিতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল যুবকের দেহ
শুধুমাত্র বিধানসভার অন্দরেই নয়, শবরীমালা রায় নিয়ে রাজ্য জুড়ে এক মাসব্যাপী বিক্ষোভ প্রদর্শনের কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে কেরল বিজেপি-র সাধারণ সচিব কে সুরেন্দ্রন বলেছেন, “এক মাস ধরে শবরীমালা আয়াপ্পা সংরক্ষণ অভিযান করা হবে।” তিনি জানিয়েছেন, মন্দিরে পবিত্রতা রক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে বিজেপি কর্মীরা রাজ্যবাসীর দরজায় দরজায় যাবেন।
শবরীমালা নিয়ে রাজ্য জুড়ে এই বিক্ষোভ-অশান্তি-হিংসার পিছনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-কে দায়ী করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, “অন্যান্য মন্দিরের চেয়ে শবরীমালা স্বতন্ত্র। এই মন্দিরে সমস্ত ধর্মবিশ্বাসের মানুষের প্রবেশাধিকার রয়েছে। সংঘ পরিবার এবং আরএসএস এ বিষয়ে সব সময়ই অসহিষ্ণু। শবরীমালার এই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ঘোচাতে একাধিক বার চেষ্টা করেছে তারা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy