Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
National News

‘বুড়ো’ হচ্ছে দেশ! ৩ দশকে ৩ গুণ হবে প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা

লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে শুক্রবার এ কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া পটেল। জানিয়েছেন, ২০৫০ সালে বিধবা ও অন্যের ওপর নির্ভরশীল প্রবীণ মহিলাদের সংখ্যাও ভারতে বাড়বে উদ্বেগজনক পর্যায়ে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ১৭:১৫
Share: Save:

পা চালিয়ে যেতে যেতে একটু কি তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যাচ্ছি আমরা, ভারতীয় নাগরিকরা? বাড়ছে অন্যের ওপর নির্ভরশীল প্রবীণ মহিলার সংখ্যা?

ভারতে উত্তরোত্তর বাড়ছে প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা। এতটাই যে, দেশের জনসংখ্যা-বৃদ্ধির হার তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না! সামনের ৩২ বছরে দেশে প্রবীণ নাগরিকদের অনুপাত-বৃদ্ধির হারের কাছে আরও বেশি করে পিছু হঠতে হবে জনসংখ্যা-বৃদ্ধির হারকে। ২০৫০ সালে বিধবা ও অন্যের ওপর নির্ভরশীল প্রবীণ মহিলাদের সংখ্যাও ভারতে বাড়বে উদ্বেগজনক ভাবে।

লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে শুক্রবার এ কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া পটেল। জানিয়েছেন, ভারতে ৬০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকের সংখ্যা ২০৫০ সালে গিয়ে পৌঁছবে অন্তত ৩৪ কোটিতে। শুধু তাই নয়, ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের সংখ্যা এ দেশে কমছে। আর বেড়ে চলেছে ৬০ বছর পেরোনো প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা। দ্রুত হারে।

প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা তুলনায় বেশি বাড়বে দেশের কোন কোন রাজ্যে?

পটেল এও বলেছেন, সামনের ৩২ বছরে এ দেশে প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা বেশি বাড়বে তামিলনাড়ু, কেরল, কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশের মতো দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে। একই অবস্থা হবে হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র ও ওড়িশার। তবে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা সেই হারে বাড়বে না।

মোটামুটি একই রকমের তথ্য, পরিসংখ্যান দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। রাষ্ট্রপুঞ্জের পপুলেশন ফান্ড (ইউএনএফপিএ)-এর রিপোর্ট (‘ইন্ডিয়া এজিং রিপোর্ট, ২০১৭’) জানাচ্ছে, আজ থেকে ৩২ বছর পর, ভারতে প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৩১ কোটি ৬৮ লক্ষে। আর ‘হেল্পএজ-ইন্ডিয়া’র সমীক্ষাভিত্তিক পূর্বাভাস, ২০৫০ সালে এ দেশে প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা হবে ৩২ কোটি ৪০ লক্ষ।

আরও পড়ুন- জনসংখ্যা বোঝা না সম্পদ, বুঝতে বুঝতেই আমরা ১ নম্বরের পথে​

আরও পড়ুন- দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মহার সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে

যার মানে, রাষ্ট্রপুঞ্জ ও ‘হেল্পএজ-ইন্ডিয়া’ আজ থেকে ৩২ বছর পর ভারতে প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা যতটা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে, লোকসভায় দেওয়া তথ্যের নিরিখে, সেই সংখ্যা আরও দেড় থেকে আড়াই কোটি বাড়বে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

জনসংখ্যা-বৃদ্ধির চেয়ে বেশি হারে বাড়ছে প্রবীণদের অনুপাত

ভারতে জনসংখ্যা-বৃদ্ধির হার যে প্রবীণ নাগরিকদের অনুপাত-বৃদ্ধির হারের সঙ্গে লড়াইয়ে উত্তরোত্তর পিছু হঠছে, তার ছবি ফুটে উঠেছে ইউএনএফপিএ-র ‘ইন্ডিয়া এজিং রিপোর্ট, ২০১৭’-এ।

ওই রিপোর্ট বলছে, ‘‘২০১৫ সালে অনুপাতের নিরিখে দেশের মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ ছিলেন প্রবীণ ভারতীয় নাগরিকরা। ২০৫০ সালে জনসংখ্যার নিরিখে প্রবীণ নাগরিকদের সেই অনুপাত হবে ১৯ শতাংশ। আর ২০৯৯ সালে গিয়ে সেই অনুপাতটা হবে তখনকার জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশ।’’

রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট এও জানাচ্ছে, ২০০০ থেকে ২০৫০ সালে ভারতে জনসংখ্যা বাড়বে ৫৬ শতাংশ। আর এ দেশে প্রবীণ নাগরিকদের (৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ) সংখ্যা বাড়বে ৩২৬ শতাংশ। জনসংখ্যার নিরিখে ওই সময়ের মধ্যে ৮০ বছর বয়সী মানুষের অনুপাত বাড়বে ৭০০ শতাংশ।

রয়েছে ভারতের পক্ষে কিছু সুখবরও

তবে ভারতের পক্ষে রয়েছে কিছু সুখবরও। সংসদে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে দেওয়া বিবৃতি ও রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট বলছে, ৩২ বছর পর প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যার নিরিখে চিন বা ‘সার্ক’ জোটের দেশগুলির চেয়ে কিন্তু এগিয়ে থাকবে ভারত। ‘একটি শিশু’ নীতির জন্য শিশুর সংখ্যা কমছে চিনে। তাই ২০৫০ সালে চিনের জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশই বুড়িয়ে যাবেন। প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়বে ‘সার্ক’ জোটের অন্য দেশগুলিতেও।

তার মানে, কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যার নিরিখে চিন বা ‘সার্ক’ জোটের দেশগুলি থেকে এগিয়ে থাকবে ভারত।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE