গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
গোয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের মৃত্যুর পর পরিস্থিতিটা যেন আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব কার হাতে তুলে দেওয়া হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে রবিবার রাতেই গোয়ায় ছুটে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। রাতভর দলীয় বিধায়ক এবং বিজেপির শরিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক চলে। তবে সেই বৈঠক থেকে কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি বলেই সূত্রের খবর।
বিজেপি চাইছে তাদের শিবির থেকেই কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে। দলীয় সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে বিশ্বজিত্ রানে এবং প্রমোদ সবন্তের নামও প্রস্তাব করেছেন বিধায়করা। তবে এই সঙ্কটের মুখে দলের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন মহারাষ্ট্র গোমন্তক পার্টির(এমজিপি) বিধায়ক সুধীন ধাবালিকার। বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের ডেপুটি স্পিকার মাইকেল লোবোর দাবি, ধাবালিকার মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য গোঁ ধরে আছেন। রাতভর বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে লোবো বলেন, “বৈঠকে নিতিন গডকড়ীর কাছে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ধাবালিকার।” লোবো আরও জনান, বৈঠকে ধাবালিকার দাবি করেছেন, গোয়াতে বিজেপিকে বহু বার সমর্থন করেছে তাঁর দল। তাই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া হোক। কিন্তু বিজেপি তাঁর এই প্রস্তাবে সায় দেয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন ধাবালিকার।
অন্য দিকে বিজেপির আর এক শরিক দল গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টি (জিএফপি)-ও এই দৌড়ে সামিল হয়েছে। সূত্রের খবর, জিএফপি প্রধান এবং রাজ্যের মন্ত্রী বিজয় সরদেশাইও চাইছেন তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হোক। সরদেশাই বলেন, “রাজ্যে জোট সরকারের ভবিষ্যত্ নিয়ে রাতভর বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়নি। শরিক দলগুলো তাদের মতামত জানিয়েছে।”
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরও পড়ুন: প্রয়াত গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকর
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোয়ার এই রাজনৈতিক সঙ্কটের ফায়দা তুলতে চাইছে কংগ্রেস। এক দিকে কংগ্রেসের সরকার গঠনের তত্পরতা, অন্য দিকে দুই শরিক দলের ‘চাপ’— সব মিলিয়ে তিন কাঁটায় বিদ্ধ গোয়া বিজেপি। যে কাঁটা তুলতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিজেপিকে।
বিজেপি বিধায়ক ফ্রান্সিস ডি’সুজার মৃত্যু এবং দুই কংগ্রেস বিধায়ক সুভাষ শিরোদকার ও দয়ানন্দ সোপতের ইস্তফায় গোয়ার বিধানসভার ৪০টি আসন থেকে সংখ্যাটা কমে দাঁড়ায় ৩৭-এ। পর্রীকরের মৃত্যুর পর এই মুহূর্তে সেই সংখ্যাটা ৩৬। যার মধ্যে ১২টি বিজেপির, কংগ্রেসের ১৪টি আসন। ডি’সুজার মৃত্যুর পরেই তড়িঘড়ি রাজ্যপাল মৃদুলা সিনহাকে চিঠি লেখে কংগ্রেস। এই মুহূর্তে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে তাদের হাতে রাজ্যের ক্ষমতা তুলে দেওয়ার দাবি জানায় তারা। পর্রীকরের মৃত্যুর পর সেই দাবি আরও জোরালো করে তুলেছে তারা। কিন্তু কংগ্রেসের হাতে রাজ্যের ক্ষমতা যাতে কোনও ভাবেই না যায় মরিয়া ভাবে এখন সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় শিবির।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy