Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

চাপ! মোদীর মুখে ভয়ের কথা

কয়েক বছর আগেও যিনি কথায় কথায় ছাপান্ন ইঞ্চি ছাতির জোর দেখাতেন, তাঁর মুখেই এখন ‘ভয়’! 

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫০
Share: Save:

কয়েক বছর আগেও যিনি কথায় কথায় ছাপান্ন ইঞ্চি ছাতির জোর দেখাতেন, তাঁর মুখেই এখন ‘ভয়’!

তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শিয়রে ভোট। কিন্তু মোদীর স্বস্তি কই!

রাফাল-কাণ্ডে দেশের কোণায় কোণায় একটি স্লোগান অসম্ভব জনপ্রিয় করে তুলেছেন রাহুল গাঁধী— ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’। নিজের গায়ে লেগে যাওয়া সেই ‘চোর’ তকমা ঘোচাতেই এখন মরিয়া মোদী। তার সঙ্গে‌ রয়েছে কৃষির দুরবস্থা, ক্রমবর্ধমান বেকারি, পেট্রোপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম-সহ একগুচ্ছ বিষয়। তা নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ রয়েছে। এমনকি সংবাদমাধ্যমকে তাঁর এড়িয়ে যাওয়া নিয়েও নানা কটাক্ষ।

এ সবের গুঁতোয় পাঁচ রাজ্যে হার যথেষ্টই চাপে ফেলেছে। তবু এর পরেও লোকসভায় তিনিই যে আবার জিতে ফিরছেন, সেই মন্ত্র দিতে মোদী আগামিকাল থেকে দু’দিনের দলীয় বৈঠক ডেকেছেন। সে জন্য দিল্লির রামলীলা ময়দানে জড়ো করা হয়েছে হাজার দশেক বিজেপি কর্মীকে।

তার মধ্যেই মোদীর মুখে ভয়ের কথা নিয়ে গুঞ্জন। সদ্য গতকালই মহারাষ্ট্রের এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘কমিশনখোরদের সব বন্ধুরা একজোট হয়ে চৌকিদারকে ভয় পাওয়ানোর স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু মোদী অন্য মাটিতে গড়া। তাঁকে ভয় দেখানো যাবে না।’’

আরও পড়ুন: আয়ুষ্মান মমতা-হীন, নাম করেই আক্রমণ মোদীকে

মোদী হঠাৎ এত ভয়-ভয় কেন বলছেন? কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারির মতে, ‘‘মোদী ভয় পাচ্ছেন বলেই মুখে ভয়ের নাম নিচ্ছেন। কারণ, তিনি দেওয়াল লিখন পড়তে পারছেন। সেখানে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর বিদায় সাফ লেখা আছে।’’

বিরোধীরা বলছেন, এই ভয়ের কারণেই লোকসভা ভোট এগিয়ে আনতে পারেন মোদী। চলতি মাসে মকর সংক্রান্তির পরেই হয়ে যেতে পারে লোকসভার ভোট ঘোষণা। সে কারণে তড়িঘড়ি উচ্চবর্ণের সংরক্ষণের ঘোষণা করে ফেলেছেন। কিন্তু তাতেও বিপদ! বিজেপির উপরে বিলক্ষণ চটছে দলিত-ওবিসিরা। অনেকেই বলছেন, আজকাল মোদী যাতেই হাত দিচ্ছেন, সেটিই ব্যুমেরাং হচ্ছে! বিরোধী দলের এক নেতার কথায়, ‘‘মোদী বরং জ্যোতিষী দেখিয়ে নিজের কোষ্ঠী বিচার করুন। পুজো-আচ্চা, যাগ-যজ্ঞ করুন!’’

বিজেপি নেতারা অবশ্য ভয়ের কথা ওড়াচ্ছেন ফুৎকারে! বরং তাঁরা বলছেন, বিরোধীরাই মোদীকে ভয় পাচ্ছেন। মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের কথায়, ‘‘সংরক্ষণ দিয়ে তো সবে শুরু। এখন আরও ছক্কা হাঁকাবেন নরেন্দ্র মোদী। অপেক্ষা করুন।’’ ভোট এগোনোর গুঞ্জনও ওড়িয়ে তাঁরা বলছেন, মার্চ পর্যন্ত দলের প্রচারের কর্মসূচি তৈরিই আছে। বড়জোর বাজেট অধিবেশনের পরে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ভোট ঘোষণা হলে এপ্রিল-মে নাগাদ ভোট হবে। পাঁচ বছর আগে ভোট ঘোষণা হয়েছিল মার্চের প্রথম সপ্তাহে।

গত কাল সংসদের অধিবেশন শেষ হতেই সব নেতাদের ভোটের জন্য ঝাঁপাতে নির্দেশ দিয়েছেন মোদী-অমিত শাহ। মন্ত্রীদের রাজ্য ধরে ধরে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি। যার ফলে আগামী দু’দিনের সম্মেলনের পরে দিল্লিতে মন্ত্রীদের মন্ত্রকের কাজের পাট কার্যত চুকতে চলেছে। কারণ, ভোটের কাজেই অনেকটা সময় দিতে হবে তাঁদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE