তেলুগু দেশম পার্টি-র প্রতিষ্ঠাতা এ টি রামা রাওয়ের সঙ্গে চন্দ্রবাবু নায়ডু। —ফাইল চিত্র।
তেলুগুভাষীদের আত্মসম্মান বাঁচাতে প্রয়াত স্বামীর শরণাপন্ন হলেন এন টি রামা রাওয়ের স্ত্রী লক্ষ্মী পার্বতী। একটি খোলা চিঠিতে স্বামীকে ‘পুনর্জন্ম নিতে অনুরোধ’ করলেন তিনি। কারণ, চিরশত্রু কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের মানুষেরও আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সম্প্রতি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেছে এন চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। লক্ষ্মী পার্বতীর মতে, যে আদর্শের উপর ভিত্তি করে ১৯৮২-তে টিডিপি গ়ড়েছিলেন এন টি আর, তা থেকে সরে এসেছেন এখনকার টিডিপি প্রেসি়ডেন্ট চন্দ্রবাবু নায়ডু। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে সেই আদর্শও বিসর্জন দিয়েছেন টিডিপি প্রেসি়ডেন্ট। এতে কলুষিত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। তাই অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করতে এ মুহূর্তে এন টি আরের মতো ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন বলে মনে করেন লক্ষ্মী পার্বতী। প্রয়াত স্বামীর কাছে তাই পুনর্জন্মের অনুরোধ।
অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য রাজনীতির ইতিহাসে শুরু থেকেই কংগ্রেস এবং টিডিপি-র অহি-নকুলের সম্পর্ক ছিল। ’৮২-তে টিডিপি গঠনের মাত্র ন’মাস পরই অন্ধ্রপ্রদেশে কংগ্রেসের একাধিপত্য খর্ব করে প্রথম বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন এন টি আর। এর পর রাজ্য রাজনীতিতে বহু জল গড়িয়েছে। ১৯৯৩ লক্ষ্মী পার্বতীকে বিয়ে করার কয়েক মাসের মধ্যেই বিপুল ভোটে জিতে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসেন এন টি আর। কিন্তু, টিডিপি-র সুখের সংসারে আগুন লাগে সেই নয়ের দশকেই। দলীয় কাজে লক্ষ্মী পার্বতী নাক গলাচ্ছেন, এই অভিযোগে এন চন্দ্রবাবু নায়ডুর নেতৃত্বে বিদ্রোহ করেন তাঁর অনুগামীরা। এর পর ১৯৯৫-এ অগস্টে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন চন্দ্রবাবু। ১৯৯৬-এ এন টি আরের মৃত্যুর পর রাজনীতি থেকে কার্যত সন্ন্যাস নিয়ে নেন লক্ষ্মী পার্বতী। কিন্তু ফের রাজ্য রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। ২০১৪-তে ওয়াইএসআর কংগ্রেসে যোগ দেন লক্ষ্মী পার্বতী।
আরও পড়ুন: ‘মোদী অ্যানাকোন্ডার মতো...’, তোপ চন্দ্রবাবু সরকারের অর্থমন্ত্রীর
আরও পড়ুন: রামের মূর্তিটা আরও বেশি উঁচু হোক: আজম খান
বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াই করতে জোটবদ্ধ টিডিপি এবং কংগ্রেস। ছবি: পিটিআই।
চলতি বছরের গোড়ায় এনডিএ থেকে সরে আসে শরিক দল টিডিপি। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অন্ধ্রপ্রদেশকে বঞ্চনা করার অভিযোগ এনে সরব হন টিডিপি সাংসদেরা। এর পর থেকে রাহুল গাঁধীর কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। শেষমেশ কংগ্রেসেরই হাত ধরেন চন্দ্রবাবু। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানো নিয়ে চন্দ্রবাবু বরাবরই দাবি করে এসেছেন, ‘গণতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতা’র জন্যই রাহুল গাঁধীর দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন তিনি। চন্দ্রবাবু বলেছেন, “অতীতকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। বিজেপি-কে পরাজিত করার জন্য অতীত নিয়ে নয়, ভবিষ্যতের কথা বলব।”
আরও পড়ুন: ‘পাশে আছি’, মমতার বার্তা নিয়ে তিনসুকিয়ায় নিহতদের বাড়িতে ডেরেকরা
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরেই রাম মন্দির তৈরির কাজ শুরু করতে হবে, হুঙ্কার সাধুদের
রাজ্য রাজনীতির এই হাওয়াবদলে এন টি আরের স্মারকসৌধে নিঃশব্দে বসে থেকেছেন ৬৪ বছরের লক্ষ্মী পার্বতী। তাঁর কথায়, “আমি সে দিনের অপেক্ষায় রয়েছি, যে দিন অন্ধ্রপ্রদেশের মানুষ তাঁদের আত্মসম্মান ফিরে পাবেন।”
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy