সানাউলিতে খোঁজ চালাচ্ছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।
মহাভারতের সময়কাল নিয়ে নতুন দিশা দেখাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের সানাউলি ও চন্দায়ন। ১১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নয়, এই দুই স্থানে সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া ধ্বংসাবশেষ বলছে, মহাভারতের সময়কাল ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। আর এ নিয়েই নৃতত্ত্ববিদ ও গবেষকদের মধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এত দিন পর্যন্ত অনুমান করা হচ্ছিল মহাভারতের সময়কাল ১১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। হস্তিনাপুর এবং সানাউলিতে উদ্ধার হওয়া ‘পেন্টেড গ্রে ওয়্যার’-এর সঙ্গে সম্পর্ক টেনে এত দিন পর্যন্ত ওই সময়কালটাই মহাভারতের বলে দাবি করেছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক বি বি লাল এবং এস কে মঞ্জুল। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের এই আবিষ্কার নৃতত্ত্ববিদ লালের দাবিকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে গিয়েছে। ‘পেন্টেড গ্রে ওয়্যার’ নয়, এই আবিষ্কার কিন্তু ‘অকার কালারড পটারি’ সংস্কৃতিকেইমহাভারতের সময়কালের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছে। ব্রোঞ্জ যুগের এই সংস্কৃতির বিস্তার ছিল পূর্ব পঞ্জাব থেকে উত্তর-পূর্ব রাজস্থান এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত।
‘পেন্টেড গ্রে ওয়্যার’ সংস্কৃতির সময়কাল আনুমানিক ১২০০-৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। সানাউলি ও হস্তিনাপুরে যে প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিসগুলো উদ্ধার হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে নানা রকম অস্ত্র যেমন— তির, বল্লম এবং কৃষিকাজে ব্যবহৃত নানা যন্ত্রপাতি। তবে কোনও রথ বা রথের চাকা পাওয়া যায়নি।কিন্তু মহাভারতের সময়কালে রথের উল্লেখ রয়েছে। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রেরও উল্লেখ রয়েছে। সে দিক থেকে দেখতে গেলে ‘পেন্টেড গ্রে ওয়্যার’ সংস্কৃতি কিন্তু সেই সময়কার নয়। তারও আগের। আর এখান থেকেই নতুন দিশা খোঁজার চেষ্টা করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সানাউলি ও চন্দায়নে যে জিনিসগুলো উদ্ধার হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, হারপুন, ছুরি, ঢাল এবং আধুনিক রথ। যার সঙ্গে মিল রয়েছে ‘অকার কালারড পটারি’ সংস্কৃতির।
আরও পড়ুন: ব্রিটিশ দম্পতির মধুচন্দ্রিমা স্মরণীয় করতে নীলগিরির গা বেয়ে ছুটল ট্রেন
আরও একটা উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, মহাভারতে হস্তিনাপুরের উল্লেখ থাকলেও সানাউলির কোনও উল্লেখ নেই সেখানে। কিন্তু এই সানাউলিতে ‘অকার কালারড পটারি’ সংস্কৃতির অস্তিত্ব মিলেছে। আর এখানে যে জিনিসগুলো উদ্ধার হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে আধুনিক রথ। ফলে দুইয়ে দুইয়ে চার হওয়ার একটা ইঙ্গিত দিচ্ছে এই সানাউলি। উল্লেখ না থাকলেও সানাউলিতে আবিষ্কার হওয়া জিনিসগুলো মহাভারতের সময়কালের সঙ্গে মিল থাকায় প্রত্নতত্ত্ববিদরা মনে করছেন, ১১০০ নয়, ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দই মহাভারতের সময়কাল। তবে এ নিয়ে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন বলেই জানিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদ এস কে মঞ্জুল। এখনই ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দকে মহাভারতের সময়কাল বলে চিহ্নিত করা উচিত হবে না বলেই মনে করছেন তিনি। অন্য দিকে, বি বি লালের মতে, সানাউলির কোনও উল্লেখই ছিল না মহাভারতে। সুতরাং ‘অকার পটারি’ আর মহাভারতের সময়কালকে জুড়ে দেওয়া ঠিক নয়।
আরও পড়ুন: নোটবন্দি নিয়ে চুপ, মোদীর নিশানায় ‘নামদার’
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy