ভীমা-কোরেগাঁওয়ে জমায়েত হয়েছেন দলিত সম্প্রদায়-সহ বহু মানুষ। ছবি: সংগৃহীত।
এক বছর আগে ভীমা-কোরেগাঁওয়ে দলিতদের উপর হিংসার পুনরাবৃত্তি রুখতে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হল পুণেকে।
ভীমা-কোরেগাঁও লড়াইয়ের ২০১তম বার্ষিকী উদ্যাপনে লক্ষাধিক লোকের ভিড় হতে পারে মহারাষ্ট্রের পুণেতে। ১৮১৮ সালে ১ জানুয়ারি মরাঠা পেশোয়াদের বিরুদ্ধে দলিত সেনানীদের জয়কে ‘বিজয় দিবস’ হিসাবে পালন করতে প্রতি বছরই পুণে থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ভীমা-কোরেগাঁওয়ে জমায়েত হন দলিত সম্প্রদায়-সহ বহু মানুষ।
গত বছরেও ভীমা-কোরেগাঁও এলাকায় গোটা রাজ্য থেকে জমায়েত হয়েছিলেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষজন। সেখানেই উচ্চ বর্ণের সঙ্গে দলিতদের সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু হয়। এর পর দলিতদের ডাকে মহারাষ্ট্র বন্ধে তিন দিন ধরে কার্যত অচল হয়ে পড়ে রাজ্য। ওই হিংসার ঘটনার তদন্তে দেশের বড় বড় শহরে অভিযানে নামে রাজ্য পুলিশের বিশেষ বাহিনী। অভিযান হয় ফরিদাবাদ, গোয়া, মুম্বই, ঠাণে, রাঁচি, হায়দরাবাদের মতো শহরে। এর পর ফরিদাবাদ থেকে সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ এবং হায়দরাবাদ থেকে কবি ও মানবাধিকার কর্মী ভারাভারা রাওকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়াও জেলে ঢোকানো হয় গৌতম নাভলাখা, অরুণ ফেরেরা, ভার্নন গঞ্জালভেসকে। এ ছাড়া রাঁচিতে ফাদার স্ট্যান স্বামীর বাড়িতেও অভিযান হয়। ধৃতদের উস্কানিতেই হিংসা ছড়িয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ। ওই গ্রেফতারিতে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
মঙ্গলবার সকাল থেকেই মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভীমা-কোরেগাঁওতে জমায়েত হতে শুরু করেছেন দলিত-সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষেরা। গত বছরের হিংসার ঘটনা যাতে ফের না ঘটে, তার জন্য এ বার সতর্ক রাজ্য প্রশাসন। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদার করেছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: আগে আমার সম্প্রদায়, তার পরে জনগণের কাজ করব! বিতর্কিত মন্তব্য রাজস্থানের মন্ত্রীর
গত বছর ভীমা-কোরেগাঁও এলাকায় হিংসার পর তা ছড়িয়ে পড়ে মহারাষ্ট্রে। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্র পুলিশ জানিয়েছে, ৫ হাজার পুলিশকর্মী, ১২ হাজার হোমগার্ড ছাড়াও র্যাফ এবং রাজ্য পুলিশ মিলিয়ে ১২ কোম্পানি কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে গোটা রাজ্যে। এ ছাড়া, ভীমা-কোরেগাঁও এবং তার আশপাশের এলাকায় নজরদারিতে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা যাতে কোনও রকমেই অশান্তি ছড়াতে না পারে সে দিকেও কড়া নজর রয়েছে রাজ্য প্রশাসনের। সে জন্য বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য গোপন ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সেলুলয়েড থেকে এ বার রাজনীতির ময়দানে প্রকাশ রাজ
পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ইতিমধ্যেই ১২ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ভীমা-কোরেগাঁও এবং তার আশপাশের এলাকায় তাঁদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন কট্টর দক্ষিণপন্থী নেতা মিলিন্দ একবোটে এবং বামপন্থী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী কবীর কলা মঞ্চ (কেকেএম)। এ ছাড়া, অনেককে এ দিন জেলা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ দিন অগণিত মানুষের সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দলিতদের স্মৃতি-সৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন বি আর অম্বেডকরের নাতি তথা দলিত নেতা প্রকাশ অম্বেডকরও।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy