বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারকাজ চলছে। মহারাষ্ট্রে। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
গত কয়েক দিনের লাগাতার বর্ষণে প্রায় বানভাসি গোটা দেশ। ডুবু ডুবু অবস্থা মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, কেরল ও ওড়িশার। বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, উত্তরপ্রদেশেও। বানভাসি হয়েছে তামিলনাড়ুর একটি বড় অংশ। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গৃহহীন ও নিখোঁজের সংখ্যাও।
মহারাষ্ট্র
সবচেয়ে করুণ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। ঘর-বাড়ি জলের তলায় চলে যাওয়ায় এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ১ লক্ষ ৩২ হাজার মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্রাম তো বটেই, ভেসে গিয়েছে বহু শহর ও মফস্সল এলাকাও। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দু’টি জেলা। কোলহাপুর ও সাংলি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, লাগাতার প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় গত সাত দিনে পশ্চিম মহারাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৬ জনের। জলের তোড়ে ভেঙে যাবে বলে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে জল ছাড়া হয়েছে নাসিক বাঁধ থেকে। তাতে ডুবু ডুবু অবস্থা নাসিক ও তার লাগোয়া এলাকাগুলির। ভেসে গিয়েছে কোয়েনা ও উজনি নদী।
সমুদ্রের উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন মানুষ? কেরলের মালাপ্পুরম। ছবি- পিটিআই
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস জানিয়েছেন, সাধারণত চার মাসে গড়ে যে পরিমাণে বৃষ্টি হয়, গত ১৫ দিনে ততটাই বৃষ্টি হয়েছে নাসিকে। সাংলি জেলা থেকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৫৩ হাজার মানুষকে। আর ৫১ হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে কোলহাপুর থেকে। মন্দির শহর সোলাপুরও বানভাসি হয়ে পড়েছে। বন্যায় ভেসে যাওয়া কোলহাপুরের চিকালি গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দু’শোরও বেশি মানুষকে।
আরও পড়ুন- বৃষ্টিতে থমকে ট্রেন, অন্তঃসত্ত্বাকে নিতে প্ল্যাটফর্মে অটো
আরও পড়ুন- চলছে কার্ফু, দোকান-বাজার-এটিএম বন্ধ, রাতেই প্রতিবাদ, কাশ্মীরে চলছে কাঁদানে গ্যাস
মুম্বই ও পুণে ডিভিশনে মধ্য রেলের বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। তাদের যাত্রাপথও বদলানো হয়েছে। মিরাজ-লন্দ সেকশনে বহু ট্রেন বাতিল করেছেন দক্ষিণ রেল কর্তৃপক্ষ। কোলহাপুরের সি শাহামহারাজ টি রেলওয়ে স্টেশন থেকে মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস রেলস্টেশন পর্যন্ত বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
জলেই জীবন! ছবি-পিটিআই
কেরল
প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় কার্যত বেহাল হয়ে পড়েছে তিনটি জেলা ইদুক্কি, মালাপ্পুরম ও কোঝিকোড়-সহ কেরলের একটি বিস্তীর্ণ অংশ। ওই তিনটি জেলায় জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট। ত্রিচূড়, পালাক্কাড়, ওয়েইনাড়, কান্নুর ও কাসারগড়ে জারি হয়েছে অরেঞ্জ অ্যালার্ট। রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মালাপ্পুরম জেলা। বাড়ির উপর বড় গাছ আছড়ে পড়ায় মালাপ্পুরমে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। জেলায় শস্যেরও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তামিলনাড়ু
প্রবল বর্ষণে কোয়মবত্তুর রেলস্টেশনে পার্সেল ভবনটি ভেঙে পড়ায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন তিন জন। তামিলনাড়ুর মেট্টুপালায়ামে পিল্লুর বাঁধ থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার ফলে ভবানী নদী ও তার লাগোয়া এলাকাগুলি বানভাসি হয়েছে।
দ্বীপের নাম কোলহাপুর? আকাশ থেকে তোলা পিটিআইয়ের ছবি
ওড়িশা
ওড়িশার বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ। বন্যায় রাস্তার বড় একটি অংশ ডুবে যাওয়ায় এক আসন্নপ্রসবা ও দুই শিশু-সহ পাঁচ জনকে উদ্ধার করতে হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) জওয়ানদের। বন্যায় খৈরাপুতের মাঝিগুড়া ও কেন্দুগুড়া বাকি রাজ্য থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গজপতি জেলায় কাশিনগর থেকে কিদিগান পর্যন্ত সড়কটি বন্যায় পুরোপুরি ভেসে গিয়েছে। তার ফলে এলাকা থেকে সাড়ে ছ’শোরও বেশি মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ
উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে রাজ্যে কম করে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশির ভাগেরই মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে, হারদোয়েইয়ে। এক জনের মৃত্যু হয়েছে গোরক্ষপুরে। গৌতম বুদ্ধ নগরে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। বুলন্দশহর ও কানপুরেও মৃত্যু হয়েছে দু’জনের।
ছত্তীসগঢ়
ছত্তীসগঢ়েও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে অন্তত পাঁচটি জেলায়। তাদের মধ্যে রয়েছে রায়পুর, মহাসমুন্দ, গরিয়াবান্দ, ধামতারি ও বালোদাবাজারে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণ হতে পারে নারায়ণপুর, বস্তার, বিজাপুর, সুকমা ও দন্তেওয়াড়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy