তিন যমজ সন্তান কোলে গর্বিত স্বপ্না ক্ষেত্রপাল। —নিজস্ব চিত্র।
অ্যাসবেস্টসের চাল। মাটির বাড়ি। দেওয়ালে দেওয়ালে অভাবের ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু সুব্রত ক্ষেত্রপাল এবং স্বপ্না ক্ষেত্রপালের বাড়িতে খুশির অভাব নেই। বুধবার মাটির উঠোনে প্রতিবেশীদের ভিড়। সবাই তিন ফুটফুটে শিশুকে কোলে নিতে চান। উঠোনে বসে লাজুক হাসছেন সদ্য তিন সন্তানের জন্ম দেওয়া স্বপ্না। তাঁকে ঘিরে ভিড় প্রতিবেশী কাকিমা-জেঠিমা, দিদি-বৌদিদের। স্বপ্নার মা এবং দিদিমা যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। সেই ‘ধারা’ বজায় রেখে একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন হুগলির বৈঁচিগ্রামের ওই বধূ।
গত ১৭ জানুয়ারি পূর্ব বর্ধমানের কালনার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল অন্তঃসত্ত্বা স্বপ্নাকে। ওই দিন বিকেলে তিন পুত্রসন্তান প্রসব করেন বধূ। নার্সিংহোম থেকে বুধবারই বৈঁচিগ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন স্বপ্না। সঙ্গে তিন নতুন সদস্য। স্বপ্না তিন সন্তানের নাম দিয়েছেন নিজে। বড় ছেলের নাম অঙ্কিত, মেজোর নাম আদি, আর ছোটর নাম অগ্নি। একসঙ্গে তিন অতিথির আগমনে খুশি উপচে পড়েছে মাটির বাড়িতে। তিন সন্তানের বাবা দিনমজুর সুব্রত চারচাকার গাড়ি ভাড়া করেছিলেন। ফুল-বেলুন সাজিয়ে স্ত্রী এবং তিন পুত্রকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি এনেছেন তিনি। গোটা পাড়াকে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন।
স্বপ্না বলেন, ‘‘দিদিমার দুই মেয়ে ছিল যমজ। তার মধ্যে একজন আমার মা গঙ্গা। মায়ের ছয় সন্তান। তাদের মধ্যে দুই পুত্রসন্তান যমজ। ঘটনাচক্রে আমারও তিন সন্তান হল।’’ বড়, মেজো, ছোট বলে তাদের নাম দিয়েছেন। কিন্তু কোন সন্তানের জন্ম আগে হয়েছে, সেটা স্বপ্না জানেন না। ক্ষেত্রপাল দম্পতির কথায়, ‘‘সন্তানরা যেন দুধে ভাতে থাকে। সকলে আশীর্বাদ করুন।’’ স্বপ্না এ-ও জানান, দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকার সময়ে তিনি জানতে পারেন গর্ভে তিনটি সন্তান রয়েছে। তখন থেকে সব রকম সাবধানতা অবলম্বন করেন। মাস দেড়েক বাকি থাকতেই অস্ত্রোপচারের সাহায্যে তিন সন্তানের জন্ম দেন। স্বপ্নার মা গঙ্গা এসেছেন নাতিদের দেখতে। একগাল হেসে তিনি বলেন, ‘‘আমার মায়ের যমজ সন্তান হয়েছিল। আমারও যমজ সন্তান হয়েছে। এখন আমার মেয়ের তিনটে সন্তান হয়েছে। মেয়ে, তিন নাতি ভাল আছে। বাড়ির সবাই ভীষণ খুশি।’’
বংশপরম্পরায় যমজ সন্তানের জন্মের ক্ষেত্রে জিনের কি ভূমিকা থাকে? পেশায় বিজ্ঞানী পার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘এমনটা দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রেই বংশপরম্পরায় তিন-চার প্রজন্মের মধ্যে যমজ সন্তান হয়েছে। তবে এ নিয়ে নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy