আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সেখানে একেবারে প্রথম সারিতে বসে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই ছবি কি কিছু ইঙ্গিত দেয়?
প্রেসিডেন্ট হয়ে কার্যত ঘোড়া ছোটাতে শুরু করে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় ইনিংসে যে তিনি হাত খুলে খেলবেন, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট। স্পষ্ট আরও এক ইঙ্গিত। Trump 2.0-তে চিনকে চাপে রাখতে ট্রাম্পের ট্রাম্পকার্ড হতে চলেছেন ‘ডিয়ার ফ্রেন্ড’ মোদী। শপথগ্রহণ সমারোহে অতিথিদের বসার জায়গার তাই ভিন্ন ব্যঞ্জনা। শুল্ক বা অভিবাসন সংক্রান্ত ছুটকোছাটকা বিষয় বাদ দিলে যত দিন গড়িয়েছে ভারত-আমেরিকার বন্ধুত্ব ততই পোক্ত হয়েছে। ট্রাম্পের প্রথম জমানাও তার ব্যতিক্রম নয়। মোদী এবং ট্রাম্প— দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বন্ধুত্বও বিশ্বে চর্চার বিষয়। কিন্তু খটকা ছিল চিন। মনে করা হত যে, চিনের সঙ্গে আমেরিকার কুস্তি যত বাড়বে, নয়াদিল্লির সঙ্গে ওয়াশিংটনের দোস্তি ততই গভীর হবে। নিজের দ্বিতীয় ইনিংসে সেই চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে এক নতুন খাতে বইয়ে নিয়ে যেতে চান ট্রাম্প। কিন্তু কৌশলগত ক্ষেত্রে ট্রাম্প যে শি জিনপিংকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বেন না, তা স্পষ্ট হয়ে গেল শপথগ্রহণের অব্যবহিত পরেই। চিনের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল নয় আমেরিকার। তাইওয়ান থেকে রাশিয়া— বার বার তা প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। বাইডেনের জমানায় সেমিকন্ডাক্টর শিল্প নিয়ে কার্যত রণহুঙ্কার ছোড়ে আমেরিকা। স্পিকার ন্যান্সি প্যালোসির তাইওয়ান সফর দু’দেশের মধ্যে জ্বলে ওঠা আগুনকে আরও উস্কে দেয়। এই প্রেক্ষিতে ট্রাম্প-রাজে দুনিয়ার প্রথম এবং দ্বিতীয় অর্থনীতির লড়াই আরও প্রবল হওয়ার সম্ভাবনা। কারণ, ট্রাম্পের শুল্কনীতি। আর এতেই লাভ দেখছে ভারত।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একচেটিয়া আগ্রাসন রুখতে ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো চার দেশ মিলে তৈরি ‘কোয়াড’ অক্ষকে শুরু থেকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন ট্রাম্প। তার স্পষ্ট ইঙ্গিত, আমেরিকার নতুন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োর কোয়াডভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক। ফলে আপাতত চিন-শঙ্কা কম ভারতের। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেও কোয়াডের রমরমা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তাতে আখেরে ভারতের লাভ।
সে দিক থেকে চিন্তার কিছু না থাকলেও ট্যারিফ বা শুল্কপ্রেমী ট্রাম্পকে নিয়ে ভারতের মাথাব্যথা এখনই যাওয়ার নয়। প্রধানত চিনকে সবক শেখাতে সে দেশের জিনিসপত্রের উপর বিপুল শুল্ক চাপাতে চলেছেন ট্রাম্প। চিনের উপর ট্রাম্পের রাগের মাসুল গুনতে হবে ভারতকেও। সামগ্রিক ভাবে তার প্রভাব পড়বে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতিতে। সেই চাপ কী ভাবে সামলাচ্ছে ভারত এবং চিন, তার উপরেই নির্ভর করছে অনেক কিছু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy