ও পি রাওয়ত। ছবি: পিটিআই।
আড়াই মাস ধরে লাগাতার বাড়তে থাকা তেলের দামে আচমকা ‘ব্রেক’ কষার পরেই আলোচনায় উঠে এসেছিল পাঁচ রাজ্যের ভোট। সেই হিসেব মিলিয়ে আজই নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা ও মিজোরামের বিধানসভা ভোট দীপাবলির পরে। দিন ক্ষণও জানিয়ে দিয়েছে তারা। আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে এই নির্বাচনকে সেমিফাইনাল হিসেবে দেখছে সব দলই।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও পি রাওয়ত আজ জানান, মাওবাদী সমস্যার কারণে ছত্তীসগঢ়ে দু’দফায় ভোট হবে। ১২ নভেম্বর দক্ষিণ ছত্তীসগঢ়ের ১৮টি কেন্দ্রে এবং ২০ নভেম্বর বাকি ৭২টি কেন্দ্রে ভোট হবে। মধ্যপ্রদেশ এবং মিজোরামে ভোট হবে ২৮ নভেম্বর। রাজস্থান ও তেলঙ্গানায় ৭ ডিসেম্বর। পাঁচ রাজ্যের ফল ঘোষণা হবে ১১ ডিসেম্বর।
এই পাঁচটির মধ্যে হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্য— মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থানে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে। তেলঙ্গানায় চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএস এবং মিজোরামে কংগ্রেস ক্ষমতায়। ৪০ আসনের মিজোরামকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি। কারণ, সেখানে জিতলে উত্তর-পূর্বের ৭টি রাজ্যই তাদের দখলে আসবে।
গো-বলয়ে বিজেপির দখলে থাকা তিন রাজ্যে জিততে মরিয়া কংগ্রেস। রাহুল গাঁধী জানেন, লড়াইটা কঠিন। কিন্তু জিতলে লোকসভা ভোটের আগে অনেক বেশি চনমনে হয়ে মোদী-বিরোধী লড়াইয়ে নামা যাবে। দ্বিতীয়ত, মোদী-বিরোধী জোট গড়ার ক্ষেত্রেও বাড়তি সুবিধে পাবে কংগ্রেস। লক্ষ্যপূরণে গত কয়েক মাস ধরে একাধিক পদক্ষেপ করেছেন রাহুল। সেগুলি সফল হয় কিনা, তারও পরীক্ষা হতে চলেছে আসন্ন নির্বাচনে।
লোকসভার আগে কঠিন পরীক্ষা মোদী-অমিত শাহেরও। ‘অচ্ছে দিন’ নিয়ে সব মহলের বিদ্রুপ, নোট বাতিলের ফলে অর্থনীতির আরও বেহাল দশার কারণে মোদীর জনপ্রিয়তা এমনিতেই নিম্নমুখী। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পেট্রোপণ্যের চড়া দাম, টাকার দামের রেকর্ড পতন এবং রাফাল দুর্নীতির অভিযোগ। বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষাই বলছে, রাজস্থানে সরকার ধরে রাখা কঠিন। মধ্যপ্রদেশ বা ছত্তীসগঢ়েও ভাল খবর নেই।
আরও পড়ুন: ঘোষণার সময় পিছিয়ে গুরুতর প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন
এই ধারণার আঁচ মিলেছে এবিপি নিউজের সমীক্ষাতেও। তারা জানিয়েছে, ৯০ আসনের ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস পেতে পারে ৪৭টি আসন, বিজেপি ৪০টি। মধ্যপ্রদেশেও ১৫ বছর পরে ক্ষমতা হারাতে পারে বিজেপি। সমীক্ষা বলছে, ২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশে বিজেপি পেতে পারে ১০৮ আসন, কংগ্রেস ১২২টি। ২০০ আসনের রাজস্থানে কংগ্রেস ১৪২টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে বলে অনুমান সমীক্ষায়। সেখানে বিজেপি থমকে যেতে পারে ৫৬-য়। যদিও এটাও ঠিক, জনমত সমীক্ষার ভিত্তিতে ভোটের ভবিষ্যৎ আগাম বলা সম্ভব নয়। কিন্তু ভোটদাতাদের প্রবণতার ইঙ্গিত ওই সমীক্ষা থেকে পাওয়া যায়।
গো-বলয়ের তিন রাজ্যে ফল খারাপ হলে তার প্রভাব যে সরাসরি লোকসভায় পড়বে, তা ভালই জানে বিজেপি। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের দাবি, ‘‘পাঁচ রাজ্যেই আমরা জিতব। মোদী হাওয়া যে রয়েছে, তা ফের প্রমাণ হবে।’’
তেলঙ্গানায় টিআরএস নেতা চন্দ্রশেখর রাওয়ের চ্যালেঞ্জ সরকার ধরে রাখা। মিজোরামে গত বার জিতেছিল কংগ্রেস। এই রাজ্যকেও কংগ্রেস-মুক্ত করতে মরিয়া বিজেপি।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy