দেশের মোট আক্রান্তের ৮২ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দৈনিক সংক্রমণ নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আবদ্ধ রয়েছে। রোজ সেই সংখ্যাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে সুস্থ হয়ে ওঠা। যার জেরে কমছে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা। গত কয়েক দিনে দেশের করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিসংখ্যানটা অনেকটা এ রকমই।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৮৫ হাজার ৩৬২ জন। গতকালের থেকে প্রায় এক হাজার কম। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৫ হাজার ৭৪ ও ৩১ হাজার ৯১১। গত দেড় মাস ধরেই ওই দু’টি দেশের তুলনায় ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি।
বাড়তে বাড়তে দেশের মোট আক্রান্ত ৫৯ লক্ষ ছাড়াল। এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯ লক্ষ ৩ হাজার ৯৩২ জন। সেখানে বিশ্বের আক্রান্তের তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৭০ লক্ষ ৩২ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৪৬ লক্ষ ৮৯ হাজার।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার হার ভারতে শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৪৮ লক্ষ ৪৯ হাজার ৫৮৪ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের ৮২ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৯৩ হাজার ৪২০ জন। এখন ভারতে অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছেন ন’লক্ষ ৬০ হাজার ৯৬৯ জন।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। কয়েক মাস সাত-আট শতাংশের উপরে ঘোরাঘুরি করার পর গতকাল তা পাঁচ শতাংশে নেমেছিল। আজ একটু বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ৬.৩৬ শতাংশে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে ১৩ লক্ষ ৪১ হাজার ৫৩৫ জনের। গত কাল হয়েছিস ১৪ লক্ষেরও বেশি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় ভারতে মৃত্যুর হার কম হলেও, ৯০ হাজার ছাড়়িয়েছে এবং তা দিন দিন বেড়ে চলেছে। সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকেই রোজ এক হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কাড়ছে করোনাভাইরাস। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৮৯ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৯৩ হাজার ৩৭৯ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে করোনা। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ৩৪ হাজার ৭৬১ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু ন’হাজার ছাড়িয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ৪১৭। অন্ধ্রপ্রদেশে করোনা প্রাণ কেড়েছে ৫ হাজার ৬০৬ জনের। উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লিতে মোট মৃত্যু পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গ (৪,৬৬৫), গুজরাত (৩,৩৯৩), পঞ্জাব (৩,১৩৪) ও মধ্যপ্রদেশ (২,১৫২) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। রাজস্থান, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা ও জম্মু ও কাশ্মীরের মোট মৃত্যুও এক হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরী, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মোট আক্রান্তের তালিকায় শুরু থেকেই দেশের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। দেশের মোট আক্রান্তের ২০ শতাংশেরও বেশি সেখানে। এখনও অবধি ১৩ লক্ষ জন আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। ছ’লক্ষ ৬১ হাজার আক্রান্ত নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অন্ধ্রপ্রদেশ। তামিলনাড়ু ও কর্নাটকে মোট আক্রান্ত যথাক্রমে পাঁচ লক্ষ ৬৯ হাজার ও ৫ লক্ষ ৫৭ হাজার। উত্তরপ্রদেশে সংখ্যাটা তিন লক্ষ ৭৮ হাজার। দিল্লিতেও আড়াই লক্ষ ছাড়িয়েছে মোট আক্রান্ত সংখ্যা। পশ্চিমবঙ্গে এখনও অবধি দু’লক্ষ ৪১ হাজার জন সংক্রমিত হয়েছেন। ওড়িশাতে গত কয়েক দিন ধরেই বল্গাহীনভাবে বেড়ে মোট আক্রান্ত আজ ২ লক্ষ ছাড়াল। তেলঙ্গানাতে তা এক লক্ষ ৮৩ হাজারে। গত কয়েক সপ্তাহে বিহারে (১.৭৫ লক্ষ) কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে করোনা সংক্রমণ। অসম (১.৬৭ লক্ষ), কেরল (১.৬০ লক্ষ), গুজরাত (১.৩০ লক্ষ), রাজস্থান (১.২৪ লক্ষ), হরিয়ানা (১.২০ লক্ষ), মধ্যপ্রদেশে (১.১৭ লক্ষ) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। পঞ্জাবেও মোট আক্রান্ত এক লক্ষ পেরিয়েছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখন্ড, গোয়া, পুদুচেরি, ত্রিপুরা, হিমাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলি।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ১৯০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৪১ হাজার ৫৯ জন। যদিও এর মধ্যে দু’লক্ষ ১১ হাজার রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন চার হাজার ৬৬৫ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy