শিখ দাঙ্গায় দোষী সাব্যস্ত কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমার। —ফাইল চিত্র।
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে জয়জয়কারের পালা মিটতে না মিটতেই বড়সড় ধাক্কা কংগ্রেসে। শিখ দাঙ্গায় অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং এর মধ্যে দিল্লি ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেন না তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর পর জনতাকে শিখদের বিরুদ্ধে উস্কে দিয়েছিলেন তিনি এবং দিল্লির রাজ নগরের এক পরিবারের ৫ সদস্যকে খুনেরও অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে।
৩১ অক্টোবর ১৯৮৪। শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে মৃত্যু হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর। তার পর সারা দেশ জুড়ে শিখ বিরোধী জনরোষ তৈরি হয়। যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছিল দিল্লিতে। সেই দাঙ্গায় ২,৮০০ জন শিখকে হত্যা করা হয়। শুধু দিল্লিতে মৃত্যু হয় ২,১০০ জনের। শিখদের বিরুদ্ধে এই দাঙ্গাতেই অভিযুক্ত ছিলেন কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমার, প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর বলবান খোখর, অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা অফিসার ক্যাপ্টেন বাঘমাল, গিরধারি লাল এবং আরও দুই কংগ্রেস কর্মী।
দিল্লি হাইকোর্টের আগে দিল্লির পাতিয়ালা হাউস ট্রায়াল কোর্টে এই মামলা চলে। আদালত বাকিদের দোষী সাব্যস্ত করলেও সজ্জন কুমারকে নিরাপরাধ হিসাবে রায় দেয়। পরে সিবিআই এবং প্রত্যক্ষদর্শী তথা সাক্ষী জগদীশকুমার ট্রায়াল কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেন। সোমবার সেই মামলার শুনানিতেই সজ্জন কুমারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
আরও পড়ুন: কেমন ফাঁস দিলে কেমন দাগ? রজত খুনের আগে ইন্টারনেটে সার্চ করেছিলেন অনিন্দিতা
মামলার শুনানিতে প্রত্যক্ষদর্শী জগদীশ কুমার জানান, জনতাকে শিখদের বিরুদ্ধে তাতিয়ে তোলেন সজ্জন। সুলতানপুরির কাছে জনতার উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আমাদের মা’-কে মেরেছে শিখরা। পরদিন সকালে তাঁর বাড়িতেও হামলা চালানো হয়, হামলায় তাঁর পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যু হয়, কোর্টকে জানান জগদীশ।
রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি বলেন, ‘‘অনেক সময়ই দোষীরা রাজনৈতিক সুবিধা পেয়ে পার পেয়ে যান, কিন্তু যত চ্যালেঞ্জই থাক না কেন, সত্যেরই জয় হবে।’’
আরও পড়ুন: রাফাল ভোলাতে বফর্স নিয়ে রাহুলকে খোঁচা মোদীর
নিজের চোখের সামনে বাবাকে পুড়িয়ে মারতে দেখেছিলেন নিরলিপ কৌর। সজ্জন কুমারের সাজার খবর শুনে ভারতের বিচারব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। ৩৪ বছর পরও খুশিতে কেঁদে ফেলেছেন। ‘১৯৮৪ সালে যে দাঙ্গা হয়েছিল, কংগ্রেস এবং গাঁধী পরিবারকে তার মূল্য দিতে হবে’, টুইট করেন অরুণ জেটলি।
Justice for the victims of 1984 was buried by the Congress – the NDA restored fairness and accountability.
— Arun Jaitley (@arunjaitley) December 17, 2018
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতাবানদের হাতে নির্দোষ এবং নিরপরাধদের মৃত্যুর পর বিচারের জন্য অনেক অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁদের পরিবারের লোকেদের। যত ক্ষমতাবানই হোক না কেন দাঙ্গায় যুক্ত লোকেরা কখনই ছাড় পাবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy