রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি। সোমবার অম্বেডকরের জন্মবার্ষিকী। আর মঙ্গলে পয়লা বৈশাখ। হিসাব কষলে টানা তিন দিন ছুটি। বৈশাখ বরণের আগেই অবশ্য তেতে উঠেছে পরিবেশ। দিন দুয়েক আগে হালকা, ঝড়-বৃষ্টি তাপমাত্রার পারদ কিঞ্চিৎ লাগাম টানলেও, চড়া রোদে ঘুরে বেড়ানো কষ্টকর।
কিন্তু বেড়ানোর নেশা যাঁদের ভর করে, তাঁদের কি আর এত গরম-ঠান্ডা ভাবলে চলে? দিন তিনেকের ছুটিতে টুক করে পুরী, দার্জিলিং ঘোরা ঝক্কির বইকি! ট্রেনে তো টিকিটের আকাল। দিঘা, মন্দারমণি, ঝাড়গ্রামও একঘেয়ে।
তা হলে বরং চলুন পশ্চিমে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে অসংখ্য সাহিত্যিকের গল্প, কবিতায় ঠাঁই পাওয়া হাজারিবাগে। নাম শুনে আঁতকে উঠছেন না কি! ভাবছেন এই গরমে ঝাড়খণ্ডে?
আরও পড়ুন:
তবে আবহওয়ার পূর্বাভাস দেখলেই বুঝবেন, হাজারিবাগ মোটেই কলকাতার চেয়ে উষ্ণ নয় এখন। আবহাওয়ার তথ্য প্রদানকারী অ্যাপ বলছে, আগামী কয়েক দিন সেখানে তাপমাত্রা ঘোরাঘুরি করবে ৩১-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩৫-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
তা হলে আর দেরি কেন, চারচাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। যানজট এড়াতে চাইলে রাতই ভাল। রোদের তাত টের পাওয়ার আগে ভোরবেলাতেই পৌঁছে যাবেন পাহাড়ের কোলে।
হাজারিবাগে ঘুরবেন কোথায়, দেখবেন কী?
ক্যানারি হিল: হাজারিবাগ-কর্মাটাঁড়-মধুপুর-গিরিডি-দেওঘরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছেন বার বার। সেই স্থানের রূপ-সৌন্দর্যে এত বছরে অনেক বদল হলেও কমেনি ক্যানারি হিলের আকর্ষণ। শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে ক্যানারি পাহাড়। উচ্চতা খুব বেশি না হলেও, সেখান থেকে দেখা যায়া পুরো শহর। চারপাশের সবুজ বনানী। পাহাড় থেকে চারপাশের দৃশ্য উপভোগের জন্য দু’টি নজরমিনার রয়েছে। একটিতে উঠতে হয় সিঁড়ি দিয়ে। তবে আর একটি নজরমিনারে গাড়ি নিয়েই পাহাড়ি পথে ওঠা যায়। পড়ন্ত বেলায় নজরমিনার থেকে আশপাশের রূপ স্বর্গীয়।
আরও পড়ুন:
হাজারিবাগ ঝিল: হাজারিবাগে সাইট সিইংয়ে দেখে নিতে পারেন ঝিলও। ক্যানারি হিল থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরত্বেই রয়েছে ঝিল। যেতে লাগবে ১০-১২ মিনিট। কৃত্রিম এই জলাশয় হাজারিবাগের অন্যতম আকর্ষণ। খাবারের স্টল, বোটিংয়ের ব্যবস্থা— সব মিলিয়ে জায়গাটি জমজমাট। স্থানীয়েরাই এখানে হাওয়া খেতে আসেন। কাছেই রয়েছে স্বর্ণজয়ন্তী পার্ক এবং ক্যাফেটেরিয়া।
হাজারিবাগ ওয়াইল্ডলাইফ স্যানচুয়ারি: হাজারিবাগের শহরের রূপ এক রকম। তবে যদি তপ্ত বৈশাখে নিখাদ প্রকৃতির মাঝে থাকতে চান, যেতে হবে হাজারিবাগ অভয়ারণ্যে। ৭৩১ বর্গকিলোমিটার জুড়ে অরণ্যের বিস্তৃতি। ভিতরে বন দফতরের আবাসও রয়েছে। তবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের আরাম সেখানে পাবেন না। জঙ্গলে সকালে এবং বন দফতরের অনুমতি নিয়ে সান্ধ্য-সাফারিও করা যায়। বন্যপ্রাণ চাক্ষুষ করা কঠিন। তবে, পাখির অভাব হবে না। শাল, জারুল, মহুয়ার ঘন জঙ্গল। গাছগাছালির দিকে নজর দিলে দেখবেন উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে শ্যামা, টিক্লস ব্লু ফ্লাইক্যাচারের মতো অসংখ্য পাখি। এখানে দেখা মেলে থ্রি স্ট্রাইপড পাম স্কুইরেল বা তিন স্ট্রাইপ যুক্ত কাঠবিড়ালির।
এ ছাড়াও হাজারিবাগে মিউজ়িয়াম, হাট, মন্দির, অতি পুরনো গুহা, গুহাচিত্র-সহ অনেক কিছুই দেখে নেওয়া যায়। তবে দিন দু’য়েক হাতে থাকলে ক্যানারি হিল আর অভয়ারণ্য ঘোরাটাই ভাল।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে সড়কপথে হাজারিবাগের দূরত্ব প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। বেশির ভাগ জায়গাতেই রাস্তা বেশ ভাল। এই দূরত্বের অনেকটাই জাতীয় সড়ক থাকায় গাড়ি ছো়টানো যায় দ্রুত। কলকাতা থেকে সড়কপথে বর্ধমান, দুর্গাপুর, আসানসোল, ধানবাদ এবং বাগোদা হয়ে পৌঁছতে হবে হাজারিবাগে। মোটামুটি ৯ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।
- পয়লা বৈশাখ মানেই বাঙালির বাঙালিত্বের উদ্যাপন। সাদা-লাল শাড়ির ফ্যাশন, বাঙালি খাওয়া-দাওয়া, হালখাতা— এই সবই জাগিয়ে তোলে বাঙালির স্মৃতিমেদুরতাকে।
- বছর ঘুরে আবার আসছে বাংলার নববর্ষ। ১৪৩২ আরও অনেক নতুন কিছু নিয়ে আসবে। নববর্ষকে কী ভাবে স্বাগত জানাবে বাঙালি? তারই হাল হদিস।
-
মননে সাহিত্য-শিল্পের বাঙালিয়ানা, বল্লভপুরের রূপকথা শুনবে ক্যাম্পাস শহর
-
কেউ শাড়ি, কেউ সালোয়ার, সাবেক ও সাম্প্রতিকের যুগলবন্দি নববর্ষে, কেমন সাজলেন টলিসুন্দরীরা
-
কাঁধে এক কাঁদি কলা, চুলে হলুদ-বেগনি ফুল, সমুদ্রতটে আঁচল উড়িয়ে নতুন বছরকে স্বাগত স্বস্তিকার
-
বিশেষ দিনে ভিড় করে স্মৃতিমেদুরতা, বর্তমান প্রজন্মও অতীতে চোখ রাখে, নববর্ষে মনে করালেন সোহম
-
দিনের শেষে মেকআপ তুলে ফেলাও জরুরি, ফেসওয়াশ ফুরিয়ে গেলে কী করবেন?