বেড়ানোর কথা ভাবলেই মন নেচে ওঠে! কিন্তু তপ্ত বৈশাখে ঘোরার কথা ভাবলে, কারও মনে হতেই পারে এর চেয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরই ভাল।
সামনেই পয়লা বৈশাখ। ক্যালেন্ডারের পাতা বলছে, বৈশাখ শুরুর আগের দিনেই অম্বেডকর জয়ন্তী। ফলে ছুটির দিন হিসাবে বাড়তি সংযোজন। তার সঙ্গে যদি নিদেনপক্ষে রবিবারটিও যোগ হয়, তা হলে তো কথাই নেই! তিন দিনের ছুটি কি ঘরে বসেই কাটাবেন? তার চেয়ে বরং তপ্ত বৈশাখে চলুন অরণ্যভূমে।
বনানী থাকলেও, গরম যে কম, তা কিন্তু মোটেই নয়। তবে ঘোরার ইচ্ছে ষোলোআনা থাকলে, গরমকে থোড়াই কেয়ার? দিন দুই বা তিনেকের ছুটিতে চলুন জয়পুর। চমকাবেন না, রাজস্থান নয়, বরং গাড়িতে কলকাতা থেকে ঘণ্টা চারেকেই পৌঁছোনো যায় সেখানে। এক বার গেলে চোখ জুড়ানো সবুজের সান্নিধ্য দিনভর উপভোগ করতে পারবেন।
বাঁকুড়া বললেই মুকুটমণিপুর জলাধার নয়তো বিষ্ণুপুরের টেরাকোটার ছবি মানসপটে ভাসে। আর এ সবের মাঝে খানিক উপেক্ষিতই রয়ে যায় জয়পুরের জঙ্গল। অথচ উজাড় করা প্রকৃতি, গ্রামবাংলার রূপের কমতি নেই এখানে। ক্যামেরাবন্দি করার জন্য পক্ষী পর্যবেক্ষকদেরও বিষয়ের অভাব নেই। দুধরাজ থেকে ফিঙে, এশিয়ান ওপেনবিল, স্যান্ড লার্ক-সহ অনেক পাখির দেখা মিলবে দেখতে জানলে।
আর পথের দু’ধারে রয়েছে শাল, মহুয়া, সেগুন, বেহেড়া। মিলেমিশে যেন তারা গল্প জুড়ে দিয়েছে। শালবনের বুক চিরে কালো পিচের মসৃণ রাস্তা চলে গিয়েছে বিষ্ণুপুরের দিকে। রোদের তাপে যদি নামতে ইচ্ছা না-ও হয়, সেই রাস্তা ধরে গাড়ি ছোটালেই দু’চোখ ভরে সবুজ দেখতে পাবেন।

তবে যদি মনে হয় পড়ন্ত বিকেলে খানিক ঘোরাঘুরি করা যায় তা হলে বরং জাতীয় সড়ক ছেড়ে জঙ্গলের পথ ধরুন। মোরামের রাস্তা পৌঁছে দেবে গ্রামে। জয়পুরের জঙ্গলে মাঝেমধ্যেই হানা দেয় হাতির পাল। তাই বেশি সাহস দেখাতে গিয়ে স্থানীয়দের সাবধানবাণী অগ্রাহ্য করবেন না।
গরমের দিনে সাপখোপও যে বেরিয়ে পড়তে পারে না, তা নয়। তাই বনপথে হাঁটাহাটির ইচ্ছা হলে বরং সাবধানে পা ফেলাই ভাল। জয়পুর অরণ্যে বাস হরিণ, বুনো শূয়োর-সহ অনেক বন্যপ্রাণের। যদিও হরিণের দেখা মেলা কপালের ব্যাপার। বরং শালের অরণ্যের তলদেশে মাঝেমধ্যে নিশ্চিত ভাবে দেখতে পাবেন, বিশাল সব উইয়ের ঢিবি, আর কোনও কোনও গাছের ডালে বড় বড় মৌচাক।
জয়পুর অরণ্যেই গাছগাছালির ভিতরেই রয়েছে একটি পরিত্যক্ত এয়ারফিল্ড বা বিমানঘাঁটি। জায়গাটি বাসুদেবপুর চাতাল নামেও পরিচিত। বেলা পড়লে বরং সেখানে ঢুঁ মারতে পারেন। শোনা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি ব্যবহার হত।
আর যদি দিন তিনেকের ছুটিতে ঘুরবেন মনস্থ করেন, তা হলে চলে যেতে পারেন বিষ্ণপুরেও। জয়পুরের জঙ্গল থেকে দূরত্ব ২০ কিলোমিটারের মতো। এখানকার রাসমঞ্চের স্থাপত্য দেখার মতোই বটে! ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ রয়েছে তার দেখভালের দায়িত্বে। বিষ্ণপুরে বেশ কয়েকটি টেরাকোটার মন্দির রয়েছে।
কোথায় থাকবেন?
জয়পুর জঙ্গল শুরুর মুখে বেশ কয়েকটি ভাল রিসর্ট আছে। আবার বিষ্ণপুরেও রয়েছে বিভিন্ন মানের হোটেল। ফলে গরমে আরামদায়ক থাকার জায়গা পেতে কোনও অসুবিধাই হবে না। দুপুরে বিশ্রাম নিয়ে ভোরে এবং বিকালেও ঘুরতে পারেন।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে সড়কপথে জয়পুর অরণ্যের দূরত্ব ১২৮ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে ডানকুনি, আরামবাগ হয়ে পৌঁছোতে বড়জোর ঘণ্টা চার-পাঁচ লাগবে। ট্রেনে যেতে হলে চলুন বিষ্ণুপুর স্টেশন। সেখান থেকে জয়পুর জঙ্গলের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার।
- পয়লা বৈশাখ মানেই বাঙালির বাঙালিত্বের উদ্যাপন। সাদা-লাল শাড়ির ফ্যাশন, বাঙালি খাওয়া-দাওয়া, হালখাতা— এই সবই জাগিয়ে তোলে বাঙালির স্মৃতিমেদুরতাকে।
- বছর ঘুরে আবার আসছে বাংলার নববর্ষ। ১৪৩২ আরও অনেক নতুন কিছু নিয়ে আসবে। নববর্ষকে কী ভাবে স্বাগত জানাবে বাঙালি? তারই হাল হদিস।
-
মননে সাহিত্য-শিল্পের বাঙালিয়ানা, বল্লভপুরের রূপকথা শুনবে ক্যাম্পাস শহর
-
কেউ শাড়ি, কেউ সালোয়ার, সাবেক ও সাম্প্রতিকের যুগলবন্দি নববর্ষে, কেমন সাজলেন টলিসুন্দরীরা
-
কাঁধে এক কাঁদি কলা, চুলে হলুদ-বেগনি ফুল, সমুদ্রতটে আঁচল উড়িয়ে নতুন বছরকে স্বাগত স্বস্তিকার
-
বিশেষ দিনে ভিড় করে স্মৃতিমেদুরতা, বর্তমান প্রজন্মও অতীতে চোখ রাখে, নববর্ষে মনে করালেন সোহম
-
দিনের শেষে মেকআপ তুলে ফেলাও জরুরি, ফেসওয়াশ ফুরিয়ে গেলে কী করবেন?