বাথটবেই লুকিয়ে বাথরুমের সৌন্দর্য।
সারা দিনের কাজ,তার পর একটা স্নিগ্ধ স্নান! এক নিমেষে সমস্ত ক্লান্তি হাওয়া। খুব মন খারাপ করছে? ভাল করে স্নান করে নিন, দেখবেন ভাল লাগছে। রাতে ঘুম আসে না ঠিকমতো? প্রাথমিক সমাধান কিন্তু একটাই, আরামের একটা স্নান।
খুব সাধারণ মানুষও স্নানের ক্ষেত্রে কখনও কখনও উচ্চাকাঙক্ষী কিংবা বিলাসবহুল হয়ে ওঠেন। একটা বড় বাথরুম বানাতে ব্যয় করে ফেলে অনেকটাই। শুধু টাকা নয়, জায়গাও। কারণ, বাথটাব বসাতে কিছুটা বেশি জায়গা লাগে তো বটেই।
সাধারণত, হাজার স্কোয়ার ফুট ফ্ল্যাট হলে এবং সেখানে দুটো বাথরুম রাখলে আনুপাতিক মাপে বাথটাব রাখা বেশ কঠিন। সে ক্ষেত্রে ফ্ল্যাটের মাপটা আর কিছুটা বড় কিংবা বাথরুমের মাপটা অল্প কিছু বড় করে নেওয়ার দরকার হয়। এ বার আমরা দেখে নেব কীরকম মাপের জায়গা লাগতে পারে বাথটাবের জন্য।
বাথটবের নকশায় আনুন নতুনত্ব, মেঝে সাজান নুড়িপাথরে।
আরও পড়ুন: জুতোও রাখতে পারেন ওয়ার্ডরোবে
এক জন মানুষের অর্ধশায়িত অবস্থায় আরামদায়ক স্নানের জায়গাই হচ্ছে বাথটাব কিংবা স্নানপাত্র। সাধারণত লম্বায় চার ফুট থেকে ছ’ফুট পর্যন্ত হতে পারে বাথটাব। চওড়ায় সাড়ে তিন ফুট থেকে ছ’ফুট। আয়তাকার বাথটাবই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখতে পাই আমরা, কখনও কখনও বর্গাকার বাথটাবও হয়। গোল বাথটাব যে হয় না এমন নয়, কিন্তু তাতে জায়গা অনেকটা বেশি লাগে।
বাথটাবে সবচেয়ে কম জায়গা লাগে কর্নার টাবে। তবে কর্নার টাব লাগানোর দেওয়ালটায় যেন কোনও ভাবেই স্যাঁতসেঁতে ভাব না থাকে। দেওয়ালে ড্যাম্প না ধরে। কিছু বাথটাব আছে যেগুলো শুধুমাত্র বাথরুমের মেঝের উপরেই রেখে দেওয়া যেতে পারে। বেশ কিছুটা উঁচু হয় এই বাথটাবগুলো।
শুধু তাই-ই নয়, এ ধরনের টাবগুলোতে উঠতেও কিন্তু একটু কষ্ট হয়। আসলে একটু পুরনো মডেলের এই বাথটাবগুলো এক সময় খুবই জনপ্রিয় ছিল। এ গুলো কিছুটা প্রমাণ আকারেরও হয়। দিন বদলেছে। বাথটাবের নকশা, মাপ, ওজন সবেতেই পরিবর্তন এসেছে ভীষণ ভাবে।
নতুন ফ্ল্যাট কেনার আগেই আমরা বাথরুমে কতটা জায়গা থাকবে সেটা জেনে নিই। তার পর সেখান থেকেই একটা বড় স্নানঘরের জায়গা বার করে নিতে হয়। ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে মাপগুলো প্রায় সমান থাকে তাদের লে-আউট অনুযায়ী। সুতরাং আলাদা করে বাথটাব-সমেত বাথরুম বানাতে গেলে পরিকল্পনামাফিক পরামর্শ করে আগেভাগে কারিগরকে জানিয়ে রাখা যেতে পারে। সাধারণত, একটা বাথটাব-সমেত বাথরুম বানাতে কমপক্ষে ষাট থেকে সত্তর বর্গফুটের মতো জায়গা দরকার হয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন,খুব যে বেশি জায়গার দরকার হয় এমনটা নয় ,বরং অল্প কিছুটা জায়গা অতিরিক্ত ব্যবহার করতে পারলেই আরামদায়ক স্নানের ব্যবস্থা করে নিতে পারেন বাড়িতেই।
আনন্দের ভাগ আরও কিছুটা বেশি পেতে চান, তা হলে জাকুজি বানিয়ে নিতে পারেন।
আরও পড়ুন: ঘর সাজাতে খরচ ও ঝক্কি নিয়ে চিন্তায়? রইল পকেটসই সমাধান
কী কী বিষয় মাথায় রাখবেন
বাথটাব বানানোর ক্ষেত্রে একটু আড়াল প্রয়োজন। যেটা খুব দরকারিও বটে। বাথরুম সব সময় খুবই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বাথটাব ব্যবহার করলে সে দিকে যেন আরও নজর থাকে। যে প্ল্যাটফর্মের উপরে বাথটাবটা থাকে, তার আশপাশটা যেন সব সময় পরিস্কার রাখা হয়। প্ল্যাটফর্মের চারপাশটা ভাল মার্বেল, গ্রানাইট দিয়ে বাঁধালে, সেটা এমন ভাবে পালিশ করাবেন, যাতে পিচ্ছিল না হয়ে যায়। বাথটাবের পাশের দেওয়ালে ছোট ছোট কুলুঙ্গি করে তার মধ্যে স্নানের সময় দরকারি জিনিস পত্র রাখতে পারেন। হাতের নাগাল পেতে সুবিধা হবে। সুইচবোর্ড এমন দূরত্বে রাখবেন,যাতে স্নানের সময় কখনওই সেখানে জল ছিটকে গিয়ে না লাগে।
কমোড এবং তার চারপাশটা অত্যন্ত পরিস্কার রাখা দরকার। যদি সম্ভব হয়, বাথটাব থেকে যেন কমোড না দেখা যায়— তেমন ব্যবস্থা করাই ভাল। দরকারে কঠিন গ্লাসের ছোট পার্টিশনও চলতে পারে।
ঝাঁ চকচকে বাথটবে স্নান হোক আরামের।
জায়গা কিছুটা বড় থাকলে এবং স্নানের সময় যদি আনন্দের ভাগ আরও কিছুটা বেশি পেতে চান, তা হলে জাকুজি বানিয়ে নিতে পারেন বাথটাবে। জাকুজি বানিয়ে নেওয়াটা খুব যে খরচসাপেক্ষ তেমন নয়। সুন্দর করে বানিয়ে তোলা বাথরুমের সঙ্গে আরও কিছুটা ইচ্ছে, পকেটের স্বাস্থ্য আর আহ্লাদ— এগুলি যোগ করতে পারলেই বাথটাব তো বটেই, জাকুজিও আপনার বাথরুমে আপনার স্নানের জন্য প্রস্তুত থাকতেই পারে।
আর হ্যাঁ, একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, বাথরুমের প্রধান সমস্যা হল,বাথরুমের মেঝে ভিজে থাকা। সুতরাং সে দিকে নজর রাখবেন, যাতে মেঝেতে জল না পরে। ভিজে গেলে জলটা পরিস্কার করে পাখা চালিয়ে শুকিয়ে নেবেন।
(ছবি: পিক্সঅ্যাবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy