—প্রতীকী চিত্র।
জীবাণু সংক্রমণের জেরে মহিলাদের অসুস্থ হওয়ার ঘটনা প্রায়ই দেখা যায় আমাদের চারপাশে। বমি বমি ভাব, জ্বর আসা, পিঠে ব্যথা, ঋতুস্রাবের সময় অত্যধিক রক্তপাত হওয়ার মতো সমস্যা যদি বার বার হতে থাকে, তবে তা জীবাণু সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে। সম্প্রতি গুরুতর ভাবে অসুস্থ পপতারকা ম্যাডোনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এক ধরনের জীবাণু সংক্রমণের কারণে ৬৪ বছরের ওই তারকা এতটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু কোন ধরনের সংক্রমণ তাঁর এই অসুস্থতার নেপথ্যে ছিল, তা খোলসা করেননি তারকা নিজেও।
গাইনিকোলজিস্ট অভিনিবেশ চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, সাধারণত, মহিলাদের পেলভিক অংশে হওয়া জীবাণু সংক্রমণের জেরেই অসুস্থ হন অনেকে। আর এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে মূলত অসুরক্ষিত যৌনক্রিয়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের প্রভাবে। পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজ়িজ় (পেলভিক প্রদাহজনিত রোগ বা পিআইভি) ও ব্যাক্টিরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস (বিভি)— এই দু’ধরনের রোগের কারণেই সাধারণত সংক্রমণ-জনিত অসুস্থতা বাড়তে থাকে মহিলাদের মধ্যে।
পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজ়িজ় (পিআইডি)
পেলভিক প্রদাহজনিত রোগের কারণে বহু মহিলাকেই চিকিৎসাধীন হতে হয়। তবে চিকিৎসকের মতে, এই রোগের নির্ণয় দ্রুত হলে এর চিকিৎসা বাড়িতেই করা সম্ভব হয়। সাধারণত, রোগটি কমবয়সি মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। এর নেপথ্যে থাকে ক্ল্যামাইডিয়া, গনরিয়ার মতো যৌন রোগ, যা আগে নির্ণয় করা হয়নি। তবে শুধু যৌনক্রিয়া নয়, আরও নানা ধরনের সংক্রমণের কারণে এই রোগ হতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক অভিনিবেশ। গর্ভপাত বা সন্তানের জন্মের পরেও দেখা দিতে পারে পিআইডি।
এই সংক্রমণের উপসর্গগুলি আরও নানা ধরনের রোগের সঙ্গে মিলে যায়। যেমন,
যেহেতু এই উপসর্গগুলি থেকে নির্দিষ্ট ভাবে পিআইডি সংক্রমণের কথা বোঝা সম্ভব নয়, তাই এক বা একাধিক লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে এইচআইভি পরীক্ষা করানোর পরামর্শও দেওয়া হয়।
পিআইডির চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকেদের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। এই ওষুধের ডোজ় মোটামুটি দু’সপ্তাহ চলে। তবে যদি ওষুধ, ইঞ্জেকশন ও চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকার ৭২ ঘণ্টা পরেও শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি না হয় ও যন্ত্রণা বাড়তেই থাকে, তখন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা চালানোই শ্রেয়, মত বিশেষজ্ঞদের। কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন পড়ে।
ব্যাক্টিরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস (বিভি)
পিআইডি ছাড়াও এক ধরনের সংক্রমণ খুবই দেখা যায় মহিলাদের মধ্যে— ব্যাক্টিরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, প্রতি তিন জনের মধ্যে এক জন মহিলা এই রোগে অন্তত এক বার আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কী কারণে বিভি হয়ে থাকে, তা সব সময় ঠিক ভাবে নির্ণয় করা না গেলেও, অসুরক্ষিত যৌনক্রিয়া বা ভ্যাজাইনায় অতিরিক্ত সাবান, সুগন্ধীর ব্যবহারের প্রভাবে সচরাচর এই রোগ হয়ে থাকে বলে মত চিকিৎসকদের। এ ছাড়াও, যৌনরোগ থেকে থাকলে বা মেনোপোজ়ের পরে এই সমস্যা দেখা দেয়। বিভির উপসর্গগুলিও নানা রোগের সঙ্গে মিলে যায়। যেমন—
কিছু ক্ষেত্রে, অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজ় চলাকালীনও নানা কারণে বিভি হতে পারে। সব চেয়ে জরুরি হল, উপসর্গ দেখা দিলে ও শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। কারণ, বিভি কিছু সময় পেলভিক অঙ্গের রোগেরও ইঙ্গিত দেয়।
বিভির চিকিৎসার সবচেয়ে ভাল উপায়, চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেটের ডোজ় চালু করা। এ ছাড়াও ভ্যাজাইনাল ক্রিম বা জেল ব্যবহার করা যায়।
মনে রাখবেন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy