সাফল্য হাতের মুঠোয় আনতে মেনে চলুন দিন শুরুর নিয়ম। ছবি: আইস্টক।
সারা দিনের কর্মব্যস্ততা, অফিসের চাপ, সাংসারিক দায়দায়িত্ব— সব মিলিয়ে মানসিক অবসাদ আসা খুব অস্বাভাবিক নয়। বরং সকাল থেকেই কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়া আজকাল অনেকেরই অভ্যাসের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সারা দিনের এই কাজকর্মে টুকটাক ভুল-ত্রুটি থেকেই যায়। অফিসের কাজ হোক বা বাড়ি, সারা দিনের কাজকর্মকে আরও নিখুঁত ও ত্রুটিহীন করে তোলা লুকিয়ে আছে কয়েকটাসহজ কৌশলের মধ্যে।
তবে দিন শুরু করার আগে জেনে নেওয়া জরুরি, দিন শুরুর সময়টা ঠিক কী হওয়া উচিত। নানা মনোবিদের দাবি, দিনের মধ্যে ভোর ৪টেই হল দিন শুরু করার সেরা সময়। দেখা গিয়েছে, বিশ্বের তাবড় সংস্থার নামী সিইওদের বেশির ভাগই তাঁদের দিন শুরু করেন ভোর পৌনে চারটে থেকে চারটের আশপাশে। যেমন, অ্যাপল-এর সিইও টিম কুক দিন শুরু করেন কাঁটায় কাঁটায় পৌনে চারটেয়। ভার্জিন আমেরিকার সিইও ডেভিড কাশের দিন শুরু হয় সওয়া ৪টেয়, এলভেস্টের সিইও শ্যালি ক্রচেকের মতে, তিনি সারা দিনে সবচেয়ে বেশি সতেজ ও কার্যক্ষম থাকেন ভোর ৪টেয়।
মনোবিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের মতে, “ঘুম থেকে ওঠার সময় যত দেরি হয়, সূর্যের আলোও কড়া হতে থাকে। শরীরের ত্বক ও মস্তিষ্ক কড়া আলোয় খানিক নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তবে এত ভোরে না উঠতে পারলেও একটু ভোর ভোর ওঠা শরীর ও মন, উভয়ের জন্যই ভাল।”তবে একান্তই ভোরে না উঠতে পারলে, ঘুম থেকে উঠে প্রাতঃকৃত্যের পরই এমন কিছু কাজ সেরে ফেলতে পারেন, যা আপনার সারা দিনের কাজের গতিকে সচল রাখবে, ভুলের মাত্রা কমাবে ও আপনাকে কার্যক্ষম করে রাখবে সারাটা দিনই।
আরও পড়ুন: এই সব উপায় মেনে চললে সহজেই টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন
সকালে উঠেই বানিয়ে ফেলুন সারা দিনের কাজের তালিকা। ছবি: শাটারস্টক।
সহজে ক্লান্তি এড়াতে তাই এই সহজ ক’টা কৌশল অবলম্বন করুন দিনের শুরুতেই।
অমিতাভ বাবুর মতে, কর্মব্যস্ততার যুগে সকালে উঠেই মোবাইলে চোখ যায় আমাদের বেশির ভাগেরই। যখনই ওঠেন, তখনই মোবাইল খোলায় সোশ্যাল সাইট, অফিস মেল, হোয়াটস অ্যাপে অফিস গ্রুপ সব কিছুর নোটিফিকেশন দেখার কাজ সারতে শুরু করেন অনেকেই। কাজের চাপ চলে আসছে দিনের শুরুতেই। আর এই অভ্যাসই দিনের পর দিন ক্লান্তি বাড়াচ্ছে, অবসাদ ডেকে আনছে। চিকিৎসকদের মতে, তা এড়াতে এবং নিজের কাজকেই আরও নিখুঁত করতে মেনে চলুন কিছু কৌশল।
সকাল সকাল অফিস আসার তাড়া থাকলে একটু ভোরের দিকে উঠুন। প্রয়োজনীয় জৈবিক কাজ সারার পর আধ ঘণ্টা হাতে সময় রাখুন। শরীরচর্চা সারুন আগে। এর পর বরং সারা দিনের কাজে কী কী আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ তার একটা তালিকা করে নিন।তালিকায় উপরের দিকে রাখুন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের নাম। তালিকা শেষ করুন সবচেয়ে কম গুরুত্বের কাজ দিয়ে। এই সময় যতটা পারেন একা ও নিঃশব্দে থাকার চেষ্টা করুন। দেখে নিন আগের দিনের কোনও কাজ বাকি থেকে গিয়েছে কি না। তা আজ শেষ করতে পারলে সেরে নেওয়ার পরিকল্পনা করুন। বাড়িতে কোনও কাজ থাকলে বা শিশুদের সময় দেওয়ার থাকলে সেই কাজগুলো আগে সারুন। সারা দিনের ব্যস্ততার পর যে সময় বাড়ির খুদেদের দেন, মনোবিদদের মতে, তা কেবল নামেই সময় দেওয়া হয়। ‘কোয়ালিটি টাইম’-এর ঘরে ফাঁক থেকে যায়।
আরও পড়ুন: মাইগ্রেন আছে? তা হলে আজই ছাড়ুন এ সব অভ্যাস
শিশুর সঙ্গে সময় কাটান দিনের শুরুর দিকেই। ছবি: শাটারস্টক।
ফোনের সব ক’টি নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখুন। অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হওয়ার পর খুলুন নোটিফিকেশন। তার পরেই দেখুন অফিসের মেল। কোনও কারণে অফিসের প্রয়োজনে ভোরেই মেল বা হোয়াটসঅ্যাপ খুলতে হলে সেই কাজটুকু সেরেই সরে আসুন মোবাইল থেকে।
সারা দিনের কাজকে আরও সুন্দর, নির্ভুল করে তুলতে ও দিনের বেশির ভাগ সময়টাই কার্যক্ষম থাকতে সকাল থেকে মোবাইলের হাতছানি এড়িয়ে আজ থেকেই অভ্যাস করুন এই সব কৌশল।
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy