সাবধানতা: শীতের পোশাক পরিয়ে বাচ্চাদের বাইরে নিয়ে যাওয়া দরকার। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
শীত পড়ছে। ভোরবেলা গায়ে দেওয়ার জন্য চাদর লাগছে বড়দের। বাচ্চাদের তো আরও সাবধানে রাখার সময়। মরসুম পরিবর্তনের এই সময়ে বিশেষত বাচ্চারা নানা রোগজারিতে আক্রান্ত হয়। হাঁচি, কাশি, জ্বর, গলা ব্যথা-সহ নানা শারীরিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ সবই ‘কমন কোল্ড’ বা ঠান্ডা লাগা থেকে, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, চিকেন পক্স, হুপিং কফ থেকে হতে পারে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী জানালেন, যেসব বাচ্চা ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা বা ব্রঙ্কাইটিসে ভোগে তাদের তো খুবই কষ্ট হয়। এই সময়ে মাঝে মাঝেই নিঃশ্বাসের কষ্ট বেড়ে যায়। শীতকালীন ডায়েরিয়া হয় বাচ্চাদের। এর জন্য দায়ী রোটা ভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বাচ্চারা শীতে ডায়েরিয়ার কষ্ট পায়।
শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই আরও কিছু রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে জানিয়েছেন সৌম্যশঙ্করবাবু। তিনি বলেন, ‘‘বাচ্চাদের এই সময়ে টনসিলাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেড়ে যায়। এই রোগে গলা ব্যথা, জ্বর, ঢোক গিলতে ব্যথা লাগে বাচ্চাদের।’’ খুব ছোট বাচ্চারা কষ্টের কথা, অস্বস্তির কথা জানাতে পারে না। তাই তারা অনবরত কাঁদতে থাকে। ঘ্যানঘ্যান করে। শীতের সময়ে গলার সংক্রমণ বা ফ্যারিঞ্জাইটিসেও আক্রান্ত হয় বাচ্চারা। ছোটদের ক্ষেত্রে এই রোগও বেশ কষ্টকর। অনেকের ধারণা গরমকালেই শুধু চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ে। কিন্তু শীতকালেও চর্মরোগ হতে পারে। বিশেষ করে বিভিন্ন ছত্রাকের আক্রমণ। তার ফলে বাচ্চাদের দাদ, চুলকানি ইত্যাদি অস্বস্তিকর চর্মরোগ বেশি করে হতে পারে।
সৌমশঙ্করবাবু জানিয়েছেন, শীতের আগে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় বাচ্চাদের সম্পর্কে সাবধান থাকা দরকার। বেশ কয়েকটি বিষয়ে সাবধানতা দরকার হয়। ঠান্ডা যাতে না লাগে সেদিকে নজর রাখা জরুরি। তাই শীতের পোশাক ব্যবহার করা দরকার। বাচ্চাদের গলা যেন ফাঁকা না থাকে। তাই মাফলার পরিয়ে বাইরে বের করা দরকার। যেসব বাচ্চা হাঁটতে শেখেনি তাদের দিকে নজর দেওয়াটা বেশি করে দরকার। ঠান্ডা লাগলে বাচ্চাদের গার্গল করানো যেতে পারে। দিনে অন্তত তিনবার ১৫ মিনিট করে গার্গল করলে ছোটরা আরাম পাবে। মধু, তুলসী ইত্যাদি খেলেও ঠান্ডা লাগা এবং গলা ব্যথা থেকে আরাম মিলতে পারে।
খাওয়াদাওয়ার বিষয়েও সচেতন থাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক সৌম্যশঙ্কর। তিনি জানিয়েছেন, বাচ্চাদের জল ফুটিয়ে খাওয়ানো উচিত। বাসি খাবার এবং না ঢাকা খাবার না খাওয়া এবং খাওয়ানো উচিত। হাঁফানিতে ভোগা রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনহেলার ব্যবহার করতে পারেন। তাতে আরাম মিলবে। বাচ্চাদের শীতকালীন ডায়েরিয়া হলে ওআরএস এবং জিঙ্কের বড়ি খাওয়াতে হবে। তবে তা খাওয়ানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে বলে জানালেন সৌমশঙ্করবাবু। ঠান্ডা লাগলে বা গলা ব্যথা হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রতিষেধক ও ওষুধ ব্যবহার করা উচিত। মত উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy