Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Flight rules

বিমানে অক্সিজেন মাস্ক পরার সময়ে ভুল করেন না তো? ঠিক কত ক্ষণ পরে থাকা যায়?

বিমানে অক্সিজেন মাস্ক নির্দিষ্ট সময়ের জন্যই পরা যায়। সেই সময়টা কত জানলে অবাক হবেন।

How long oxygen masks last in an airplane

অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জেনে নিন। প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৯
Share: Save:

বিমান ওড়ার সময়ে বিমানসেবিকারা নিয়মাবলf ভাল ভাবে বুঝিয়ে দেন যাত্রীদের। সেই সময়ে অক্সিজেন মাস্কের ব্যবহারও দেখিয়ে দেন তাঁরা। বিমানে যাতায়াতে যাঁরা অভ্যস্ত, তাঁরা হয়তো জানবেন, অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহারের কিছু নিয়ম আছে। আপৎকালীন অবস্থায় বা যখন বিমানের ভিতর বাতাসের চাপ কমে যাচ্ছে, তখনই যাত্রীদের মাথার উপর থেকে হলুদ রঙের অক্সিজেন মাস্ক নেমে আসে। দ্রুত সেই মাস্ক পরে নেন যাত্রীরা। তবে তা দীর্ঘ সময়ের জন্য নয়। অক্সিজেন মাস্ক কত ক্ষণ কাজ করবে এবং ঠিক কোন সময়ে কাজ করা বন্ধ করে দেবে, তারও হিসেব আছে।

অক্সিজেন মাস্ক ঠিক ১৫ মিনিটের জন্য কার্যকর থাকতে পারে। অবাক লাগলেও তা সত্যি। কেবলমাত্র আপৎকালীন অবস্থার জন্যই তা ব্যবহার করা হয়। বিমান যখন ১০ থেকে ২০ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে ওড়ে এবং বিমানের ভিতরে বাতাসের চাপ কোনও কারণে কমে যায়, তখন অক্সিজেন মাস্ক খুলে যায়। কিন্তু তা কেবল ১৫ মিনিটই কর্মক্ষম থাকে। এর পরে কাজ করা বন্ধ করে দেয়।

এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক সোনালি ঘোষের বক্তব্য, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে পাতলা হতে শুরু করে। ফলে, বায়ুমণ্ডলের চাপ কমতে থাকে। অক্সিজেনের মাত্রাও কমতে থাকে। তাই বিমান আকাশে উড়লেই কেবিনের ভিতরে যাতে বায়ুচাপের ঘাটতি না হয়, সে জন্য যান্ত্রিক ভাবে বাড়তি বায়ু ঢোকানো হয় কেবিনে। ওই বায়ুকে বলা হয় ‘ব্লিড এয়ার’। বিমানসেবিকারা এই পদ্ধতিকে বলেন, ‘কেবিন প্রেসারাইজ়ড হল’। আবার আকাশ থেকে নেমে এসে মাটি ছোঁয়ার সময় ধীরে ধীরে বাড়তি বায়ু বের করে দিয়ে কেবিনের এয়ার প্রেসার বা বায়ুচাপ স্বাভাবিক করে তোলা হয়। কারণ, মাটিতে নামার কিছু আগে থেকেই কেবিনের বায়ুচাপ আর বায়ুমণ্ডলের চাপ সমান হয়ে যায়। কিন্তু যদি প্রচণ্ড ঝড় বা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে বিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে অথবা কোনও কারণে বেশি উচ্চতায় উঠে যায়, যেখানে বাতাসের চাপ খুব কম, তখন অক্সিজেন মাস্কের প্রয়োজন পড়ে।

ওই সময়ে অক্সিজেন না নিলে মারাত্মক শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে, বুকে ব্যথা হবে, হৃৎস্পন্দনের হারও অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থাকে বলে ‘হাইপক্সিয়া’। তবে ১৫ মিনিট কৃত্রিম ভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করলেই এই অবস্থা দূর হবে।

সোনালি বলছেন, অক্সিজেন মাস্ক ঠিকমতো পরাও দরকার। অনেকেই ভুল ভাবে পরেন, ফলে অক্সিজেনের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

কী ভাবে পরবেন অক্সিজেন মাস্ক?

১) অক্সিজেন মাস্ক খোলার পরে তার গায়ে লেখা নির্দেশিকা লেখা চোখে পড়বে। সেটা পড়ে নিতে হবে। বুঝতে না পারলে বিমানসেবিকার সাহায্য নিতে পারেন।

২) প্রথমেই দেখতে হবে, অক্সিজেন মাস্কটি যেন মুখ ও নাকের পুরোটা ঢেকে রাখে। মাস্কের সঙ্গে লাগানো প্লাস্টিকের ব্যান্ডটি মাথার পিছনে টেনে নিয়ে যেতে হবে, যাতে মাস্কটি মুখের সঙ্গে আটকে থাকতে পারে।

৩) মাস্কটি কোনও কারণে কাজ না করলে উদ্বেগে না ভুগে বিমানসেবিকাকে জানাতে হবে। ওই সময়ে অতিরিক্ত উদ্বেগ বিপদের কারণ হতে পারে।

৪) অক্সিজেন মাস্ক অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি না করাই ভাল। যদি হার্টের রোগ, হাঁপানি বা শ্বাসের সমস্যা আগে থেকেই থাকে, তা হলে ১৫ মিনিট টানা অক্সিজেন মাস্কেই শ্বাস নিতে হবে। না হলে ঝুঁকি বাড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Travel Guidelines flight
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE