উৎসবের মরসুমে এ সব খাবারেই রাখুন আস্থা। ছবি: শাটারস্টক।
বিজয়া দশমীর পর বাড়িতে অতিথি সমাগমের রীতি আজকের নয়। মহাকাব্যিক উদাহরণ টানলে মহাভারতেও এমন আনুষ্ঠানিক রীতি আছে। তবে সেখানে ‘বিজয়া’ শব্দের তেমন উল্লেখ নেই, কিন্তু বিশেষত মিষ্টান্ন দিয়ে অতিথি আপ্যায়ণের জন্য আলাদা দিন ক্ষণের উল্লেখ আছে। তাই মিষ্টি একা বাঙালির নয়, আপামর ভারতবাসীর কাছেই আপ্যায়ণের অন্যতম রসদ।
বাঙালি জীবনে এই আপ্যায়ণ, বিশেষ করে মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ণের প্রথা আদি যুগ থেকেই। বরং, আধুনিকতার ছোঁয়াচ লেগে সেই খাতিরে যোগ হয়েছে নোনতা স্বাদ, লোভনীয় কিছু ভাজাভুজিও। তিলের তক্তি, নারকেলের মিষ্টি, নাড়ু, চন্দ্রপুলির পাশে আলগা করে প্লেটে জায়গা করে নিয়েছে ফিস ফ্রাই, কাটলেট, নিমকি, শিঙাড়া, ঘুগনিরা।
শরীর সচেতনতার যে ঝাপট বাঙালির আতিথ্যে এসে ঘা মেরেছে সেখানে কেবল মিষ্টির কথা বলে লাভ কী! তবে কথায় বলে, ভাবলে কিছু অন্য রকম ভাবুন। এই অন্য ভাবনার ফসল উঠুক অতিথির পাতেও। কেনা খাবার সরিয়ে অতিথির প্রতি আরও একটু আন্তরিকতার ছোঁয়াচ থাকুক মেনুতে। তাই আপনার জন্য রইল তেমন কিছু রেসিপির সন্ধান, যা এই উৎসবের আবহে অতিথির পাতে আনবে চমক, জিহ্বায় আনন্দ।
আরও পড়ুন: পুজোর পর এ সব উপায়ে চা খেয়ে ঝরিয়ে ফেলুন বাড়তি মেদ
নারকেল শিঙাড়া
দোকানের শিঙাড়া সহজলভ্য, কিন্তু বাড়িতে বানানো নারকেল শিঙাড়ায় যদি আস্থা রাখেন, তবে বুঝবেন এমন উপাদেয় পদ খুব কমই আছে। যা কিনা আপনার অতিথির মনকে নিমেষে নিয়ে যাবে সুদূর অতীতে। বাড়ির হেঁশেলে বানানো শিঙাড়ায় মা-ঠাকুমার হাতের ছোঁয়া !
উপকরণ
নারকেল কোরা: ১টি গোটা
পেঁয়াজ কুচি: ১টি বড়
চিনেবাদাম ভাজা: ১/২ কাপ
কিসমিস: ১/২ কাপ, আধপেয়া
কাঁচালঙ্কা কুচি: ৪-৫টি
কারিপাতা কুচানো: অল্প
লেবুর রস: ২ চা চামচ
ময়দা: ৬০০ গ্রাম
ঘি বা সাদা তেল: ১০০ গ্রাম
নুন: স্বাদমতো
চিনি: স্বাদমতো
প্রণালী
নারকেলের সঙ্গে ময়দা ও তেল ছাড়া সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। নুন ও চিনি স্বাদমতো মিশিয়ে দিন। অন্য দিকে ময়দার মধ্যে পরিমাণ মতো ঘি বা সাদা তেল এবং স্বাদ মতো নুন দিয়ে মেখে নিন। খুব বেশি ঠেসে মাখবেন না। ২০-২৫টি লেচি কেটে লুচির মতো একটু মোটা করে বেলতে হবে।তার পর লুচির মাঝখান থেকে ছুরি দিয়ে অর্ধেক করে কেটে নিতে হবে। প্রত্যেকটাতে চার দিকে জল লাগিয়ে পানের খিলির মতে করে গড়ে নিতে হবে। জোড়ার উল্টো দিকে একটা কাগজের ভাঁজের মতো ভাঁজ দিতে হবে। এইবার পুর ভরে শিঙাড়ার মুখ জুড়ে বসিয়ে দিতে হবে। কম আঁচে শিঙাড়া ভাজুন। ভেজে তোলার আগে আঁচ বাড়িয়ে নেবেন।
আরও পড়ুন: আইসক্রিমের জেরে এ বার অফিসের সেরা সহকর্মী!
মাছের কচুরি
অধিকাংশ বাঙালিই কম-বেশি মাছ ভালবাসেন। তাই মাছের কচুরি যে ভাল লাগার তালিকায় থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। জেনে নিন বাড়িতেই কী ভাবে বানিয়ে নেবেন চমৎকার মাছের কচুরি।
উপকরণ
পুরের জন্য:
রুই মাছ: ২০০ গ্রাম (সিদ্ধ করে কাঁটা ছাড়ানো)
পেঁয়াজ কুচি: ১টি বড়
আদা বাটা: ১ চা চামচ
রসুন বাটা: ১/২ চা চামচ
গরম মশলা গুঁড়ো: ১ চা চামচ
কাঁচালঙ্কা কুচি: ১ চা চামচ
কিসমিস: পরিমাণ মতো
নুন: স্বাদমতো
চিনি: স্বাদমতো
কচুরির জন্য
ময়দা: ২৫০ গ্রাম
ঘি: ৫০ গ্রাম
নুন: স্বাদমতো
প্রণালী
ময়দা ঘি ও নুন দিয়ে শক্ত করে মাখুন। কড়াইতে তেল দিয়ে পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও লঙ্কা দিন। অল্প ভাজা হলে মাছ দিন ও স্বাদ মতো চিনি, নুন ও কিসমিস দিয়ে নাড়তে থাকুন। ভাজা ভাজা হলে গরম মশলা ও গোলমরিচ দিয়ে নামিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল মাছের পুর। এবার ময়দা থেকে লেচি করে একটু বড় আকারের লুচি বেলুন। পুর ভরে দিন লেচির মধ্যে। ধারগুলো সুন্দর ভাবে মুড়ে দিন, যাতে ভাজার সময় পুর বেরিয়ে না যায়। ডুবো তেলে হালকা আঁচে গরম গরম ভাজুন।
আরও পড়ুন: রোজই করছেন এই মারাত্মক ভুল? এতেই বাড়ছে মেদ
কিমা কাটলেট
ক্রিকেটের লেট কাট আর খাওয়ার পাতে কাটলেট— এ নিয়ে বাঙালির ভালবাসা চিরন্তন। সে টেনিদাই হোক বা ফেলুদা— সকলেরই মন জিতেছে কাটলেট। আজ রইল কিমা কাটলেটের রেসিপি।
উপকরণ
মটন কিমা: ২৫০ গ্রাম
পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ
রসুন কুচি: ১ টেবিল চামচ
কাঁচালঙ্কা কুচি: ২ চামচ
ডিম: ২টি
পাউরুটি: ৩ স্লাইস
বিস্কুট গুঁড়ো: ১০০ গ্রাম
পার্সলে কুচি: ১ টেবিল চামচ
ভিনিগার: ১ টেবিল চামচ
নুন: স্বাদমতো
প্রণালী
কিমা, ভিনিগার ও নুন দিয়ে সিদ্ধ করুন। সব মশলা, একটি ডিম ও পাউরুটি একসঙ্গে মাখুন। পরিমাণ মতো নুন দিন। এই ভাবে ঘন্টাখানেক রেখে দিন। মাখাটা বেশ নরম হলে কাটলেটের আকারে গড়ে নিন। ডিমে চুবিয়ে বিস্কুটের গুঁড়ো লাগিয়ে গরম গরম ভেজে তুলুন। সস, কাসুন্দি অথবা পুদিনা চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করুন।
(রেসিপি সৌজন্যে: রুকমা দাক্ষী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy