দুর্গাপুর হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র।
বাতানুকূল যন্ত্র খারাপ পড়ে থাকছে মাঝে-মধ্যেই। ফলে, মর্গের দুর্গন্ধে টেকা মুশকিল হয়ে পড়ছে হাসপাতাল চত্বরে। রোগীর পরিজনেরা তো বটেই, আশপাশের বাসিন্দারাও ক্ষোভ জানাচ্ছেন এ নিয়ে। সমস্যায় পড়ছেন হাসপাতালের কর্মীরাও। প্রশাসনের তরফে আশ্বাস, সংশ্লিষ্ট দফতর যন্ত্র সারানোর কাজ শুরু করেছে।
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের পাশেই রয়েছে এই মর্গ। সেখানে ছ’টি দেহ রাখার ব্যবস্থা আছে। বেশির ভাগ দিনই মর্গটি ভর্তি থাকে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। এই মর্গের বরাবরের সমস্যা হল উপযুক্ত বাতানুকূল ব্যবস্থা না থাকা। প্রায় সময়েই এর ফলে দুর্গন্ধ ছড়ায় এলাকায়। মাঝে-মাঝে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে মর্গের আশপাশ থেকে হাসপাতালের বাইরে বাজার এলাকাতেও টেকা দায় হয়ে যায়। মাস ছয়েক আগে হাসপাতালে তরফে মর্গে বাতানুকূল যন্ত্রের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়। প্রশাসনের তরফে পূর্ত বিভাগের মাধ্যমে প্রায় তিন লক্ষ টাকা পাঠানো হলে নতুন করে বাতানুকূল যন্ত্রও বসানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশা ছিল, এ বার হয়তো পরিস্থিতি ঠিক হবে। কিন্তু সেই তা হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন বাতানুকূল যন্ত্র বসানোর মাসখানেকের মধ্যে সেটি খারাপ হয়ে যায়। আর তার পর থেকেই আবার আগের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গোটা এলাকা দুর্গন্ধে ভরে যাচ্ছে। এই মর্গের পাশেই রয়েছে ময়না-তদন্তের জায়গা। সারা দিন বহু মানুষজনও আসেন সেখানে। কিন্তু মর্গের দুর্গন্ধে ওই এলাকায় টেকা দায় হয়ে যাচ্ছে তাঁদের। কাঁকসার সুমন রায় নামে এমনই এক জন বলেন, ‘‘মর্গের আশপাশে থাকাও বেশ কষ্টের। হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, মূলত এটি পুলিশ মর্গ হিসেবে পরিচিত। ময়না-তদন্তের পরে অজ্ঞাতপরিচয় দেহগুলি এখানেই রাখা হয়। অনেক ক্ষেত্রে রাতের দিকে কোনও দেহ এলে সেগুলিও এখানে রাখা হয়। প্রায় দেড় মাস ধরে বাতানুকূল যন্ত্র খারাপ থাকার জন্য তাঁদেরও নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালের সুপুর দেবব্রত দাস। তিনি জানান, যে সব দেহ কেউ নিয়ে যান না, সেগুলি নিয়ে অসুবিধা হচ্ছে। দু’এক দিন থাকার পরেই সেগুলি থেকে পচন শুরু হয়। দুর্গন্ধ ছড়ায় গোটা এলাকায়। তিনি আরও জানান, হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে নানা চিকিৎসক ও কর্মীদের আবাসন। সেখানে টেকাও দায় হয়ে যাচ্ছে।
অসুবিধা যে শুধুমাত্র হাসপাতালের কর্মীদেরই হয় তা নয়। আশপাশের বাসিন্দাদেরও একই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে বাসিন্দারা হাসপাতালের সুপারের কাছে অভিযোগও করে যান। দেহে পচন ধরার ফলে বহু মৃতের পরিবারও অসন্তোষ জানান। পরিস্থিতি সামাল দিতে মুশকিলে পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুপার দেবব্রতবাবু বলেন, ‘‘এলাকার ব্যবাসায়ীরাও মর্গের দুর্গন্ধের ব্যাপারে নানা সময়ে এসে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখিয়ে যান। কোনও মতে তাঁদের সামাল দেওয়া হয়।’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের তরফে বাতানুকূল যন্ত্র ঠিক করার জন্য মহকুমা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ পূর্ত দফতরের বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy