আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া দেশের পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন শিশুই জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মাতৃদুগ্ধ পানের সুযোগ পায় না। যার জেরে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এমনকি, তৈরি হয় প্রাণ সংশয়ও।
এ বছর স্তন্যপান নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টে এই তথ্যই উঠে এসেছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই সব দেশের ৭ কোটি ৮০ লক্ষ শিশুকে জন্মের পর পরই স্তন্যপান করানো হয় না। দক্ষিণ ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলিতে ঠিক সময়ে স্তন্যপানের রীতি অধিক প্রচলিত। সে দিক থেকে অনেক পিছিয়ে এশিয়ার দেশগুলি। মাত্র ৩২ শতাংশ শিশু জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মাতৃদুগ্ধ পানের সুযোগ পায়।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এই রিপোর্ট যথেষ্ট উদ্বেগজনক। শিশুর জন্মের পরের এক ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃদুগ্ধই হল প্রথম টিকা। সেটা দেরিতে পেলে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তবে, সচেতনতাই বদলে দিতে পারে এই ছবি, মনে করছেন হু-র সদস্যেরা।
ওই রিপোর্টেই উল্লেখ করা হয়েছে, আফ্রিকার একাধিক দেশে সচেতনতার প্রসারের জেরে এই সমস্যা মিটেছে। ঠিক সময়ে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে গর্ভাবস্থা থেকেই বোঝানো দরকার। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সন্তানসম্ভবারা সে সম্পর্কে জানেন না। পাশাপাশি, শিশুর জন্মের সময় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাও জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। হাসপাতালে সন্তান প্রসবের পরে মায়ের কী ধরনের যত্ন নিতে হবে সে নিয়ে কোনও কর্মশালা হয় না। স্বাস্থ্যকর্মীরাও শিশুদের স্তন্যপানের দিকে অনেক সময়ে গুরুত্ব দেন না। সেই দিকগুলিতে নজরদারি প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে স্ত্রীরোগ চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মা ও সন্তানের সুস্বাস্থ্যের জন্য শিশুর স্তন্যপান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মায়েদের এ সম্পর্কে সতর্ক করার দায়িত্ব। ঠিক মতো সরকারি-বেসরকারি সব ক্ষেত্রে স্তন্যপান নিয়ে ধারাবাহিক কর্মশালা চালালে পরিস্থিতি পরিবর্তন ঘটতে পারে।’’ শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘স্তন্যপান নিয়ে নানা প্রচারের পরেও যে পরিস্থিতি কত খানি বিপজ্জনক এই রিপোর্ট সেই দিকটাই তুলে ধরল। শিশুর সুস্বাস্থ্যে মাতৃদুগ্ধের কোনও বিকল্প নেই।
মধু কিংবা মিষ্টি জলের পরিবর্তে জন্মের পরে স্তন্যপান কতখানি গুরুত্বপূর্ণ সে নিয়ে আরও লাগাতার প্রচার দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy